পরনারী
- নওশীন শিকদার ২৮-০৩-২০২৪

দীর্ঘ বাইশ শত কুড়ি দিন পরে প্রথমবার যেদিন বললে
"নয়নী তোমার চুলের ঢেউগুলো বড্ড মনোমুগ্ধকর! "
বিশ্বাস করো আমার বুকের ভেতর
মূহুর্তেই মুগ্ধকর রাজহংসীর উপস্থিতি টের পেলাম!
মারিয়ানা ট্রেঞ্চের চেয়েও গভীর হৃদপিন্ডের সরোবর ওটার ভেসে চলার শব্দে তোলপাড় তখন।

তিলে তিলে আমি হারিয়ে গিয়েছি জলজ অভিশাপে।
তোমার পাড়াগাঁয়ে আমলকীর ডালে দোয়েলের শীষ এখনও বাজে
শুধু আমাকে খুঁজে পেতে ভুলে যাও ভুলে যাবারই উত্তম অভিষেক পর্বে।
মোহর হতে পারিনি গুপ্ত রাজতন্ত্রের, আমি খোলা আকাশ শারদীয়া।
এক আঁজলা সুপেয় জল হতে পারিনি তোমার কল্যাণীয়েষু হিসেবে অস্বিত্ব প্রমাণ করতে!
তোমার বক্ষ তখন প্রকৃত সাধু হবার বাসনা ত্রিশূলে গেঁথে প্রস্তুত।
বরঞ্চ সমুদ্দুরের ফেনিল জলরাশির ফণা আমার মুকুট হয়ে গেল।
কাবিননামা হতে পারিনি, লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মতন দরকারিও হতে পারিনি!
বর্তমানে বাঁচতে দিলেনা আমাকে, ভবিষ্যতের প্রত্যায়ননামা কেমন করে বুনি!
উপকারী ঔষুধ তুমি, এলোপ্যাথী তবে।
সাইড এফেক্টও থাকে।
আমার জীবনে তোমার উপকারী ভূমিকাগুলো অস্বীকার করি যদি তবে নিজেকেই অস্বীকার সমান হবে।
আফসোস... দিনশেষে ঠুনকো যুক্তির পেরেক মেরে আমাকে "পরনারী" খেতাবে ভূষিত করলে।

সেদিন সোয়েটারের ঠাসা বুননের মতন ঘন কুয়াশারঙা ভোর এলো,
নীল ব্যালেরিনা জুতো জোড়া ফেলে পুরোনো দীঘিটায় পা ডুবিয়েছিলাম,
তুমি বললে "নয়নী তোমার পদচ্ছাপ আমার মন থেকে মুছতে পারবেনা কোনোদিনও! "
ব্যবিলনীয় সাজসজ্জার কবচ ততক্ষণে অট্টহাসিতে লুটানো অগল্প!
বোতাম ফুলের রঙ আর ধানশালিকের ডাক ছাপিয়ে তোমার কথা শুনতে পেয়েছিলাম বটে
কিন্তু যাবার বেলায় তোমাকে আর কিচ্ছুটি বলার সাহস হলোনা,
শুধু ফেলে এলাম কাশফুল রঙা মাফলারটা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।