অটোপসি
- হাসান রাকিব - মিশ্রণ ২০-০৪-২০২৪

হলুদ রঙের কপাট খোলা,
বাতায়ন বন্ধই থাকে,
নীলচে দেয়াল,
প্রথম সাক্ষাতে মনে হবে,
অনেক যুগ আগে তার গায়ে,
রঙের ছোঁয়া লেগেছিলো।

বিছানারচাদরের উজ্জ্বলতা,
হালি মাস আগেই বিলীন।
কাঁথাটা এক কোণে,
জড়োসড়ো হয়ে পড়ে আছে।
বালিশটা মিলিয়ে গেছে,
মাথা ঠেকিয়ে এখন আর আগের মতো
আরাম পাওয়া যায় না,
বড় শক্ত ঠেকে।

টেবিলটা পুরোদমে ভরপুর,
এতটুকুন জায়গা খালি নেই।
তিন সাড়িতে বইপত্র আর খাতা রাখা,
বিরক্তি নিয়ে নিতান্তই অনিচ্ছায়
বইগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে আমার মনে হয়,
ধুলোমাখা বইপত্র আমাকে প্রতিদিন দুবেলা করে অভিশাপ দিচ্ছে।
বাকি জায়গাটুকুন দখল করে আছে,
ল্যাপটপ,আয়না,একখানা চিরুনি
আর কিসব জিনিসপত্রে।
কলমগুলো ইচ্ছেমত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

চেয়ারটা একখানা পোষাক রাখার ডেস্কে পরিণত হয়েছে।
দেয়ালের এককোণ থেকে অন্যকোনে
একখানা রশি ঝুলানো,
হ-য-ব-র-ল হয়ে শার্ট-প্যান্টগুলো
হাত-পা ছেড়ে আছে,
তাকালে মনে হবে এগুলো ফাঁসিকাস্টে ঝুলছে।

ফ্যান শিলং আঁকড়ে ঝুলে আছে
নিজের মত করে,
দুর্ভাগার রঙিন চেহারা মলিন ধুলোতে।
লাইট মাকড়শারজাল ছেদ করে
দিব্যি আলো দিচ্ছে।
লাইটটাই রুমটাকে ভুতুড়ে পরিবেশ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

ফ্লোরে অব্যবহৃত পাপস নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে,
টেবিলতলা ছোটোখাটো ডাস্টবিন,
দিন-বিশেক ঝাড়ুর আছড় পড়েছি।

ইদানিং মশার উৎপাত বেড়েছে,
ম্যালেরিয়ার ফাঁদে পরার ভয়ে,
সদ্য কেনা দুই নাম্বার ম্যাজিক মশারিটা,
খাটের এক কোণঘেঁষে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে।

সব কিছুই আপন করে নিয়েছে
আমার ছোট্ট ঘর,
ক্লান্ত শরীর নিয়ে আমার জায়গা হয়
খাটের এককোণে।
এভাবেই আছি এই আমি,
যা আছি বেশ আছি।

২৮ নভেম্বর ২০১৬ খ্রিঃ

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।