যদি সত্যিকারের পাথর দেখতে চাও
- সাইফ রুদাদ - নারী ও প্রকৃতি ২৮-০৩-২০২৪

আমি জ্বলন্ত কয়লা ছিলাম,
বিপ্লবী চে, নজরুলের মতই জ্বলে উঠতাম।
প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

আমি আজন্ম বিরোধী দলের সমর্থক ছিলাম,
সত্যি, অবিশ্বাস্য হলেও তাই।

কিন্তু হঠাৎ কার স্পর্শে যেনো রবির মতো ঘুমিয়ে পড়লাম।
আর ঠিক রবির মতই আমার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল দেশে দেশে।

কিন্তু ঘুমোলে কী হবে?
"সবার উপর মানুষ সত্য " তা আমি ভুলি নাই।
ভুলি নাই, শ্যামের হাতের বাঁশির কথা,
এমন কী অর্ফিয়াসের সুরও আমি ভুলি নাই।
শুধু ভুলেছি, প্রতিবাদ, অন্যায়ের প্রতিবাদ।

কী এমন যাদু আছে ওই ছোঁয়ায়?
তা আমি জানি না।
তবু, কেনো যেনো ওই ছোঁয়া পাওয়ার আশায় দিন দিন ভুলতে বসেছি সব।

বাউণ্ডেলে এই আমি, তবু স্মৃতি শক্তি প্রখর।
এ আমার কথা নয়।
বাবা আমায় প্রতিনিয়ত বলতো, তুই পড়িস না কেনো?
পড়লে তো সব মনে থাকে।
তো এ বাবার কথা।

মাঝে মধ্যে সব মনে পড়ে, সব।
তখন আঁখির বান ছেড়ে দিয়ে কাঁদি, যত ইচ্ছে হয়।

কী পেতে গিয়ে, কী হারালাম?
কোত্থেকে যেনো এই প্রশ্ন টা উদয় হয়, মনের মাঝে।
সত্যি, যার পেছনে ছুটতে গিয়ে সব হারালাম
তাকে কিন্তু পাই নি।

তার স্পর্শ, আমায় জ্বলন্ত কয়লা থেকে ফুল করে তুলেছিল।
কী নাদুস নুদুস চেহারা!
যেনো, কোনো সাহেবের ছেলে।
কিন্তু সেই ছোঁয়া, হঠাৎ হারিয়ে আমি পাথর হয়ে গিয়েছি।

সত্যি, আজ আমি জ্বলন্ত কয়লা, ফুল কিছুই নই।
ঘুমটাও কোথায় যেনো চলে গেছে।
এই যে এখন মধ্যরাত, একটুও ঘুম পায় নি আমার।
আমি জ্বলন্ত কয়লা থেকে ফুল। তারপর, তারপর পাথর।

সত্যি, পাথরের যেমন কোনো অনুভূতি নেই,
ঠিক তেমনি আমারও নেই।
এই যে, কত কী ঘটছে চারপাশে।
কত অন্যায় অবিচার হচ্ছে।
প্রকৃতি কত রূপে সাজছে।
কিন্তু আমি নির্বাক!
অথচ, মনের ভেতর কত কী দানা বেঁধে উঠছে।
আর আমাকে অযথাই বলছো, চুপসে গেলে কেনো?

আমার মনে কি হয় জানো?
এতদিন ভুল পাথর দেখেছো,
কেননা, ওই পাথর গুলো কাঁদে।
আর আমি কাঁদিও না, হাসিও না।
ঠিক, যেনো মরা পাথর।
আর এই মরা পাথরকেই শাস্ত্রে সত্যিকারের পাথর বলে।
যদি সত্যিকারের পাথর দেখতে চাও,
তো আমাকে দেখতে এসো।


০৬ আগষ্ট ২০১৬ খ্রী.
তালুকদার বাড়ি, রাজগঞ্জ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

saif
১০-১২-২০১৬ ১৭:৪৮ মিঃ

পাথর আমি সত্যিকারের পাথর