স্মরণে বঙ্গবন্ধু (Remembering Bangabandhu)
- তপন চন্দ্র রায় (Tapan Chandra Roy) - বিন্দু ২৫-০৪-২০২৪
(Sorone Bangabandhu)
পচাত্তরের ১৫ই আগস্ট ভোররাতে
পূর্বাকাশে নয় কোন আবিরের রং, নয় কোন পাখির গান,
বাঙালি জাতির ঘুম ভেঙ্গেছিল কান্নার শব্দে আর
সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ছোপ ছোপ রক্ত।
বাড়ির প্রহরীরা সবে মাত্র বিউগল বাজিয়ে
উত্তোলন করলো জাতীয় পতাকা।
ঠিক তখনি দক্ষিণ দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ।
মুহুর্মুহ গুলির শব্দে যেন কম্পিত হচ্ছে পুরো বাংলা।
হঠাৎ কি হচ্ছে এসব, কিসের এতো গন্ডগোল?
দেখতে লুঙ্গি~ গেন্জ্ঞি পরেই দরজা খুললো বঙ্গবন্ধু।
যে দৃশ্য কখনো আসেনি কল্পনায়, তাই যেন নির্মম সত্য হয়ে এসেছে সামনে, হায়েনার দল গুলি করতে করতে এগুচ্ছে বাড়ির দিকে।
কি বিভৎস, কি নির্মম!
অভ্যর্থনা কক্ষেই পুলিশ কন্ট্রোল রুম, গণভবন এক্সচেন্জ্ঞের রিসিভার নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলতে শুরু করেন, ' আমি প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব বলছি,,,,
এটুকু বলতে না বলতেই হঠাৎ এক ঝাঁক গুলি জানালার কাঁচ ভেঙ্গে আঘাত করে দেয়ালে।
টেবিলের পাশে শুয়ে পড়েন মুজিব।
বঙ্গবন্ধু ঘরের বাইরে বেরুলে ঘিরে ধরে একদল বিপদগামী পাক হায়েনাদের প্রেতাত্মা।
সিড়ি দিয়ে নামাতে থাকে তাকে।
মুহূর্তে গুলি আর স্টেনগানের গর্জনে যেন কেঁপে ওঠে সোনার বাংলার আকাশ বাতাস।
গুলি এফোঁর ওফোঁর করে দেয় বুক।
আস্তে আস্তে ঢলে পরে নিথর দেহ।
সিড়ি বেয়ে যেন বয়ে চলে রক্তগঙ্গা।
যে মানুষটি স্বাধীনতার নতুন সূর্যদয়ে রাঙিয়ে দিয়েছে আপামর জনতাকে,
স্বপ্ন বুনেছে সোনার বাংলার,
সে স্বপ্নচারী মানুষটি মুহূর্তে শহীদ হলো নৃশংস ভাবে ।
চিরস্থায়ী হলো বাঙালির হৃদয়ের শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস।
৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১ এ যে ছিল অকুতোভয়ী, ফিরিয়ে দিয়েছে বাঙালী জাতির স্বাধীনতা,
এমন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালীকে যারা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে,
তারা মানুষ নয়, মানুষ নামের হিংস্র জানোয়ার~ হায়েনার দল।
তারা চিরতরে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছে আমাদের প্রেরণা, মুক্তির আশা। কিন্তু ভাবেনি, মুজিব শুধু একটি নাম নয় ,
মুজিব মানেই স্বাধীনতার বিমূর্ত প্রতীক, একটি নতুন ইতিহাস।
মুজিব মানেই মুক্তি সেনার দল, মুজিব মানেই চির বহমান
যে মিশে আছে প্রতিটি নিঃশ্বাসে হৃদয়ে সুমহান।
আজও বাঙালি জাতি শুনতে পায় সেই বিপ্লবী বজ্রকন্ঠের ডাক,
যে ডাকে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা, পেয়েছে মুক্তি।
আমি আজও কান পেতে শুনি,
সেই তেজালো ধ্বনি।
{29/7/2018 (11.30PM)}
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।