সঞ্জীবনী
- মুক্ত মন ২০-০৪-২০২৪

বেড়ে ওঠা কাকে বলে , সে জানে ।
কাকে বলে বেঁচে থাকা , তাও জানে ।
কবরখানায় জন্মানো মল্লিকা চারার মত,
সেও জন্মেছিল একশ পাথরের
ঠাসাঠাসি বধ্যভুমিতে।
যেখানে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়,
যেখানে বাঁচার জন্য নেই কোনো উষ্ণতা -
যেখানে মৃত্যু বাড়িয়ে থাকে নীল থাবা ,
সেখানেই বড় এলেবেলে বেঁচেছিল সে
- অপরাজিতা ।

বাঁচছিল সে খুঁটি ছাড়াই - আস্ত চারাগাছ ।
সবে যখন কচিপাতা উঁকি মারছিল
অনাঘ্রাতা যৌবনে -
হঠাৎ কারা যেন তার পরিচর্যায় মেতে উঠল ।
কথা নেই , বার্তা নেই - হুড়মুড় করে
উদয় হল ক'জন ভালোমানুষ ।
কে জানে কি ভেবে তারা সার দিলো গোড়ায়,
জল দিল আঁজলা ভরে -
কেউ আবার সরাতে লাগল পাথরের দঙ্গল ।
চারাগাছ দিশেহারা - পেতে সে জানে না ,
নিতে সে শেখে নি ।
পাথরের বুকচেরা কন্যা এতদিন
পাথরকেই অবলম্বন জেনেছিল ।
আজ হঠাৎ আসা ওরা বলল 'ভালো আছিস তো?'
কি অস্বস্তিকর বিপত্তি !
- ভালোবাসা !

পাথুরে শীতলতা নিয়ে বাঁচে যে,
হঠাৎ পাওয়া উষ্ণতা তাকে পুড়িয়ে দেয় ।
না পাওয়াটাই যার জীবনে স্বাভাবিক ,
ভালোবাসার সঞ্জীবনী তার কাছে এক পেয়ালা হেমলক ।

অপরাজিতার নীল পাপড়িতে ফোঁটা ফোঁটা
শিশিরেরা অনেকরকম ভাবে বলে 'ভালোবাসি' ।
এত পেয়ে ডুকরায় চারা গাছ ,
সঞ্জীবনীর শিশির যত শুষে নেয় লবনজল -
ততবেশি রক্তাক্ত হয় অপরাজিতা কুঁড়ি ,
- পরাজিত ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।