ছায়ার হাওর
- কুমার সৌরভ ২০-০৪-২০২৪

একটি অন্নভূমি নাম তার ছায়ার হাওর
শাহ আব্দুল করিমের দিরাই পেরিয়ে
দিগন্তের পানে হাঁটতে হাঁটতে পরে এই
আদিগন্ত নিম্নভূমিতে পৌঁছানো যায়
শাল্লা খালিয়াজুরি আর মিঠামইনের
কয়েক হাজার কৃষিজীবি পরিবার এই
হাওরকেই মা বলে জানে
মা যেমন স্তনদুগ্ধ পান করিয়ে বাঁচিয়ে
রাখেন রক্তপিণ্ড বেড়ে উঠা শিশু
তেমন মাতৃস্নেহের সুবিশাল ছাতা
হয়ে বুকে আগলে রেখেছেন কর্ষণের
জগৎজননী।

মায়ের অমেয় খাদ্যভাণ্ডারের এই
বুকখানি দখলে নিতে
এলো রাক্ষুসে বান এক বিশাল
কয়েক দিন ধরে আক্রমণ তার অবিরল
জল, ঝঞ্ঝা, বায়ু, শিলা আর কীছু লোভাতুর
নিঃশ্বাসকে অস্ত্র করে চক্রবুহ্য
বানিয়ে দখল নিতে চাইছে মায়েরই
সুবিস্তৃত সবুজ আঁচলের মত
পরম নির্ভরতা মমতার গাঢ় বন্ধন
মা নিজের শরীরের প্রতিটি লোমকূপে
সবুজ শস্য গেঁথে
যে খাদ্যভাণ্ডার গড়ে তুলছেন নিজের
অস্থি রক্ত মাংস দিয়ে
সেই ভাণ্ডার কেড়ে নিতে চাইছে জীবনের
শত্রুদল ভয়াল ভীষণ

মায়ের সন্তানেরা পালটা প্রতিরোধ গড়েছে
নিজস্ব নিয়মের প্রয়োজনে
ওরা অভূক্ত দিন নির্ঘুম রাত কাটিয়ে
কোদাল টুকরি বাঁশ চাটাই সাথে মায়ের
নিরাপদ কোলে থেকে যাওয়ার ব্যগ্র ব্যাকুলতায়
শত্রুদর্প চূর্ণ করতে বানিয়ে চলছে যে
পালটা প্রতিরোধ দুর্জয় সাহসে
গত রাতে সেই প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে
দখল হয়ে গেছে মার সবুজ শাড়িটি
শাড়ির ধানি আঁচল ও জমিন।

মা ডুবছে ওই শত্রুর ছাড়া জলে
মা ডুবছে জলের অন্ধকারেই
মা ডুবছে অন্ননাশার আক্রোশে
মা ডুবছে কালনী নদীর সন্তাপে
মা ডুবছে মুখের অন্ন নিয়ে যে
আহারে বাছা তোরা বাঁচবি কেমন করে
তোরা বাঁচবি কেমন করে রে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।