সওদা
- কাফাশ মুনহামাননা - শেষবেলা ২৫-০৪-২০২৪

জীবন সে তো এক সওদার নাম।
যে যতো বেশি সওদাগর, সে ততো মুনাফাভোগী।

জন্মের পর থেকে মা-বাবার কাছে
সওদা হয়ে আছি স্রষ্টার বাঁধা নিয়মে।
যতোদিন বাঁচতে হবে,
ততোদিন তাদের তাবেদারি বাধ্যতামূলক।
সে তাবেদারি চাই ভুল হোক বা সঠিক -
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এর থেকে কোন রেহাই নেই।
উল্টো পথে হাটতে গেলে
বিঁধতে হবে সমাজের চক্ষুশূলে।
অবশ্য শতকরা নিরাব্বই ভাগ লোক
এটাকে সওদা বলতে পুরোপুরি নারাজ।

জীবনের প্রধান ও কঠিনতম সওদা
সম্পাদন করতে হয় প্রাপ্ত বয়সে এসে।
হাজারো হিসাব-নিকাশের উপর ভর করে
সম্পন্ন হয় এই মহা সওদা।
কেউ কেউ এটাকে ভালোবাসার রূপ দেন।
আসলে পণ্যের উপযোগ তৈরি না করলে
দামি পণ্যও ক্রেতার চোখ এড়িয়ে যায়।
ভালোবাসাও আমার কাছে
সেই রকম এক উপযোগই বলা চলে।
যে সওদাগর তার ক্রেতার
যতো বেশি মনরোঞ্জন করতে পারে,
ক্রেতাও তাকে পেতে স্বভাবতই লাফিয়ে ওঠে।
এই মধ্যবয়সী সওদার
গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম -
ভবিষ্যতের পাক্কা সওদাগরের খ্যাতি লাভের জন্য।

তৃতীয় সওদার যাত্রা শুরু হয়
সন্তানের আগমনের সাথে সাথে।
আপন উত্তরসুরীর অনুকরণে
এই সময় পূর্বসুরীও নেমে পড়ে ময়দানে -
পণ্যের বহুজাতিক উন্নতি সাধনে।
মা-বাবার ভুলগুলো তখন আর ভুল মনে হয় না।
মাঝখানে দেখা হয় আরো
অনেক সওদাগরের সাথে। যেমন -
মানবতার সওদাগর, ধর্মের সওদাগর,
দেশাত্ববোধের সওদাগর ইত্যাদি।
সওদাগরের ভীড়ে কখন যে নিজেও
সওদাগর হয়ে উঠি, ঠাহর করতে পারি না।

পৃথিবীটা বড়ই অদ্ভুত, বড়ই অদ্ভুত।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।