নীলখাম
- কবি মাজু ইব্রাহীম - নীলখাম ১৯-০৪-২০২৪

সেই নীল খাম
আর পড়ে থাকা তোমার ভাঙ্গা ভাঙ্গা হাতে লেখা চিঠিটা।
পড়ে আছে, আজও সযত্নে আছে।

শুধু নেই তুমি, কোথাও নেই?
নেই নীল আকাশে, মৃদু বাতাসে।
নেই ভোরের সকালে, গোধুলীর বিকেলে।
নেই নিশীর কালোতে, দিবার আলোতে।

হ্যাঁ আছে তোমার আশাময়ী নিঃশ্বাস-
বুক ভরা ভালবাসা, আর না ভোলা চির স্মৃতিগুলো-
মিশে আছে সেই নীল খামওয়ালা চিঠিতে।

চিঠিতে তোমার আদো ভাঙ্গা লেখাগুলো-
আজও কাঁটা হয়ে প্রাণে বিধে!
আর আহাজারীতে বলে ভুলনা আমায়।

কি করে! ভুলি বলো তোমায়?
আমি যে ভুলতে ভালোবাসিনী,
দুরে যাবো বলে কাছে আসিনি।

তুমি তো অজানাতে চলে গেলে,
না বলে আমায় ভুলে গেলে।

হয় তো আমিও ভুলে যেতাম শূন্যতায়-
বা কোন কালের বিবর্তনে,
কিন্তু তোমার নীল খামওয়লা চিঠিটা
তুমি হয়ে পাশে আছো!
তাই আর ভোলা হয় না।

সেই নীল খামওয়ালা চিঠিতে তুমি মিশে আছো!
আছে তোমার অনু অনু শ্বাস-
সেই চিঠিতে তোমার প্রেমের চির আবাস।

তুমি নীল খামওয়ালা চিঠিতে লিখেছিলে
একটি লাইন-
সুখে থেকো, ভালো থেকো!
হয় তো আমি সুখে আছি-
কিন্তু তুমি বিহীন ভালো নেই।

আকাশ আগের মতো ভালো লাগে না
হয় না গাওয়া গান,
জাগেনা মনেতে স্বপ্ন-আশা
ঘর সংসারের টান।

জানো আমি তোমার কাছে চলে যেতে চাই!
এ পৃথিবীর মায়া ভুলে যেতে চাই।

কিন্তু ওরা বলে আমিও চলে গেলে নাকি-
আমাদের ভালোবাসা মিথ্যা হবে,
তা কি করে মেনে নিই বলো-
আমাদের ভালোবাসা তো মিথ্যা না?
তাই চলে যাওয়া হয় না।

তবে বেশীদিন আর আমরা একা একা
থাকবো না-
আবার আমাদের শরীর বিহীন আত্নার
মিলন ঘটবে!
আবার আমরা চাঁদ দেখবো নদীর ওপারে,
আসিবে হৃদয়ে অনুভুতির ঢেউ বারে বারে।

প্রিয়তা আজ চোখে জল এসেছে-
তা তো দশ বছর ধরে এসে শুকিয়ে চলছে।

ঐ তো বাহির পানে বৃষ্টি ঝরছে-
আর তুমি বৃষ্টি রাণীর বেশে,
দু-হাত প্রসারিত করে নুপুর পায়ে নাচছো-
তোমার চুলগুলো ভেজা, বেশ অগোছালো।

ও হ্যাঁ আজকের লেখা চিঠিটাও পাঠালাম
তোমার ঠিকানায়-
যা দশ বছরের প্রতিটা দিনে লিখে পাঠিয়েছি,
তাই আজও পাঠালাম-তুমি পড়ে নিও।

জানি চিঠির উত্তর কোনদিন আসেনি-
আর কখনো আসবেনা,
তবুও উত্তরের আশায় লিখি!
আর চাতকের মতো অপেক্ষায় থাকি।

নীল খাম আর খামের ভিতরে চিঠি-
আমার জীবনের নিত্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে,
তাই সব ছেড়ে এই অংশটাই নিয়ে ভাবি-
আর তোমার স্মৃতিগুলো ঘুরে ফিরে দেখি।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।