বেওয়ারিশ
- শাহানারা সুলতানা তানিয়া ২৩-০৪-২০২৪

একদিন যখন বিধবা হবো
কাজলের ক্ষোভে জড়াবো বিতণ্ডায় ।
আশ্বিনের যে নদী পথ ভুল করে
তার তীরভূমে লাশেদের বসে হাট ।
লাল,নীল,হলুদ,কালো,সাদা
কত রকমের লাশের রং!
বেছে নিতে পারেন আপনার মৃত্যুর রং ।
অথবা গোরস্থানের জায়গাটুকু,যেখানটায়
মাটিই আদিম, মাটিই নবীন, মাটিই শেষ বাসস্থান ।
এক বেলা উপোসে,
দুই চোখ ক্ষুধায় লাল ।
দুই বেলা উপোসে
মুখ শুকিয়ে চুপসে যায় লাবণ্য ।
তিন বেলা উপোসে
মানুষের বদলে যায় অস্থায়ী ঠিকানা ।
অথচ,
তিন দিন ।
একটা লাশের পাশে,
এক উপোস মোমের বাতি, পাহারায় ।
এখানে তারতম্য রংয়ে নয়
বিশ্বাসে আর বৈষম্যে , বেওয়ারিশ ছিলো ।
মানুষ যখন মানুষ নামে জন্ম নেয়
কেউ ভাবেনা মৃত্যুর কি নাম হবে?
ওপাড়ে মৃত্যু উৎসব
এ পাড়ে জন্মের ।
কেউ ভাবেনা
নদীটা বয়ে চলে কি দুঃখ বুকে নিয়ে ।
মদ আর ব্রোথেল কেন্দ্রিক ফাগুনেরা
এক রাতেই ভুলে যায় সহস্রাব্দের পুরাণ ।
আমাদের সভ্যতায়
জীবনের সংজ্ঞা যতটুকু জেনেছি
এই লড়াইয়ের নাম শুধুই টিকে থাকা ।
বস্তুত,
জীবন নামে মৃত্যু লাভের বিড়ম্বনা ।
সওদা করতে করতে
লভ্যাংশের নামে,নিজস্বতাকে বিকোয় মানুষ ।
যেমন লাশকেন্দ্রিক মোমের আলো
পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়,শুধু অন্যকে আলোকিত করেই ।
দিনশেষে মানুষ, মানুষের জন্যই বাঁচে
মানুষকে কেন্দ্র করেই কাঁদে,হাসে ।
তবুও ফাগুনে চুরি হয় মদ,
ভেংগে ফেলে গীটার,
ব্রোথেলে জুয়াড়িগণ গণনায় বসে ।
রাতের হিসেব শেষ করে
মুদি দোকানি ঘরের পানে হাঁটে ।
ছিনতাই হয় মাঝ পথে,
এখানেও পড়ে লাশ
জমা হয় নদীর তীরে ।
এবং,
এই নামে কোন রং নেই, মৃত্যু হয় বেনামী
অতঃপর, বেওয়ারিশ
আরো একটা দাফন ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।