নিক্ষেপের পর
- শাহানারা সুলতানা তানিয়া ২৪-০৪-২০২৪

এবং,
দুই পায়ে বেড়ী পরিয়ে
আমাকে নিক্ষেপ করা হলো গরল মাঝারে।
তৃতীয় দিবসে,
কার নাকি ঘর ভেঙ্গেছিলাম, এই ছিলো অপরাধ ।
হায় মানুষ,হায় বিচার!
ঘর বাঁধলে, সে কি ভাঙ্গার যোগাড় কেউ রাখে ?
আমি বললাম,
কাপুরুষ ।
শিকলের কি শক্তি,চেতনারে আটকায় !
ওদিকে,
এক পৃথিবীর প্রভাতী কিরণ
একটা উঠোন ঘিরে,
যদিও শুনেছি, তার নামে কবর খোঁড়া হয়েছে ।
ঈশ্বরের নামে বেচা কেনা ভালো হয়,
হে রজনীনাথ,
এই যে আঁধার আলো উঁচুনিচু বিভেদ
কতকাল নদীতটে পলি জমবে আর ?
এ মানবদেহে যে স্রোতস্বিনী বয়
এ কুল ও কুল ভেঙ্গে ভরাট করি বুক ।
পূর্বাশার প্ররোচনায়,
যে মোহ আমাকে আটকে দিয়েছিলো
মূলত ছিলো একটি কফিন ঘিরে ।
ভিতরে যে ছিলেন, নাবিক,
তার নামে জাহাজ
জাহাজের ঋণে ছিলো শতাব্দীর স্বাক্ষর ।
আমি অবাক হই,
এই গরল মাঝারে, তাকে কে নির্বাসিত করেছিলো ?
জীবনের এই এক বিড়ম্বনা
কাকে কোন জায়গা দিতে হয়,তা নিয়ে এতোসব দ্বিধা ।
তারপরের গল্পে
নায়ক নিজে ছিলোনা ।
ষোড়শী প্রণয়ীর হাতে, ভুল করে ভুল প্রেম দিয়ে বসে,
আবেগ মানুষকে সস্তা সম্পর্কের জালে
দারুণভাবে আটকে দেয় ।
আর দম বন্ধ হওয়ার পূর্বে,
একবার মনে করে পুরনো দিনলিপির সর্বশেষ ভুল ।
এখন
মাঝে মাঝে একটা করুণ সুর ভেসে আসে
ঠিক মাঝরাতে, গভীর সমুদ্র থেকে ।
কে যেন একটা,খুব করুণ ভায়োলিনের সুর ধরেছে
কিসের এত দুঃখ তার ?
মাঝরাতে বালিশ খুঁজে পায়নি? পড়ে ব্যথা পেয়েছিলো?
নাকি,
আমার মত যুদ্ধে গিয়েছিলো ?
নিঃশ্বাসটা ক্রমে ভারী হয়ে আসছে,ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছি
গরল গ্রাস করছে আমার অস্তিত্ব । কিন্তু না,
ওই যে মিছিল!
ওরা আসছে, আমাকে বাঁচাবে, করবে উদ্ধার ।
হাহা, বোকা বিচারক,
এত মোটা মোটা বই পড়েছে, বিবেক বুদ্ধি আর হয়নি ।
প্রজন্মের মৃত্যু হয় নাকি!
যদি সে প্রজন্ম হয় বৈপ্লবিক, শতাব্দীর সেরা
তাকে মারবে, এমন গরল কোথাও নেই।
মৃতদেহ বইবার,
এমন কোন কফিনই তৈরি হয়নি ।
অতএব,
আমাকে বেড়ী পরাতে পারো
পরাধীন করতে নয়, যুদ্ধ আমরাও করেছি
স্বাধীনতার জন্য,
না তো মুখোশে বন্দী থাকতে, না থাকতে পিছিয়ে ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।