তুমি নেই জেনে

সেই ফিরলে খাঁ খাঁ বিরাণ জনপদে
যেদিন অপ্রকাশ করে চরম সত্যটা
নীবরে চলে গিয়েছিলে,
সেদিন এক মাতাল কৃষ্ণচূড়াদিন ছিলো!
আমি ছিলাম প্রেম ছিলো!
অথচ কী অপার মোহে তুমি আমাকে কাঁদিয়ে
এক পড়ন্ত শীতের বিকেলে রুবীদের বারান্দায়
ঝলমল শেষরোদ হয়ে হেসে উঠেছিলে!
ঐ মেয়েটার পায়ের পাতায় দগদগে ঘা ছিলো
চরম মেধাহীন ছিলো সে,
আমার প্রখরমেধা কেন সেদিন হেরেছিলো তার
কাছে,
আজো আমি সেই কারণ খুজে ফিরি!
কী ছিলো না আমার?
পাড়ার বড় ভাইদের প্রেমের পাতা সাঁকো
আমি দম্ভ ভরে মাড়িয়ে গিয়েছি
বারবার নীরবে তোমার কাছে!
তুমি এমন নির্বাক-নির্মোহ থেকেছো,
এতো কাছে এতো ছুঁয়ে থেকেও এতো দূরে থেকেছো
আমি মনে মনে কী রকম মরে গিয়েছিলাম বেঁচে
থেকেও!
সত্য প্রকাশ না করে তুমি চুড়ান্ত চলে যাবার
পরেও
ফাগুনেরদিন ছিলো!
আমার বদরাগি বাবার ভয়ে মায়ের চোখে জল
ছিলো।
আমার মা বিশ্বাস করেছিলো কিছুই হয়নি সে
রাতে
অথচ পরিবারের সবাই আমাকে কেমন দেখত
লাগলো আড়চোখে।
সত্যটা আজো অপ্রকাশিত।
আমি থাকি না থাকি তাতে কিছুই যায় আসে না
এতোদিন পর।
কিন্তু তুমি ছিলে না বলে,
ভুলভালোবাসার ছুবলে আমি রক্তাক
হয়েছিলাম।
সংসার-সমাজ ছেড়েছিলাম।
তবুও কষ্ট ছিলো না আমার!
তোমার প্রতি প্রেম সেই আগেরমতোই ছিলো!
তুমি দম্ভভরে যখন অনেকদিন পর পর এলাকায় উদয় হতে
মানুষ তোমায় দেবতা ভেবে তাকিয়ে থাকতো।
আমি ছোটবোনকে নিয়ে জানলার কপাট টেনে
একচিলতে ফাঁক দিয়ে তোমাকে দেখতাম।
প্রেম এমনই এক দুর্বারটান!
তোমাকে মনে পড়ে,
যতো নিঃস্ব হও তুমি আজো আমার প্রেম।
এভাবে তোমাকে মানায় না!
তোমার এই অবেলায় প্রত্যাবর্তনের কষ্ট
তোমার প্রস্থানের কষ্টের চেয়েও আজ বেশি আমার
কাছে!
জীবনের বীজ বপনের শুরুতে
সাদাগেঞ্জিতে ভুল ভালোবাসার রক্তচিহ্নের
কাছে,
আমি নিজেকে কোরবানি দিয়েছিলাম
শুধু তুমি নেই জেনে।