নিজ তেজ
- মোহাম্মদ ইরফান ২৯-০৩-২০২৪

রাজবাটীটা পার করিলেই তাল-তমালের বন
দেখলে শুধু মন ভরে না,জুড়ায় দুই নয়ন
বনের পরে জারুল-পারুল,তরু-লতার ভিড়ে
কর্ণফুলীর বাঁকটা এদিক তাকায় ফিরে ফিরে
পথের ধারে তাল পাতাতে বাবুইর কাঁচাঘরে
সোনাদেহে সোনামাখা রোদের আলো ঝরে
বাবুইর ঘরে সুরের কাঁকন বাজে ঝাকানাকা
হাওয়ার তোপে নড়েচড়ে তাল-তমালের শাখা
তমাল তলে সর্প চলে,বলে গ্রামের লোকে
সর্প তাড়া করে,যদি কেউ বনে যায় ঢোকে
তাল পাতাতে বাবুই এবং তমাল তলার সাপ
গলায় গলায় ভাব করে,তার নেইকো পরিমাপ
বাবুই যদি ফল পেড়ে দেয়,সাপ কুঁড়ে দেয় মাছ
একজনাতে সুর সাধে আর অন্যজনায় নাচ
তবু ভয়ে,নিরব সয়ে,বাবুইনি মন ভুলো
তার মনে হয়,সাপ-স্বভাবে মাখা কালো ধুলো
বিষ নাগিনী বিষের দেহো,বিষাদ ইতিহাসী
ফনা ফেঁপে ফাঁদপাতে আর ফঁনায় সর্বনাশী
বাবুই তো নয় চতুর বেশি,নয়তো চালাক অতি
নিপুণ ঠোঁটে বিনুন ফোটে,হয়না কারো ক্ষতি।

বাবুইর ঘরে আলো করে এলো বাবুইর ছানা
মার কথাতে হেসে-খেলে,উড়তো মেলে ডানা
বাবুই ছানা মেলতো ডানা,সাপ না জানে অতো
কিচিরমিচির নিনাদ শোনে লোভটা বেড়ে যেতো
লিপ্সা গোজে সুযোগ খুঁজে,বেড়ায় তালের তলা
নাচ দেখিয়ে,গান শুনিয়ে আঁকতো ছলা-কলা
একদা সুযোগ এলো ঠিকই,যাচ্ছে বাবুই দূরে
বাবুইনি তার সঙ্গে যাবে,আসবে অনেক ঘুরে
ছদ্মবেশী সাপ সখাকে দিয়ে যাবে ছানা
দেখে-শুনে রাখবে ভালো,কেউ দিবেনা হানা
যেই না বাবুই মেলল ডানা,গেলো বাসা ছেড়ে
সাপের মাসি সর্বনাশী ফুসলে গেলো,তেড়ে
ডানা মেলার কানুন জানা আছে,বাবুই ছানার
বিপদ-আপদ সময় কেটে,নিয়ন্ত্রণে আনার
উড়াল দিলো বাবুই ছানা,দু-মুখো ঘর পানে
একমুখ যার জমিন শোভে,দ্বিমুখটা আসমানে
বাবুই ছানা জমিন মুখো বসে দোরের দ্বারে
ভেঙ্গচি কেটে বলে "আমায় ধরতে কে আর পারে?"
আমরা চলি আপন ধারায়,আপন জনার তরে
নিজের গড়া সোনায় মোড়া,কাশের-খাসা ঘরে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।