স্বরঋতুর স্বদেশভূমি
- শাহরিয়ার মোঃ রায়হান ২৯-০৩-২০২৪

প্রভাত বেলায় শিশির বিন্দু
পায়ে শীতলার পরশ বুলিয়ে
যখন আসে শীতের আগমনী-বার্তা নিয়ে,
তখন;
চিতই,ভাপা আর পিঠাপুলির সাথে
খেজুরের রস যায়
হৃদয়ের মরুচরের তৃষ্ঞা মিটিয়ে দিয়ে
আর, ভালোলাগার শীহরণে মুড়িয়ে
আমার করে রাখে ঋণী
তাই,
আমি স্বদেশের কাছে চীরঋণী।

মেঘগুলো ঘন আধারের কালো চাদর গায়ে
হৃদয় কাঁপান হুঙ্কার ছুড়ে
গেয়ে ওঠে বর্ষার আগমনী গীত,
মেনী, পুটি আর রাণী মাছের রঙ্গে
নদীমাতৃকা সাজেঁ নব-যৌবনার সাজেঁ
তখন,
বৃষ্টি ধারার ঐ রিনিঝিনি ধ্বনি
ভালোবাসার ঘুমপারানি গীত শুনিয়ে
আমায় করে যায় ঋণী
তাই,
আমি স্বদেশের কাছে চীরঋণী।

হিংস্র বিক্ষুব্ধতার প্রখরতা নিয়ে
তপ্ত-উষ্ম বাতাসের নিঃশ্বাস ছুটিয়ে
রাগিত গ্রীষ্ম আসে পুরোটা রুক্ষত্বা নিয়ে;
বিদ্ধস্ত ফাটলের বলিরেখারা তখন
ভেসে ওঠে মাটির বুক ছিড়ে,
শরীরের প্রতিটি লোমকূপ
ক্লান্তির ঘামে ভিজে ওঠে
তৃষ্ঞার্ত বুকের অস্থিরতা খোঁজে ফিরে
একটুক্ষানি শীতলতা;
তখন,
পাগলা হাওয়ার মাদল বাঁজিয়ে
কালবৈশাখী আসে ঝড় ছুটিয়ে
গ্রীষ্মের রূক্ষ্বতা সব শুষে নিয়ে
শীতল-স্নীগ্ধতার পরশ বুলিয়ে
করে যায় আমার ঋণী
তাই,
আমি স্বদেশের কাছে চীরঋণী।।

শরৎের ঐ কাশবন আর
ধানক্ষেতে সদ্য গজানো ধানের শীষকলি যখন
দোল খেয়ে যায় প্রশান্ত বাতাসের মৃদূ্ ছন্দে;
আর,
রূপকথার রাজ্য হতে
যখন হেমন্ত আসে
সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে
ময়না,টিয়ে বউ কথা কও পাখিদের
মধুর গানের সূর
হৃদয়ে সুখের আবেশ বুলিয়ে
করে যায় আমায় ঋণী
রংধনুর রঙ্গীন আবিড়ে মেখে
ঋতুরাজ আসে মোদের মাঝে
প্রকৃতি হয়ে ওঠে সতেজ,সবুজ
পলাশ, শিমুল, হৈমন্তীর ঐ স্বর্গীর রূপ
আমায় করে যায় ঋণী
তাই,
আমি স্বদেশের কাছে চীরঋণী।

স্বরঋতুর বৈচিত্র ঘেরা মোর স্বদেশভূমি
অপরিসীম দানে মোরে করেছ চীরঋণী
তোমার কাছে জানায় একটাই দাবি-
জীবনপথ পাড়ি দিয়ে শেষে
মৃত্যু যখন আমায় কেড়ে নেবে এসে
স্বদেশ মাটিতেই বিলিন হয়ে
যেন আবার আসতে পারি ফিরে বাংলা-ভূমিতে।।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।