আমি বাংলাদেশ বলছি
- খালিদ নোমানী - ক্ষুধার্থ শতাব্দী ১৯-০৪-২০২৪

আমার বয়স আজ ছেচল্লিশ বছর
রক্তের দাগ এখনও আমার বুকে
লাল সবুজের পাতাকা আমার স্মৃতি
মায়ের হাহাকারে নির্বাক শোকে।

হাঁটি হাঁটি পা পা করে
আমি যৌবনের শেষ প্রান্তে
গায়ের রং মলিন হয়েছে
বিবর্ণ হয়েছে চেহারা,
হয়েছি পঙ্গু নয় মাসের মুক্তির সংগ্রামে ,
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধার সম্মানিটুকু পাইনি।

আমাকে কেউ চিনেনা আজ
কেউ আমার নামটাও আগ্রহে লিখে না
অথচ বাংলা আমার ভাষা
পাকিস্তানী হতে বাঙালি আমার জাতিয়তা
পূর্ব পাকিস্তান হতে বাংলাদেশ আমার নাম।

আমার নিজের রক্তে মাংসে
আমার ছেলে আর বাবা'র রক্তে
মা বোনের ইজ্জত বিলিয়ে
নিজের নাম বিশ্বের মানচিত্রে আঁকা হয়েছে।
কিন্তু মানচিত্রেই সীমাবদ্ধ আমি,
অধিকার পাইনি
থামাতে পারিনি বিরহীদের আর্তনাদ
দিতে পারিনি মজলুমকে মুক্তি
গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে আমার আওয়াজ
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণতন্ত্রের মিছিল।

শেখ মুজিবুর রহমান
আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল
"সোনার বাংলা" আমার নাম হবে,
মেজর জিয়াউর রহমান
আমাকে যে স্বপ্ন দিখিয়েছিল
বহুদলীয় গণতন্ত্র আমার বৈশিষ্ট্য হবে
আমি হব সমৃদ্ধশালী একটি ভূখন্ড।
তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কেউ রাখেনি
সবই কী ছিল মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,
আর আমার সাথে প্রতারণা ?
এখন তাদের বংশধর তিলে তিলে খাচ্ছে
আমার রক্ত, মাংস আর আমার অস্তিত্ব।
কেউ কি শোনছো আমার আর্তনাদ ?
কেউ কি আমাকে মুক্তি দিতে আবার অস্ত্র হাতে নিবে?
আমার কোন সোনার ছেলে আছো কি
আবারও গর্জে উঠবে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে
একে একে সকল জারজ সন্তানদের হতে আমাকে মুক্তি দিবে?
গর্জে ওঠো আবার হে আমার সহসী সন্তান
ছিঁড়ে ফেল জালিমের পিতৃ পরিচয়হীন দুই রান বাকশালী মসনদ ভেঙে কর খান খান।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।