শান্তিচুক্তি
- আল আমীন ২৩-০৪-২০২৪

“আসুন মাননীয়া হবু-ঘরনী,
চলুন ক’দফা পারিবারিক-শান্তিচুক্তি হয়ে যাক:
আমার ঘরের চাঁদ হবেন আপনি, সে ব্যপারে কোনো আপত্তি থাকা চলবেই না । ঘুরবেন, ফিরবেন; শোয়ার ঘর থেকে বসার ঘর; রান্নার ঘর থেকে দেউড়ী, ঝুল-বারান্দা, করিডোর; সব জায়গাতেই মাঝে মধ্যে আপনার ছায়া হতে চাইবো । হঠাৎ পেছন থেকে গিয়ে... তীব্র-দ্রুততায় ঘনিভূত হওয়া আহ্লাদে চন্দ্রগ্রহণ লাগতে পারে; আপনি ঢাকা পড়ে যাবেন পুরোটাই আড়ালে! আপনার ঘেমে যাওয়া মুহুর্তের অস্থির আলোয় লজ্জা পেয়ে চোখ ঢাকতে পারে দুনিয়া । বিরক্ত হওয়া যাবে না কিছুতেই”...

“আমারও তো কিছু শর্ত থাকতে পারে!
আচ্ছা, এমন কি হতে পারে না?
মানে, হতেই পারে,—আমাকে নিয়ে অনেকগুলো প্রোট্রেট এঁকেছে কেউ, কিংবা অনেকেই আমাকে নিয়ে গান বেঁধেছিল ।
আবার এমনও কেউ থাকতে পারে,—যারা আমার যুগলবন্দী আলোকচিত্র এনে দেখাবে । ফ্রেমেবন্দী আমার সাথের অন্যজন নিশ্চয় আপনার চেয়ে দেখতে ভালো হবেন না;—জেলাস হওয়ার কিচ্ছু নেই । কিন্তু, ছবিতে তিনি শুয়ে আছেন আমার বুকের উপর;—ঠিক যেন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি—পুরোটাই বুকে আঁকড়ে রাখার মত!...
অথবা, এমনও অনেক গল্প শুনতে হতে পারে আমাকে নিয়ে: সেই কত দীর্ঘ চন্দ্ররাত—কেটেছে কত জনের সাথে দূরালাপনীতে, কিংবা বছরের দীর্ঘতম রাতগুলোয়— রেলভ্রমণের স্মৃতিও আওড়াতে পারে কেউ; সিঁড়ি-ঘরে চোরাই-চুমুর ঘটনাও হয়তো বাদ যাবে না ।
কী করবেন তখন”?

“সকল শর্তের শেষে মাননীয়া, চোখ বন্ধ করে আমি সই করবো আপনার সব চুক্তিতেই! সুধু প্রথমবার জখম হওয়ার স্বীকারোক্তি শুনতে চাই... —ওই যে কৈশরের প্রথম ছোঁয়ায়, প্রথম জখম হয়েছিলেন চরম পুলকে! কী, পারবেন স্বীকার করতে? নাকি শিকার হবেন আমার”?

“চরিত্রের দোহাই দিয়ে কী হবে জনাব?
আপনাকেও সমাজ—যেমন দিয়েছে খোলা মাঠ, ইচ্ছামত রাত । আমিও শিখেছি মাতাল হতে; চৈত্রে রোদে পুড়ে তপ্ত ঠোঁট—মধূতে ডোবাতে । সতীত্বের প্রশ্ন তুলে সেকেলের পরিচয় দিতে চাইবেন না নিশ্চয়!
আসুন সমঝোতা করে নিই”!

১০.০৪.১৬
ঢাকা-১২০৭

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।