পারমিতা
- এস. মেহেদী হাসান - সময়ের বাঁকে ২৬-০৪-২০২৪

এ বুকের মাঝখানটায়- অনেকটা জায়গা খালি পড়ে আছে। বহুদিন চাষাবাদ করিনি সেথায়- বপন করিনি কোনো বীজ! অবজ্ঞায়- অবহেলায়, পতিত জমি- আজ নির্ভয় আগাছার বসতি! বুনো ঘাস- বুনো লতা, অচেনা কত্তো রকমের- অযাচিত-উপেক্ষিতের আনাগোনা! তবুও তোর দেখা পাইনি, যার জন্যে এতো বছরের অপেক্ষা! তোর মনে আছে পারমিতা? স্কুলের ট্রেনটা ইচ্ছে করেই ছেড়ে দিতাম রোজ। আর অপেক্ষায় থাকতাম ফিরতি ট্রেনের। যে ট্রেনে ফিরবে আমাদের বন্ধুরা! মনে মনে ভাবতাম- ট্রেনটা যেন ফিরে না আসে আর! এখানেই ঠাঁই বসে রবো অনন্তকাল! কিন্তু বেরসিক ছিলো ট্রেনটা, সময়ের ব্যাপারে একদম সোজাসাপ্টা। স্টেশনে পৌছাতেই বিকট হুইসেলের শব্দ, ভেঙ্গে দিতো স্বপ্ন দেখার নীরবতা! তারপর - যে যার মতো বাড়ী ফেরার আয়োজন। যেন কেউ চিনি না কাউকে- কোনদিন! এভাবেই অচেনা হবি- একদিন, ভাবতে পারিনি সেদিন! মনে পড়ে- বইয়ের পাতার ভাঁজে প্রথম চিঠির কথা! ভুল বানানে লেখা সেই চিঠি - বুঝে নিতে কষ্ট হয়নি একটুও! যেমন কষ্ট হয়েছিলো- পড়তে শেষ চিঠিটা! সেই চিঠি লেখার অভ্যাস আজও আছে! বানানগুলো আগের মতো ভুল হয় না- ওতোটা! তবে ঠিকানাটা ঠিক মনে নেই, আজকাল-স্মরণশক্তি কমেছে কিছুটা। পারমিতা,তোর ওখানে বৃষ্টি হয়? দু'হাত দিয়ে বৃষ্টি ধরিস? আদর দিয়ে গায়ে মাখিস? আমি কিন্তু রোজ ভিজি! সকাল-দুপুর- গভীর রাতি! কেউ জানেনা,কেউ দেখেনা- কেমন করে -লোনা জলে সাঁতার কাটি! পারমিতা, তোর শরীরে সেই বেলী ফুলের কড়া গন্ধটা আজও আছে? যে গন্ধে উন্মাদ হয়ে ছুটে যেতাম! বুক ভরে টেনে নিতাম তার নির্যাস। নাকি নতুন কোনো গন্ধ গ্রাস করেছে তাকে! জানিস- আমার শরীরের গন্ধটা আপাদমস্তক বদলে গেছে। মরা মানুষের লাশ পঁচা গন্ধ এখানে! কি উৎকট- বিভৎস সে গন্ধ! প্রেমিক মরা গন্ধ!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।