কবিকে মুক্তি দাও
- এস. মেহেদী হাসান - মুক্তির পয়গাম ২০-০৪-২০২৪

কবি বিমর্ষ-ব্যথিত, আপন গৃহে বন্দী।
সে মদ্যপ,মাতাল আঁধারের নেশায়-
বিলাপে মত্ত একাকী।
কবির অজান্তেই -
বন্ধ জানালায় চুপিচুপি উঁকি দেয়-
শূন্যতা... বিষাদময় এক স্বৈরাচারী পৃথিবী!
কবি লুকিয়ে যায় আঁধারে...প্রাণপণে আঁকড়ে ধরে জানালার খিড়কী।
কবি আজ নির্বাক-নিস্তব্ধ -অনুভূতিহীন জড় জনতা।
তাঁর চশমার কাচে জমেছে কয়েক যুগের ধুলো,
ধুলোর পরতে কবি দেখে ঝাপসা।
কবির সম্মুখে পড়ে থাকে-
অস্পষ্ট, বিবর্ণ মানুষের কঙ্কালসার দেহ।
কি নির্দয়,নির্লজ্জ!
চিল- শকুন -হায়েনা চেটেপুটে খায় পুষ্টিহীন হাড্ডিগুলো।
অথচ - কবি ব্যস্ত বালিকার বিরহে!
কবি কেঁদে উঠে ফুঁপিয়ে, চিৎকার করে- আসমানের সীমানা প্রাচীর ছেদ করে।
সে গুমড়ে কাঁদে,
ক্রমশ ভিজে যায় চিবুক হতে লোমশ বুক-
ধূসর লোনা জলের স্রোতে!
সে জলে অবশ হয় সমস্ত শরীর, নির্জীব হয় কলমের ঐশ্বরিক স্পর্শ।
কবি হয় প্রাণহীন-শ্বাস-প্রশ্বাসহীন,
কোনো এক অখ্যাত স্ট্যাচু।
সে মৃত, কবি মৃত!
কবি মরে গেছে - বালিকার দেহে, চোখের মোহে,
ইহ জাগতিক প্রেমে।
কবির শোকে-
এ পাড়ায় শোকের মিছিলে মাতম।
স্তব্ধতায় ঢেকে গেছে সমস্ত কোলাহল।
ফুটপাতের হকারটাও ঘুমিয়ে গেছে রাস্তায়।
বিরতিহীন ট্রেনটা মাঝপথে বাজিয়ে যাচ্ছে -বিরতির হুইসেল।
আমরণ অনশনে মেতেছে টোকাইয়ের দল।
দুষ্টু ছেলের দল দরজায় এঁটেছে খিড়কী,
লিফলেটে, ব্যানারে,ফেস্টুনে লিখছে-
কবির মান ভাঙ্গানোর গান।
এদিকে-
মন্দিরে ঢং ঢং করে বাজছে অর্চনার ঘন্টা!
গির্জায় জ্বেলেছে একশো একটি মোমের বাতি,
আর মোনাজাতে নত মসজিদের ইমাম!
শুধুই প্রার্থনা কবিকে শক্তি দাও প্রভু-
কবিকে মুক্তি দাও,
মুক্তি দাও বালিকার শরীর থেকে,অলীক মোহ থেকে, রমণের সুখ থেকে।
কবি বেঁচে উঠুক,জেগে উঠুক, গর্জে উঠুক কবির ধারালো কলম।
ফিরে আসুক কাব্যের জয়গান...কবিতা হয়ে যাক মানবজীবন।
কবি আবার লিখুক - লিখে যাক অজস্র বেঁচে থাকার কবিতা!
সুকান্ত অথবা নজরুলের শব্দে জীবন্ত হোক -জলরঙে আঁকা সাম্যের পৃথিবীটা।

মিরপুর,ঢাকা-
১১/১১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।