সুদর্শনের স্মৃতি
- শেখ মাফিজুল ইসলাম ২৯-০৩-২০২৪
নভেম্বরের সন্ধ্যারাত,
ল্যাম্প পোষ্টের আলোয় ফিরছি একা,
ছোট খাটো যানবাহন তখনও চলছে,
লেদ মেশিনে লোহা কাটার শব্দ
তারা বাজির মতো ফিনকি দিয়ে জ্বলছে।
ভোঁ শব্দে উড়ে এলো একটি সুদর্শন,
বসলো ডান হাতের কনুইয়ের ওপর।
জামাটি নিক্সন মার্কেটে কেনা,
বিদেশী সূতার সাথে হোল তার জানা শোনা।
কালো কুচকুচে ডানা, দেহে নরম আলোর দৃশ্য,
কবি জীবনানন্দ দাশের কথা মনে পড়ে গ্যালো।
মনে মনে বললাম, হায় সুদর্শন! যা উড়ে যা তুই,
আমি মানুষ, আমি ঘাস নই, কিম্বা চষা ভুঁই।
মোটেও কথা শুনলো না, নড়লো না এক চুলও;
আমি হাঁটছি সেও সেঁটে আছে জামার হাতায়,
ওড়ার নেই ব্যাকুলতা, ডানায় নামছে রাতের নীরবতা।
ওকি ক্লান্ত, নাকি অভিমানি
নাকি মানুষের গন্ধ পায়নি কোন দিনই,
নাকি গভীর অনুরাগে
কুঞ্চিত হাতার ভাজে ওর বড্ড ভালো লাগে।
বাসায় গেলাম, সঙ্গে গ্যালো সুদর্শন
তাকে দেখে ছেলে মেয়ে অবাক হলো
জানতে চাইলো - এটা কী?
আমি বললাম- জানিস না বোকা,
এর নাম সুদর্শন, ডাকনাম গোবরে পোকা।
ওর নির্লিপ্ত বসা দেখে মনে হলো
আমি যেনো বাংলার মাটি ঘাস,
নির্ভয় বাংলার গাঢ় নীল শরৎ-আকাশ;
ড্রইং রুমে পা রাখতেই হঠাৎ গ্যালো উড়ে,
মনে হলো উড়ে গ্যালো যেন
রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ।
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।