উদ্বাস্তু
- এস. মেহেদী হাসান - ইশ্বরের নরক যাত্রা ২৯-০৩-২০২৪

একটা দোচালা খড়ের ঘরের মাথার উপর
লাউয়ের ডগা বেড়ে উঠেছিলো অতি নির্ভরতায়,
পুই গাছগুলো উঠানের বুক জাপটে ধরে পড়েছিলো
বছরের পর বছর
অনাদরে,
পেঁপে গাছটারও ছিলো একটা নিজের ঠিকানা!
অথচ, তাদের পরিচয়দাতার কোনো নিজস্ব ঠিকানা ছিলো না,
তবে ভয় ছিলো তাদের....
ভয় ছিলো সদ্য যৌবনে পা দেয়া কন্যার কুমারীত্ব হারানোর,
ভয় ছিলো নরক থেকে বের হয়ে আসা আগুনের জিহবা
যেকোনো সময় গ্রহণ করবে তাদের শরীরের ঝলসানো মাংশের স্বাদ,
সে ভয় তাদের ঠিকানাহীন করেছিলো
একটা সুটকেস হাতে পথের সম্মুখে এসে দাঁড়িয়েছিলো একদিন,
পেছনে ফেলে এসেছিলো তার শৈশবের সবুজ স্মৃতি
নবগঙ্গায় রেখে আসা যৌবনের মাতাল সময়গুলো।
বহু পথ হেটে হেটে....
বহু সূর্যাস্তের পর...
পথে এসে থেমে গিয়েছিলো শিয়ালদহ স্টেশনে,
হাতে ছিলো সেই পুরানো
মরিচা ধরা সুটকেস.... তার কুমারী মেয়ে
আর সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী সুলেখা দেবী।
সে দাঁড়িয়ে ছিলো স্টেশনে
মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলো অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ,
কি তার পরিচয়?
কি তার ঠিকানা?
সে কে?
সে কি মানুষ? নাকি অন্যকিছু?
ধীরে ধীরে সে বুঝে গেলো
সে মানুষ ছিলো না,
ব্রিটিশ ঔরসে জন্ম নেয়া জাতিগত বিভেদের ভূখন্ড তাকে মানুষ রাখেনি,
সে আজ শুধুই এক উদ্বাস্তু.... হ্যাঁ,তার একটাই পরিচয় সে উদ্বাস্তু
মানুষ নয়,মানুষের মতোও নয়।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।