প্রভাতী পদ্ম এবং শীতকাল
- শাহানারা সুলতানা তানিয়া ২৯-০৩-২০২৪

এখন শীতকাল!
আমি তখন কি করতাম?
আমার শৈশব,
এখনকার মত কবিতা লিখতাম না
তখন নিজেই কবিতা ছিলাম ।
দাদীর সাথে চাচা ফুপিরা গোল করে বসতাম
মাঝখানে আগুন জ্বলতো,ঠিক রোদ উঠার আগ পর্যন্ত।
আম্মু এনে পিঠা দিতেন, ওখানেই খাওয়া
মক্তবে যাওয়া, স্কুলে যাওয়া ।
স্কুল থেকে ফিরে
আগে মাঠে যাওয়া, কোথায় মাছ ধরা যায়
তার জায়গা নির্ধারণ করা ।
খেলা, কোথায় সবজি ক্ষেত করছে কে
তার সাথে গিয়ে বীজ বুনা, নিড়ানি দেওয়া ।
যেটা এখন সবথেকে বেশি মিস করছি,
পুকুরে গোসলের সময় মাছ ধরা ।
দলবেঁধে পুকুরে যেতাম, বাড়ি থেকে দূরে একটা পুকুর
সেটাও মাঠের মাঝখানে,
বাড়িতে বলে যেতাম রোদ পোহাবো বলে
ওখানে গিয়ে,মাছ ধরতাম এই শীতের পুকুরে ।
কত ঘন্টা পানিতে থাকতাম হিসেব নেই!
কতজনে বলতো, এই মেয়ে মানুষ হবেনা,
এর দ্বারা পড়ালেখা হবেনা ।
স্কুল ফাঁকি দিয়েছি,পড়া ফাঁকি দিয়েছি
শুধুমাত্র মাছ ধরবো বলে ।
তারপর, সবজি ক্ষেতে,শাক তুলতাম,
আম্মুর সাথে ধান সিদ্ধ করতাম
আর দাদীর সাথে দৌড় খেলা দিতাম ।
আমারে লাঠি নিয়ে দৌড়ানি দিতো
আমার কি দোষ.! কার বাচ্চা গাছ থেকে পড়তো
নিজের বুদ্ধিতে চলতে পারেনা?
বাড়ির ছেলে খেলার সাথীরা
আমাকে ভয়ই পেতো । মাছ ধরা বা খেলায়
আমার সাথে কেউ জিততে পারেনি ।
গোধূলি পর্যন্ত খেলে ঘরে ফিরে
খানিক পড়া, খাওয়া, পরদিনের প্ল্যান তৈরী করা
তারপর ঘুম, ঘুমে স্বপ্নে দেখা
আমি একটা রাজ্যে আছি,পরীদের রাজ্য ।
যেখানে সবাই ফুল,পাখি,গাছ নিয়েই মত্ত
কেউ কিছু বাধা দেয়না, সবাই স্বাধীন ।
পরেরদিন,সকাল ভোরে
কুয়াশার মাঝে উঠে দৌড়, খেজুরের গাছ বেয়ে,
রস নামাতাম,কখনো সখনো গাছেই খেয়ে নেমে পড়তাম।
তারপর ঘরে ফিরে আবার আগুন পোহাতাম ।
মক্তব,স্কুল, বিকেলবেলা ঘরে ফেরা ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।