রজব আলীর স্বাধীনতা
- মোঃ আব্দুর রহমান ২০-০৪-২০২৪

স্কন্ধ ছেড়া একটাই জামা গায়ে মাস দেড়েক পার হয়েছে,
সপ্তাহ ধরে একবেলা খেয়েই চলছে,
অসুস্থ, বন্ধ ভ্যানের খ্যাপ।
এর আগেও রজব আলী এমন দিন পার করেছে,
একাত্তরে।
অক্টোবরের ঘটনা,
কপিলমুনি বাজারে পাক-সেনাদের ক্যাম্প
শতক কদম দূরে মনি সিং এর প্রাসাদতুল্য বাড়ী,
বিতাড়িত যুদ্ধের প্রাক্কালেই।
পাতাল ঘরে জমতে থাকে অস্ত্র, মুক্তিবাহিনী।
পাহারায় রজব আলী,
গ্রেনেড খোলার ট্রেনিং শেষ করেছে সদ্য ।
ছক কষা শেষ, ভোর রাতেই আক্রমণ, ঝোলায় পুরে গোটা কয়েক গ্রেনেড,
প্রস্তুত রজব আলী।
মাঝ রাতেই বাড়ী ঘিরে ফেলে পাক সেনারা
গোপন পথে পিছু হটে মুক্তিবাহিনী।
কমান্ডারের নির্দেশ,
থেকে যায় রজব আলী, অস্ত্র গুদাম আকড়ে, পরিত্যাক্ত কুয়ায়
গায়ে জড়ানো একটা চাদর, অল্প কিছু খাবার, কয়েক বোতল পানি।
শত্রুমুক্ত হয় কপিলমুনি, ৪ঠা নভেম্বর।
উদ্ধার করা হয় অর্ধমৃত রজব আলীকে।
স্বাধীন হয় দেশ,
মতিন খাঁ, টিফিন ক্যারিয়ারে করে পাক-সেনাদের ক্যাম্পে খাবার বইত,
আজ বড় মুক্তিযোদ্ধা।
সুরুজ মাতব্বর, একাত্তরে ছিল দুধের শিশু,
যুদ্ধের সার্টিফিকেট গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
সার্টিফিকেট পায়নি শুধু রজব আলী,
কোন ক্ষোভ নেই।
সে বলে, তার স্বীকৃতি , লাল সবুজের বাংলাদেশ।
মেঠো পথে বুক ফুলিয়ে হেটে বেড়ানো,
এটাই তার স্বাধীনতা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।