জলের রং
- ফয়জুল মহী ২৯-০৩-২০২৪

নাসিমাঃএই আস্তে বল,তোর কালু আসতেছে.হি-হি-হি.মাসুদাঃঅসুবিধা নাই,দুলাভাই শুনলে.মৌমিতাঃচুপ কর,মুখে যা আসে তাই বলিস.মাসুদাঃদেখ দেখ মৌমিতা তোর দিকে তাকিয়ে আছে.তুই তো তার জন্য পাগল.ভিতরে ভিতরে তুই প্রেমের খেলা ভালই খেলতেছিস আর আমরা বললে যেত দোষ.নাসিমাঃ বল মৌমিতা,তুই এই কালুর জন্য এত পাগল কেন রে. মৌমিতাঃকি যে ফালতু কথা বলিস তোরা,আমি কি অসিম এর সাথে প্রেম করি?যে তার জন্য পাগল হবো. জীবনটা এত ছোটো কেন,কোথায় ,কি?এই প্রশ্ন গুলো এত বেশী মনে হয়,উত্তর গুলো আর খুঁজবো কখন ,সময় দাঁড়াবে না, তার চাইতে যেমন করে দিন যাচ্ছে,যাক না.কি হবে এত দ্বিধা দ্বন্দ পুষে রেখে,ভাসিয়ে দিই, পানসে জীবনের স্রোতে.মৌমিতার কাছে ভালবাসার আরোধনা যৌবনের প্রথম থেকে শুরু.কিন্তু কলেজ টা চলে তালেবান কানুনে,কোন প্রেম পিরিতি বা রাজনীতি চলে না.সচ্ছ নীল পানি ভরা নদীর তীরের পাশে কলেজ ,এক পাশে সিংহের নামে গ্রাম.যার রং,রুপ,সুগন্দ আমাকে তাজা রাখে,রাখে সতেজ,রাখে ফরমালিন মুক্ত.দক্ষিণা মুখী দো"তালা এল বিল্ডিং টি যেন স্বর্গীয় মন্দির.যার শীতল ছায়া বুকে রিমঝিম করে বাজে.মানুষ দ্বিতীয় জম্ম নেওয়ার ঘর.শীত শীত সকালে মাঠে দাড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি".হাত সামনে করে শপথ বাক্য পাঠ -আমি শপথ করিতেছি যে,দেশ এবং দশের সেবায় নিয়োজিত থাকিবো. নৌকা চালানো সহজ মনে হলেও এত সহজ না.আমার দ্বারা হবে না,নাও তুমি দেখো.মিজানঃ তুমি পার শুধু প্রেম করতে.দাও,আমাকে চালাতে দাও. নৌকা কখনো পূর্ব কখনো পশ্চিম হয়ে চলতে লাগলো. সাইফুল গান ধরলোঃআমার .....মাঝিরে তোর নৌকার ঢেউ লাগিয়া. বাচ্চুঃ দেখ অসিম,মিজান একজন পাকা মাঝি. তর তর করে এখন নৌকা দক্ষিনে এগিয়ে চলছে.আর তুই শালা...শীতের দুপুর,পানিতে ভরপুর নদীতে মানুষ গোসল করছে. দুই-একটা শ্বেত হাঁস ডুব দিয়ে খাবার সংগ্রহে ব্যস্ত. কৃষ্ণ মুজমদার কখন পার হয়ে যায় নৌকা জানি না. নদীর মাঝেই পুকুর একটা. চারিদিকের পাড়ে গাছ যেন মায়াবী লাগলো. যদিও দূর্স্যরা নদীর মাটি পানি সব খাওয়ায় ব্যস্ত. পুকুরটার পাশে শাপলা বাগান. পদ্ম ফুলের গোলাপী রং -এ মনটা যেন রোমাঞ্চিত হল. মৌমিতার একটা জামা আছে গোলাপী রংয়ের. মনে পড়লো তার কথা. গোলাপী ওড়নায় লজ্জ্যামাখা মুখটি. সবাই শাপলা উঠানোতে ব্যস্ত হয়ে যায়. ওহঃ কি সুন্দর জায়গা. এই পুকুর পাড়ে পানির উপর আমার ঘর. আমি আর মৌমতা. ঘুম থেকে উঠেই দেখবো গোলাপী পদ্ম ফুল. মৌমিতা কে নিয়ে নীল পানিতে জাপ দিব রোজ রোজ. এই পানি থাকবে দুনিয়া ধবংস পর্যন্ত,কোন জোর জবরে নিতে পারবে না কেউ। সাইফুলঃ এই অসিম,সবাই শাপলা তুলছে তুই বসে আছিস,ফাকিবাজ. অসিমঃ অর্পূব এক দিবাস্বপ্ন দেখলাম রে...আমি জাপ দিলাম পানিতে. > রমিজ উদ্দিন স্যার ইতিহাস বুকে এত শক্ত করে ধারন করেছে আছে কেন,কে জানে?স্যারের মেধা,সততা,মহানুবতা ও ভালবাসা আসলেই নজর কাটে.সব চেয়ে বড় কথা চাতুরিহীন দেশপ্রেমিক.অনেকক্ষন শহীদ মিনার টার দিকে তাকিয়ে তারপর আকাশপানে চাইলেন.বিডবিড করে কি যেন বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেেন.স্যারঃ ৫২ এর আন্দোলন করে আমাদের যারা ভাষা এনে দিল,আমরা তাদের এই ইট পাথরে সাজিয়ে রাখলাম.তাও রং হীন কেমন ঝরা-জীর্ণ করে.যদিও আমরা ভাষা পেয়েছি কিন্তু পাক শাসক শান্তি ফিরিয়ে দেয়নি.তারপরও ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়া অনেকদুর আমাদের যাওয়ার পথ রচিত হল.আজ ফেব্রুয়ারী মাস,সালাম তোমার গলায় একটা মালা দিব,এরপর চলে যার,এমনকি ভুলেও যাব.তুমি পড়ে থাকবে দাগনভূঁইয়ার আলোহীন গ্রামে.ছল ছল চোখে তাকালেন আমার দিকে. দেশ কে আমরা মা এর সাথে কেন তুলনা করি অসিম. আমি চুপচাপ দাড়িয়ে রহিলাম.স্যার আবার আকাশপানে চাইিলেন.স্যারঃশুন হে আমার প্রাণ প্রিয় ছাত্ররা,ভীরু কাপুরুষ বার বার মরে.আমরা বীর,লড়াই করে একবার মরবো. এই লড়াই হবে শান্তি ফিরিয়ে আনার,এই লড়াই হবে পাক শোষন কারীদের বিরুদ্বে.আর শান্তি ফিরে আসলেই মানুষ সুখে থাকবে.থাকবে না অভিযোগ,থাকবে না মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক ব্যবধান.আমরা আজ বৈজ্ঞানিক কর্মময় শিক্ষা থেকেও দুরে আছি.আমাদের ইচ্ছা করে শাষক শ্রেনী দুরে রাখছে.যাতে আমরা কুসংস্কারের ভিতর হাবুডুবু খাই.আমাদের সন্তান সালাম বুকের রক্ত দিয়ে শিখিয়ে গেছে কিভাবে শাসকের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়.দরকার হলে আমরা সবাই এক একজন সালাম হব.তোমরাদেরই গর্জে উঠে বলিষ্ঠ হাতে মায়ের মান বাঁচাতে হবে.সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে মানবিক সত্তা বিকশিত করে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা সম্ভব. তোমরা বেশী করে সৃজনশীল কাজের সাথে জড়িত থাকবে,যাতে করে সকল অপশাসনের বিরুব্ধে তোমাদের হ্রদপিন্ড জাগ্রত থাকে.আর সবাই মিলে শালীন এক সমাজ তৈরী করবো আমি বেঁচে না থাকলেও তোমরা যেন "মানুষ"হয়ে সেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত থাকো. মৌমিতাঃ তোমার এই উড়নচন্ডি ভাব আমার খুব ভাল লাগে.তোমার ভিতরতো এমন ভাল কোন গুন নাই যে আমি পছন্দ করবো তাই তোমার উড়ন চন্ডি ভাবটা কেও ভালবাসি.অসিমঃ যাক, ধন্যবাদ.মৌমিতাঃ জ্বি না স্যার,আপনাকে এই স্বভাব টা ছাড়তে হবে.অসিমঃ তুমি বললে দুনিয়া ছেড়ে দিবো.বলে একবার দেখ!মৌমিতাঃ এই সব ফালতু কথা.আমি মানতে রাজি যেমন নই,তেমনি বিশ্বাসও করি না.কেন যে তোমাকে এত ভালবাসি বুঝি না.তুমি আমার চিন্তা চেতনা সব দখল করে আছো. অসিমঃ শুনে খুব খুশী হলাম.মৌমিতাঃ কালু মিয়া তুমিতো খুশী হইবা.অসিমঃ একটু কাছে আসো না ....মৌমিতাঃ কি?অসিমঃ তোমার কপালে কাটা দাগ টাতে একটা আদর দিবো. নাক বরাবর কপালে কাটা দাগ দারুন মানিয়েছে.কেন চুল দিয়ে ডেকে দিচ্ছো ,থাক না.আর আজ আমার সাথে তুমি কেমন যেন ম্যাডামের মত আচরণ করছো.অথচ আমি তোমার সাথে একটু কথা বলার জন্য পাগলের মত অপেক্ষায় থাকি. মৌমিতাঃ হা হা হা.আসলে আমার প্রতি তোমার ভালবাসা,আন্তরিকতা,শ্রদ্ধা দেখলে আমার খুব ভয় ও খারাপ লাগে.আমি তোমাকে তোমার চেয়েও বেশী ভালবাসতে চাই. বিনিময় তুমিও খন্ড খন্ড ভালবাসা দিবা .তবে আমার চেয়ে কম.আমিই তোমাকে বেশী ভালবাসবো.আমি তার পাশ পাশ হাটছি,গ্রামের আকাবাঁকা সরু রাস্তা.বার বার এদিক সেদিক দেখতে হচ্ছে,পরিচিত লোক আসছে কিনা. রাস্তার দুই পাশে সরিষার ক্ষেত. দৌড়ে গিয়ে একটা তুলে আননাম.মুচকি হেসে মৌমিতা হাত বাডিয়ে দেয়.আমি তাকে সরিষা ফুল দিতে পেরে মনে হল যেন আকাশটা জয় করলাম. শীত সকাল তারপরও তার নাক ও কপালে চিকন চিকন ঘামের রেখা. তুই আজকাল খুব গম্ভীর হয়ে থাকিস কেন রে? কোন কি সমস্যা! তুই তো আবার গভীর জলের কুমির. চুপ কর নাসিমা, এমনিতে ঘরের লোকজনের বকাবকি তে পাগল হয়ে যাচ্ছি আর এখন তুই শুরু করলি. তাই তো বলি, মৌমিতা খুব সাবধানে করবি যা করিস.দেশের অবস্হাও ভাল না.অসিমকে আজকাল রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বেশী ঘুরতে দেখি.সে তোকে খুব ভালবাসে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই.তোর জন্য জীবনবাজী রাখবে,কিন্তু সে রমিজ স্যারের মত চাতুরিহীন দেশপ্রেমিক.দেশে যদি কোন গন্ডোগোল লাগে কে কোথায় ছিটকে পড়ে তার নিশ্চয়তা নাই.তুই তাকে এখন বিয়ে করলে অবশ্যই পরিবার ছাড়তে হবে.অসিমের পরিবার তোকে মেনে না নিলে সে কোথায় রাখবে,তোকে আবার তোর পরিবারে ফেরত আসতে হবে.তাও যদি না পারিস!! আর আসতে পারলেও কিভাবে তুই মা বাবাসহ অন্য লোকগুলার মুখামুখি হইবি.তুই একজনের ভালবাসাকে তোর পুরা পরিবারের মানুষের ভালবাসার সাথে পরিমাপ করে দেখ.আবার অসিম তোকে অবহেলা করবে সেরকম কিছু আমি তার ভিতর দেখি নাই.তোর প্রতি অসিমের ভালবাসা দেখলে তো তোকে আমার নিজের হিংসা হয়.এই মৌমিতা,এই মৌমিতা কাঁদবি না.কাঁদলে নাকি ভালবাসা কমে যায়.কারো প্রতি ভালবাসার জম্নের সাথে সাথে ভিতরে কান্নাও জমা হয়.মানুষ আসলে কান্না করে নিজেকে হালকা করার জন্য.চোখের পানির সাথে অন্যের জন্য যে আবেগ ও ভালবাসা তাও ফোটা ফোটা বাহির হয়ে যায়.দেখিস না কারো কোন প্রিয়জন মারা গেলে প্রথমদিন বুকফাটা কান্না করে. দ্বিতীয় দিন একটু কম,তৃতীয় দিন আরেকটু কম.তারপর জীবন জীবিকার পিছে ছুটে চলে. চুপ কর দয়া করে নাসিমা. মৌমিতা -তুমি ভাল থাকো.আমি যুদ্ধে যাচ্ছি.বেঁচে থাকবো কিনা আমি.জানি না!! আজ প্রথম চিটিতে প্রিয় লিখলাম না.কি করে লিখি বলো তোমাকে বিপদের মধ্যে রেখে আমি দেশের জন্য লড়তে যাচ্ছি.বুঝতে পারছিনা কে প্রিয় ,দেশ না তুমি.আমি অনেক গুলি জোনাকি ধরে বোতলে ভর রেখছি তোমাকে দিতে.তুমি রোজ রাতে একটা জোনাকি তোমার কপালে লাগিয়ে অদ্ধকারে আয়নার সামনে দাডিয়ে দেখবে.জ্বল জ্বল জোনাকিই আমি.আর এই জোনাকি শেষ হওয়ার আগেই দেশ শত্রুুমুক্ত করে আমি ফিরে আসবো.-অসিম. রাস্তাটা মধু্গ্রামের ভিতর দিয়ে এসে ঢাকা চট্রগ্রাম মহা সড়কের সাথে মিলেছে.যেখানে মিলনস্হল তার নাম কাজী বাড়ী রাস্তার মাথা.মাঝখানে দুই জমি পার হলে ভারত সীমানা.ত্রিপুরার ওই এলাকার স্হানীয় নাম শ্রীনগর. আমাদের বিশ জনের দলে তিন লোক বিবাহীত.বাকী লোকগুলা সবাই পঁচিশের নিচে বয়স.কিন্তু সবার একটি মিল চোখে প্রতিশোধের আগুন.জীবনবাজী রেখে যুদ্ব করার প্রতিজ্ঞা.মৌলভী সামছু উদ্দিন মজুমদার কযেকদিন খাবার-পানি দিয়ে সাহায্য করলেও এখন করতে ভয় পায় দেশীয় দাললদের কারনে.সংখ্যায় অতি কম হলেও দালালরা মুক্তিবাহিনীর খবরাবর অতিদ্রুত পাক বাহিনীকে সরবারহ করতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে. আমরা সাধরন জনগণ লড়াইরত অবস্হায় রাজনৈতিক নেতাহীন হয়ে পড়ি.এই দুইদিন কোন রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি.কিন্তু কারো মুখে না খাওয়ার কোন অভিযোগ নাই.দেশের কোথায় কি হচ্ছে খবরটা শুনতেই সবাই উদগ্রীব .নাজিমঃহাসেম ভাইকে স্কুলের ভিতর আটক করে রেখেছে অসিম. উনি নাকি এক ঘরে ঢুকছে চুরি করতে. অসিমঃ কোথায়,কে বলছে. হয়তো কোন ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে. এই গ্রামে কেউতো আমাদের চিনে না. কেন যে উনি বাহির হল. মৌলভী সাহেব কোথায়. কেন,কি হয়েছে অসিম. আর কি বলবো মৌলভী সাহেব. এই দেখি দেখি কি হয়েছে.হাসেম ভাই,কি হয়েছে বলেন মৌলভী সাহেব কে.হাসেমঃআসলে সত্য আমি রেড়িও চুরি করতে চেয়েছি .আমরা যুদ্ধের খবর শুনার জন্য সাথে রাখতে.অসিমঃআমি মাফ চাই সবার কাছে ,আসলে কিন্তু উনি চোর না ,একজন মুক্তিযোদ্ধা. দুলাল মুন্সীঃ আর ভাল লাগে না এই কচু পাতার উপর জল বিন্দুর মত জীবন. কত দিন থাকবো খড়-কুঠার ভিতর গোয়াল ঘরে.অসিমঃ জানি না.সবাই চুপ হয়ে যায় অসিমের কথা শুনে. মুষলধারে বৃষ্টি যেন মনে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের চোখের জল.দমকা হাওয়ায় উচু সুপারী গাছটা নুয়ে পড়ছে দেখলে মনে হয় ভক্তি করছে প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাকে . বড় গাভীটা আজ বেশী পানি পান করছে.তাই ঘন ঘন প্রাকৃতিক কাজ করে শরীলটা ভিজে দিল.যদিও রোজ এমন হয়.দুলাল মুন্সীঃ যুদ্ধ শেষ হলে মেয়েকে নিয়া ঢাকা যাব ডাঃ দেখাতে, অসিম তুমিও যাবে সাথে.মেয়েটার চোখ ছোট-বড়,ডাঃ বলছে ছোট থাকতে অপারেশন করলে ঠিক হয়ে যাবে.অসিমঃ অবশ্যই যাব.আমরা এখনতো এক পরিবারের মানুষ.জীবন জীবন সাথে থাকতে চেষ্টা করবো.হাসেমঃ অসিম অসিম বাহিরে যেন কে আসছে? হাসেম ভাই আমি হারাধন দরজা খোলেন,খবর আছে.অসিমঃ (বন্দুক হাতে) দাদা আমাকে বলুন.হারাধনঃ কাল রাতে শুভপুর ব্রিজের পাশে পাক বাহিনীর ক্যাম্প আক্রমন করা হবে.আরেকটা খবর হল ফেনী হতে যে দুইটা গুপ্তচর এসে ছিল. মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ধরে জবাই করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে.এখন আমার সাথে চলুন সবাই. সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল অপারেশান পরিচালনা করবে.তাই আজ রাতেই শুভপুরের আশে পাশে আশ্রয় নিতে হবে.মধুগ্রাম হতে শুভপুর.বর্ষার রাতে ফসলি জমির আইল ধরে যাত্রা.সামনে বড় এক পুকুর,সবার হাতে বন্দুক,উপর হতে আকাশের মায়াবী কান্না.আশ্রয় নিলাম এক হিন্দু বাড়ীতে. আমি কর্নেল ইমাম,আপনারা দেশের গর্বিত সন্তান.আপনারা শত্রুর শিকল ছিড়ে দেশ মুক্তকারি .আপনারা বীর সেনানী,বীর মুক্তিযোদ্ধা.আমরাতো বিজয়ের ধারপান্তে.বিগত কয়েক মাস আমরা বীরত্বের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছি.মহান আল্লাহ আমাদের সহায়. আপনারা জানন কেন এখানে আপনাদের ডাকা হয়েছে. বিশ জন সেনাবাহিনীর লোকসহ একশজন মুক্তিযোদ্ধা আমরা. এক হাজার শত্রুর সাথে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত .বিশজন করে গ্রুপ হয়ে একসাথে চার দিক থেকে শত্রু চাউনীতে আক্রমন করা হবে. আর বিশ জন রাস্তা পাহারা দিবে আক্রান্ত হলে শত্রু যেন জীবিত পালাতে না পারে. কর্নেল সাহেব শত্রু পালাতে পারবে,আর তা আমাদের মৃত লাশের উপর দিয়ে.সাবাস! অসিম. সবাইকে মানসিক প্রস্তুত ও উজ্জবিত দেখে আমি প্রচন্ড সাহস পাচ্ছি. এক ঘন্টা পরে আমরা মিশনে নামবো.আবার শুনুন সবাই,আমি অ্যাটাক ইশারা করার সাথে সাথে তা করতে হবে.কোন ধরনের ভুল করা যাবে না.একটু ভুল হলেই সবার অনেক অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে.পাঁচজন দলনেতা এসে সব ধরনের অস্ত্র বুঝে নিন. হাসেমঃ কেমন যেন আনন্দ লাগছে,আজ বড় ধরনের লড়াই করতে যাচ্ছি বলে.অসিম মার চবিটা একবার দেখে নিল.দুলাল মুন্সী মেয়ের চবি চুমা দিল বার কয়েক.অসিমঃ আল্লাহ তুমি মহান.তুমি আমাদের হেফাজতকারী. সব কিছু কি নিশ্চিত করা যায় যুদ্ধের ময়দানে?অন্ধকারে কিছু দেখাও মুশকিল .আমি আমার দল নিয়া পশ্চিম কোনায় অবস্হান নিলাম.নীরব শুনশান রাত.কলমা পড়তে লাগলাম.টর্চ লাইট আলো দেখার সাথে সাথে গ্রেনেড চার্চ করা হল চার দিক থেকে. শত্রু শিবির হতে চেচামিচি শুনা গেল . আমরা গুলি করতে করতে সামনে এগিয়ে গেলাম. এমনি নেমে আসলো বৃষ্টি.আল্লাহু আকবার বলে আকাশ কাঁপানো ধ্বনিতে কম্পিত হল শুভপুরের মাটি.আচমকা হামলায় পাক সেনারা দিগ্বিদিক ছুটা ছুটি শুরু করলো. গাড়ী নিয়ে পালাতে চাইলো.বৃষ্টি আর অন্ধকারে একে অপরকে চিনা দূরহ হয়ে পড়ে.আমি একবার একজনের নাম ধরে ডাকে পাশে রাখার চেষ্টা করি. হঠাত্ নুরু রাজাকার আমার সামনে.বন্দুক বুকে তাক করতে পিছন থেকে মা মাগো চিত্কার আসলো.দুলাল ভাই,দুলাল ভাই.অসিম আমার কিছু হয়নি.তুমি নুরা কে গুলি করো.কর্নেলঃ দুলাল আমি ইমাম.তোমার কিছু হবে না.দুলালঃ আপনি আমার কথা চিন্তা করবেন না.যান আপনি.আমার জীবনের চেয়ে দেশ বড়. অসিমঃ দুলাল ভাই.দুলালঃ এই অসিম তুই কাঁদিস কেন.তুই না লড়াকু সৈনিক.অসিমঃ আমিই আপনাকে যুদ্বে নিয়ে এসেছি. দুলালঃ আমার খুব ব্যাথা হচ্ছে.আমি বাঁচবো না.তবে রক্তের বিনিময় এই দেশ স্বাধীন হবে. আমার মেয়েটা? তাকে দেখে রাখিস.জীবনভর মাথা উচু করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে যাবি. দুলাল ভাই! মেয়েকে বলবি তার জন্য নতুন একটা দেশ বানা....তে. অসিমঃ কর্নেল সাব,কর্নেল সাব.দুলাল ভাই, দুলাল ভাই. কর্নেলঃ ওহ নো. সেড. দুলাল ভাই যেন আমার আত্নাটা নিয়ে কবরবাসী হল,উনাকে হারিয়ে আত্নার শান্তি ও শক্তি উভয় লোভ পেয়েছে আমার. চোখ বন্দ করলেই গুলিবিদ্ধ দুলাল ভাইর চবিটা আসে বার বার.মৌমিতাকে দেখতে ইচ্ছে করছে. আগে দুলাল ভাইর স্ত্রী ও মেয়ের সাথে দেখা করা দরকার.কিন্তু কোথায় তারা.মেয়েটা কি জানে তার বাবা আর কোন দিন তার কপালে আদর মিশ্রিত আর্শীবাদের চুমা একে দিবে না.তার স্ত্রী কি জানে পরিবারের উপার্জনক্ষম লোকটা অজানা অচেনা কোন গ্রামে চিরতরে সমাধীস্ত.ইস,যদি কোন রাজনৈতিক নেতা,কোন সমাজপতি এই অসহায় পরিবারের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত.দেশের জন্য লড়াই করতে উত্সাহ দ্বিগুন বেড়ে যেত.কর্নেল সাহেব আমি যেকরে হোক দুলাল ভাইর মেয়ের সাথে দেখা করতে চাই. কর্নেলঃ এই সময় তারা কোথায় আছে ,খবর নেওয়া খুব কঠিন অসিম.তাহাছাড়া দেশীয় দালাল গুলি খুব বিপদজনক.তারা আমাদের পিছনে লেগে আছে.যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে তোমাকে.তুমি এই জাগায় এই বাড়ীতে নিরাপদ কারন এই বাড়ী মুসলিমলীগ নেতা চান মিয়ার ফুফুর বাড়ী.সে নিষেদ করছে হামলা করতে.এই সুযোগে আমরা এই বাড়ী আমাদের কাজে লাগাচ্ছি.এবং এই বাড়ীতেই সবচেয়ে বেশী মুক্তিযোদ্ধা. আবদুল মুন্সী ঘাট পার হবো.একি এই রাস্তাতো আমার খুব আপন.এই রাস্তায় মৌমিতাকে নিয়া আমার অনেক স্মৃতি. ওই যে এই জমি হতে সরিষার ফুল তুলে তার চুলের খোপায় গুজে দিয়ে ছিলাম.পা যেন চলতে চাচ্ছে না.কাঁধে বন্দুক তবুও দুই চোখে জলের বন্যা. এই জলের রং কি,সব জলের মত.চাঁদকে দুষ্ট মেঘ ছানা বার বার আড়াল করে.এক ফাকে পূর্ন চাঁদ নজর আসলো,এমনি দুই হাত জোড় করে আমি প্রনাম করি.কারন মৌমিতাও চাঁদের মতই.আর আমার ভালবাসা হল আকাশটা.ঘাট পার হয়ে রওনা হলাম সবুজ ছায়ার দিকে.হঠাত্ খুব জোরে জোরে মানুষের চিত্কার শুনা যায়.আমরা থমকে দাড়াই.একটু পর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠে.কর্নেল আমাদের নিয়ে ওই বাড়ীর দিকে রওনা হন. ততক্ষণে পুরা বাড়ী পুড়ে ছাই.আমরা ওইখানে যেতেই সত্তর বছর বযসের এক বৃদ্ধ কর্নেল সাহেবকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে,বলে আমার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা বলে বউমাকে তুলে নিয়ে গেছে পাকিস্হানী আর্মি.বাবা,আমার ঘর পুড়ছে ক্ষতি নাই.কিন্তু আমার ঘরের ইজ্জত. বাবা,আমার ঘরের ইজ্জতকে বাঁচান.আমি আপনার পা ধরে ইজ্জত ভিক্ষা চাইছি. বাবার বযসি বৃদ্ধের এমন আচরণে কর্নেল সাহেব হতভম্ব হয়ে যান.মনে দিক খুব কঠিন কর্নেল সাহেব.আর এখন যেন জ্ঞানশূন্য.আমি ডাক দিলাম কর্নেল স্যার.না, শুনলেন না. অতিদুরে দুইটা কুকুর ভালবাসা প্রকাশে লিপ্ত.ভাদ্র মাসটা শুধুই যেন কুকুরের. একটু ঘুম চোখে আসো না,ওই ঘুম তুমি কেন যুদ্ধ করছো আমার সাথে.প্রায় এমন হয় দুই/এক দিনও ঘুম হয় না. নানাবিধ জাতের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষগুলি অর্ধাহারে যেমন অচেনা লাগে তেমনি মুখ ভর্তি দাড়ি গোপ এক আজব মানুষ রুপে পরিনত করেছে. বর্ষা শেষ শরতের আগমণ. হে খোদা তুমি আমার মাতৃভূমি কে কাশফুলের শুভ্রতায় ভরে দাও.হাতে গোনা কিছু লোক ব্যতিত সারা দেশের মানুষ জয় হওয়ার দৃঢ় মনোবল নিয়ে একটি আধুনিক সেনাবাহিনীর সাথে লড়ে যাচ্ছে তাতে আল্লাহ ছাড়া আর কি ভরসা হতে পারে.কিছু মানুষের ভুল আদর্শ ও মিথ্যার মোহে পশ্চিম পাকিস্হানকে সমর্থন যে প্রচন্ড ভয়ংকর হয়েছে তা বলে শেষ হবে না. যখন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু খবর শুনি ভয়ে কুকডে যাই. আবার যখন আপময় জনতা মুক্তির জন্য যে যার মত লড়ছে দেখি তখন মন খুশিতে টগবগ করে. কতদিন যে মা-বাপ ও আদরের ছোট ভাইটি কে দেখি না.কোথায় আছে তাও জানি না. একবার শুনছিলাম মোটবী মার নানার বাড়ীতে আছে.মৌমিতা তুমি কোথায় আছো? তোমার চবিটাও হারিয়ে ফেলছি.তুমি কি এখনো রোজ অন্দ্বকারে আয়নার সামনে দাড়াও জোনাকি কপালে লাগাতে.হা হা হা আমি কেমন পাগল. আজ সাত/আট মাস আমি যুদ্ধের ময়দানে তুমিতো জানোই না আমি বেঁচে আছি কিনা.মাবুঃকি অসিম ঘুম আসছে না?অসিমঃনা মাবু ভাই. চোখ বন্দ করলেই ওই বৃদ্ধের চিত্কার শুধু কানে বাজে আমার বউমাকে বাঁচান.এইভাবে সারা দেশে কত হাজার মা ও কত হাজার বাবা তার মেয়েকে বাচানোর আকুতি করছে কে সে খবর রাখছে.ওই বৃদ্ধের ছেলে যে মুক্তিযোদ্ধা এই খবর পাকিস্হানী আর্মি কি করে জানলো.এদেশের দালালগুলি না বললে.ওই যোদ্ধার ঘর চিনিয়ে তার বউ কে যে দালাল পশ্চিমা আর্মির হাতে তুলে দিল আমি জীবিত থাকলে তাকে খুজে বাহির করবোই.ওই বউমাকে যে করে হোক বাঁচাতে হবে.ওই দালালকে আমার হাতেই মরতে হবে.আর না হয় আমি কেন যুদ্ধ করছি.মাবু ভাই আজ সে যদি মৌমিতা হত তাহলে তাহলে আমি কি চুপ থাকতাম. তাকে সম্মানের সাথে ফিরে আনতে কি জিবনবাজী রাখতাম না. তাহলে একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে কেন ইজ্জতের সহিত বাঁচাতে পারবো না.যখন একজন মুক্তিযোদ্ধা জানতে পারবে যে,দেশের জন্য লড়তে গিয়ে দেশের দালালই ভিনদেশীয় লোকের হাতে তার স্ত্রীকে তুলে দিয়েছে. তখন তার কেমন অনুভূতি হবে! > বেশী থেকে বেশী হলে দশ/বার বছর বয়স হবে ছেলেটার. রোজ এসে ঘুর ঘুর করে আমাদের পাশে পাশে. আজও আসলো, আমি নাম জানতে চাইলাম কিন্তু বল না আমিও আর কথা বাড়াইনি. আজ আমার শরীলও ভাল লাগছে না রাতে প্রচন্ড পেট ব্যথা করছে. প্যান্টের পকেট থেকে কয়েকটা তাজা বুলেট বাহির করে আমাকে দেয়. আমি চুরি করছি এগুলা. কোথায় হতে, কিভাবে? আমার দাদার সাথে কাল আমি আর্মি কাম্পে গিয়ে দেখা করছি. ওই সময় নিয়েছি আপনার জন্য. আমার দাদা বাড়ী আসে না ওইখানে থাকে. আমি বুঝে গেলাম সে আবিদ চৌধুরীর নাতি. মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ভয়ংকর এক নাম আবিদ চৌধুরী. তিনদিন আগে পাশের গ্রামে লুটপাটের তান্ডভলীলা চালায়. ঘরে ঘরে ঢুকে নগদ অর্থ লুট করেও ক্ষান্ত ছিল না. মনির মার বড় বড় মোরগগুলা ধরে নিয়ে যায়. মনির মা চিত্কার করে তাকে আল্লাহর গজবে দেয়. তোমার নাম কি বল না, আমি আবারও ছেলেটির নাম জানতে চাই. আমার নাম লাতু .তুমি এখানে আর আসিও না. আমি লুকিয়ে লুকিয়ে আসবো কেউ কখনো জানবে না. আমি আপনার কথা কখনো দাদাকে বলবো না. আপনার নাম কি. আমি ভয়ে নাম বলি না চুপ করে থাকি. আমি যদি বড় হই তাহলে আমিও কি যুদ্ধ করতে হবে? না,না. আমি তার প্রশ্নে আনমনা হয়ে যাই. জমিনে বন্যার পানির মত পানি থই থই করছে. সাদা সাদা বক আকাশে,কখনো কখনো পানিতে জাপ দেয় মাছ শিকারে. রাস্তার পাশে শরতের কাশফুল বাতাসে দোল খায়. এত সুন্দর ফুলটা কোন কাজেই আসে না শুধু কবি-লেখকদের লেখায় ছাড়া. দেশ কি স্বাধীন হবে,যদি না হয় তাহলে? দুর কি বাজে চিন্তা মাথায় আসে. দেশের জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়বো কোন ছাড় দেব না. স্বাধীনতার পর আমি যদি কাশফুল হই তাও না. > গাড়ির শব্দে সবাই সজাগ হয়ে বসলাম. মরনের ভয় যেন এক খন্ড দমকা হাওয়া দপ করে বাতিটা নিভে দিয়ে অন্দ্বকার করে দেওয়ার মত. পরক্ষনে দৃঢমনোবল করে বন্দুক হাতে মারতে ও মরতে উদ্দত্য হই এই নিত্যদিনের জিবন. দরজা খুলে দেখি উঠানে কর্নেল ইমাম দাড়ানো সাথে আরো দুইজনসহ.অসিম তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে একটু সময়ের জন্য. ঠিক আছে, আমি বন্দুকটা রেখে আসি. আমি গাড়িতে বসা আমার কথা বলতে খুব ইচ্ছা হল কিন্তু সবাই চুপ থাকায় সম্ভব হল না. গাড়ি ধীর গতিতে ছুটে চলছে. এইখানে রাখুন একটু সময়তো লাগবে. গাড়ি এককালভার্টের উপর দাড়ালো. জন মানবশুন্য রাস্তা.সামনে দুর দুর কিছুই নাই পিছনেও তাই. একপাশে কবরস্হান অপর পাশে উচু রেলরাস্তা. কর্নেল আমার সামনে এসে দাড়িয়ে মুচকি হাসি দিল এবং পকেট থেকে মৌমিতার চবি বাহির করল. চবিটা দেখে আনন্দ ও ডর দুইটাই বুকটাতে ঢেউ দিল.এই চবি আপনার কাছে,এটাতো আমার ব্যাগে ছিল তাহলে আপনিই নিয়েছেন. হ্যা আমি নিয়েছি এবং আমার অনেক পছন্দ হয়েছে চবির মেয়েটা.মৌমিতার সাথে আমার দীর্ঘ চার বছর ধরে সম্পর্ক আমি তাকে প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসি.আপনি পছন্দ করে কি হবে. কি হবে তাইতো তোমাকে বলতে ও বুঝাতে এখানে নিয়ে আসা. আমার আর বুঝতে বাকি রহিল না. মাথাটা ঝিন ঝিন করে উঠলো. আমিই কর্নেলকে মৌমিতার চবিটা দেখিয়েছি তখন থেকে তার নজর পড়ে মৌমিতার উপর. চোখ বড় করে দুনিয়া দেখতে চাই, কিন্তু শুধু লক্ষ লক্ষ কর্নেল ইমাম নজরে আসে.আপনি কি বলতে চান সরাসরি বলুন. ইয়েস, সরাসরি বলা ভাল. তুমি আজ এখন থেকে মৌমিতাকে.......হা হা হা আমার হাসি আসলো, জিবন থাকতে ভুলে যাওয়া সম্ভব না. কাকে দোষ দিব আমি নিজের দেশেকে না পাকিস্হানকে নাকি তকদিরকে. কর্নেল আমার হাসি দেখে চোখ রক্তজবা করে. আপনি যোগ্য লোক যোগ্য পাত্রী পাবেন কিন্তু মৌমিতা কেন.আমি তো আর দ্বিতীয় মৌমিতা পাবো না. মৌমিতাই আমার যোগ্য আমিও আর দ্বিতীয় মৌমিতা খুজতে চাই না.তুমি কথা দাও তাকে ভুলে যাবে না হয় আমি কঠিন হব. > কি করে ভুলে যাই সেইতো আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা যাকে আমি প্রতি ক্ষনে ক্ষনে স্বরণ করি তাকেই ভুলে যাব. তাজাকিস্হানের কচি কচি বরফ খন্ডের উপর ছুটে চলছি আমি একটু পা চিটকে পড়লেই ডুবে যাব গভীর তলদেশে তাই খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে. ঠিক আছে আমি মৌমিতাকে ভুলে যাব যদি আমাকে সে বলে ভুলে যেতে. অসিম আমার কথার উত্তর তুমি দিচ্ছো না মৌমিতার সাথে আমারই বিয়ে হবে. অতএব তোমাকে আমার জীবনে পথের কাটা হয়ে আমি থাকতে দিবনা. কর্নেল সাহেব মুখ দিয়ে বললেই কি ভুলে যাব এই যে আমার বুক দেখছেন তার অনেক অনেক গভীরে মৌমিতা. এই যে দুইটি আমার চোখ দেখছেন তা এক একটি মৌমিতা. আমি মৌমিতাকে স্কুলে প্রথম দর্শন থেকে ভালবাসি. শুনেছি প্রত্যেক মানুষের মনে তার প্রিয়জনের চবি আঁকা থাকে.যখন মানুষ অন্যকে দেখে তখন মনে আঁকা চবির সাথে মিলিয়ে দেখে আর যখনি মনের চবির সাথে বাহিরের মানুষের চবি মিলে যায় তখনি ইউরেকা ইউরেকা বলে মানুষটির পিছে পড়ে ভালবাসতে. কবিরা এর নাম দিয়েছে মানষপ্রতিমা. মৌমিতাও আমার মানস প্রতিমা. অনেক তোমার ভাষন শুনছি আর না. আমি মনে মনে শক্ত হয়ে যাই এবং খুব মন চায় মৌমিতার চবিটা দেখতে. না আমি তাকে ভুলি নাই ভুলবোও না জিবন জিবান্তর বলে দৌড় দিলাম. একটা গুলি এসে ডান পায়ে লাগে এমনি রাস্তায় পড়ে যাই. আর বলতে পারবো না কোন কিছু . একদিন নিজেকে আবিস্কার করি মনট্রলের হাসপাতালে একটি পা বিহীন অবস্হায়.শুনি দেশ স্বাধীন.নাম তার বাংলাদেশ তাই আমি বাংলাদেশী

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

shawonmallick6950
০১-০৩-২০১৯ ২১:৫৮ মিঃ