বাল্মীকি ছায়াতলে
- খায়রুজ্জামান সাদেক ২৮-০৩-২০২৪

মধ্যাহ্নভোজে কাটামণ্ডু আর কচ্ছপের ডিম নিয়ে পেট পুরে খাওয়া হল। অতিশয় দেখভাল আর মেহমানদারী শেষে রেওয়াজে মাহফিল পূর্ণ। খেমটা নাচের তালে প্রেতপুরী সম্পূর্ণ আজ। ডবকা ঊরুর তলে ঘন সন্ধ্যা সামগ্রিকভাবে দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছে। তাই সমবেত হাততালি ঢেকে দিচ্ছে কুয়াশা। একটা মলিন চাদর নিয়ে বাহিরে যে শুয়ে আছে সে এই আরণ্যক প্রাসাদের এক কর্দমাক্ত মালী। এক একটি ঋতু বিষণ্ণতা নিয়ে তার মাথার উপর দিয়ে যায়। অত্যধিক ঘুম চাহিদা ও প্রাসাদে ঘন ঘন বিস্ফোরণের জন্য বুকে অনেকগুলো টিউমার নিয়ে সে শ্রোতা হয়ে থাকে। খোরাসান অব্ধি তার পায়ে হেঁটে আসার কথা মনে হয়। রুটি শিকা উনুনে বাচ্চাদের জন্য তার বউ এখনও বসে আছে। কাজের জন্য ঘুরতে ঘুরতে জঙ্গলে ঢুকে গেলে রাক্ষস রাজের নন্দনে তার দেখা মেলে আটপৌরে এক ব্রহ্মচারীর যিনি বাগানে ফুলগুলি ফোটাচ্ছিলেন। পুরো দিন ব্যর্থ হলে রুটি সন্ধানে ব্রহ্মচারী তাকে কাজটি ধরিয়ে দিলেন। ব্রহ্মচারী মাঝেমাঝে রাক্ষস বাগানে এসে ফিরে যান। তিনি মনে করেন কোনও মৌনী কারো ধর্মে আঘাত করতে পারেনা। মাংসের উৎসবে রাক্ষস পুত্রগণ রক্তবমি করলেও তার গায়ে লাগেনা কিছু। বোঝা যায় অন্য কোনও বেতারে তিনি সুরের চর্চা করেন। প্রাসাদে যখন তাজা রক্তের হোলি চলে খেমটা নাচের উৎসবে রাক্ষস-পত্নী সখি সমভিব্যাহারে যোনী খোলে দেখায় শান্ত করে অজ্ঞেয় রাক্ষস পুত্রদের আর একটা ঠাণ্ডা ভাব চলে আসে গাছপালায় তখন রুটি চিবুতে চিবুতে এমন কতক প্রমগ্ন দুপুরকে তার মনে হয় সুসময়। অদৃশ্যের ভিতর থেকে সে তার বাগানে ফুটাতে থাকে হাজারো ফুল। সে প্রার্থনা করে রাক্ষস রাজের সকলে যেন প্রাসাদে ঘুমিয়ে কাটায় অনন্তকাল। খোরাসানের ফিরতি পথে তার চোখে পড়ে আপাদমস্তক ঢাকা সেইসব আপেল-রাঙা রমণীদের। যার একজন কোনও এক প্রার্থনা সভা থেকে তার ঘরে বউ হয়ে এসেছিল। দণ্ডমুণ্ডের ভেতর লোভনীয় সকল রেণুকা উড়ে যাচ্ছে যেন আখরোট বাগানে। রাক্ষসরাজের গৃহবন্দী উঠোন থেকে সে দেখতে পায় মাইল মাইল চিৎকার। পত্রহীন পুষ্পহীন গহীন অরণ্যানী বাল্মীকি ছায়াতলে…
২৮/০২/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।