প্রিয়ন্তি'কে
- মোঃ ওয়ালিউল ইসলাম সাকিব ২৬-০৪-২০২৪

একটুখানি জল হবে প্রিয়ন্তি?
চোখদুটোকে ভেজাব খানিক!
সেই যে কৈশোরে হারিয়ে সাইকেল,
ভুলে গিয়ে বেমালুম লজ্জার মাথা,কেঁদেছিলাম ঘন্টা খানেক।
তারপর কতকিছু ঘটে গেল জীবনে,
কাঁদিনি সামান্যও তাতে,কাঁদতে পারিনি ভীষণ চেয়েও!
বাবা যে বসে গেল হৃদরোগে ঘরে,
ছাড়তে হয়েছে পড়ালেখাটাও;
ভেঙ্গে গেছে মন কষ্টে ভীষণ,
কাঁদতে পারিনি সেদিনও আমি।
হাতে হাত রেখে বলেছিল বাবা, 'তোর মায়ের খেয়াল রাখিস';
ইস্পাত-দৃঢ় মানুষটার চোখে জল,
দেখিনি তো সেদিনের আগে।
বয়েস বেড়েছে এক টানে কয়েক দশক আমার,
দুমড়ে-মুচড়ে উঠেছে হৃদয় সহসাই,
কাঁদতে পারিনি সেদিনও আমি,কাঁদতে পারিনি ভীষণ চেয়েও!
বাবা'র বিদায় বেলা মায়ের চোখের জলে,
ভেসেছে গ্রাম,আত্মীয়-প্রতিবেশি।
ছায়াহীন বৃক্ষ হয়েছিলাম হঠাৎ করে,
মাথার উপর থেকে সরে গিয়েছিল আকাশও আমার।
ছটফট করে কয়েক প্রস্থ রাত,
কাঁদতে পারিনি তাতেও আমি,কাঁদতে পারিনি ভীষণ চেয়েও!
বছর না পেরুতেই মায়ের বিদায়,
ছোট ভাই-বোন তখন বোঝেনা কিছুই।
আপন বলতে আর কেউ ছিল না জগতে,
দুকূল ভেঙ্গে পড়েছিল মাথায়;
মা হারানোর বেদনা কেমন যে কঠিন,
ধারণাও করা যায় না সে তো!
কুঁকড়ে উঠেছে বুক দিনের পর দিন,
এক ফোঁটা জল নেই তবু চোখে হায়;
একটুখানি জল হবে প্রিয়ন্তি?
চোখদুটোকে ভেজাব খানিক!
তোমার সাথে পরিচয়েই,
ফিরে পেয়েছিলাম প্রাণ,হয়েছিল নতুন করে বেঁচে থাকার সাধ,
ভালোবেসে তোমাকেই বাঁচতে চেয়েছি হাজার বছর!
চোখের সামনেই সাতটা পাঁকে,হারিয়ে গেলে সহস্রাব্দ দূরে,
শত চেষ্টায়ও পারিনি আমি,একটুখানি ধরে রাখতে তোমায়!
কষ্টে আমার ছিড়ে আসছিল বুক,
দম নেয়াও যে কষ্ট ভীষণ ঠেকল সেদিন আমার কাছে।
মৃত্যুকষ্টে সেকি যন্ত্রণা,
মরেও আমি রইলাম বেঁচে!
কাঁদতে পারিনি সেদিনও আমি,কাঁদতে পারিনি ভীষণ চেয়েও!
চোখদুটোকে ভেজাব খানিক,
একটুখানি জল হবে প্রিয়ন্তি?
৩১-৩-২০১৮.

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।