অন্ধ কচ্ছপের পিঠ
- কুমার সৌরভ ২৬-০৪-২০২৪

রোদের দুপুর এক অগ্নিকুণ্ড শহরে
শরীর থেকে সঞ্চিত মেদ গলে পড়ে
নির্দয় সড়কের উদোম বুকে।

বুড়ো রিক্সাওয়ালা তবু প্যাডেল চাপেন
হা করে শ্বাস টেনে শুষে নেন নাগরিক
আবর্জনা সভ্যতার,
ফুসফুসে করে বুকের গভীর ভিতরে যায়
ভাসমান জীবাণু বিবিধ প্রকারের।
রিক্সার আসনে বসা তিন মণ ভার টানে
বিষাক্ত ফুসফুস,
টেনে নেন পৃথিবীর এক মগ্ন ব্রহ্মচারী
অন্নচিন্তামনি হয়ে যিনি আজ স্বগ্রাম ছেড়ে
আগুনের শরীর ব্যবচ্ছেদ করে
একটুখানি বাতাসের জন্য হাঁপর টানছেন।

নগরে আজ আগুনের ফুলঝুরি খেলা চলছে
আধা সভ্যতার ছাল ফেলে যারা নিজেদের
সুসভ্য ভাবছেন তাদের দুই প্রতিমূর্তি
রিক্সার হুডের ছায়াতলে
একটি শব্দ নিয়ে গবেষণা করতে করতে
গন্তব্যের দূরত্ব থেকে নিকটবর্তী হচ্ছেন।
সভ্যরা গন্তব্য পেয়ে যায় এই প্রজ্জ্বলিত শহরে
বুড়ো রিক্সাওয়ালা তখনও হিসাব কষে
আর কতো সভ্যতার ভার বইলে তবে
পাঁচ কেজি চালের মতো ওজন হবে তার।

সভ্যতাকে চাল দিয়ে বিভাজন করলে
অবশিষ্ট থাকে এক বিরাট শূন্য
শূন্য মানে যার কোন স্থিরবিন্দু নাই
শুরু নাই শেষ নাই আছে শুধু
প্যাডেল চেপে সামনে বাড়া অবিশ্রাম
নুনা শ্বেদবিন্দু ঝরিয়ে যাওয়া কেবল
নগরে সভ্যতার পাপগর্ভ থেকে
গড়ে উঠা অন্ধ কচ্ছপের পিঠে।

১৩.০৫.২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।