ঈশ্বর আছেন
- সুলেখা শামুক - মুক্তচিন্তা ব্লগ তারিখঃ 02/04/2019 06:42 AM ২০-০৪-২০২৪
প্রথম যখন একজন মানুষ পুড়লো
আমি তখন আগুনের দিকে তাকালাম,
দেখলাম আগুন তার স্বভাবজাত ধর্ম মেনে
আকাশের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো।
যখন দ্বিতীয় মানুষটি পুড়লো
আমি তখন আগুনের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলাম,
আর যেন একটা জীবনেরোও ক্ষয় না হয়।
আগুন সহজাতভাবে নিজের দাম্ভিকতা প্রকাশ করে
ধোঁয়া আর লেলিহান শিখা ছড়িয়ে দিতে দিতে
চারপাশ আচ্ছন্ন করে দিলো।
তখন তীতৃয় মানুষটি পুড়লো
আমি আগুনকে থামানোর জন্য দোয়া দরুদপাঠ করতে করতে জায়নামাজে প্রার্থনারত হলাম।
আমার প্রার্থনাবাক্য অগ্রাহ্য করে আগুন যখন সবকিছুকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে দিতে
ক্রামগত সামনের দিকে ধাবমান হতে লাগলো
আমি তখন মসজিদ,মন্দির,প্যাগোডায় ছুটোছুটি করতে লাগলাম।
আমি প্রথম মসজিদে গিয়ে দেখলাম দরোজায় বিশাল তালা ঝুলছে,
আল্লাহ তখন ভাতঘুমে।
মন্দির, প্যাগোডায় গিয়ে দেখলাম একই অবস্থা
ইশ্বর,ভগবানেরোও একই অবস্থা।
তিনজনই বেঘুরে ঘুমে।
আমার ডাক সেই অসীম শ্রাব্যতার সীমাভেদ করে
না গেলো ঈশ্বরের কাছে,
না গেলো ভগবানের কাছে,
না গেলো আল্লাহর কাছে।
আমি হন্তদন্ত এদিক ওদিক ছুটতে ছুটতে যখন দিশেহারা মৃতপ্রায়;
তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
এক ঈশ্বর প্রজ্জ্বলিত অগ্নিরথ অতিক্রম করে
এক অভিশপ্ত মামুলি নারীকে কাঁধে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে
পৃথিবীর পথে হেঁটে আসছেন!
আমি মাটির দিকে তাকিয়ে দেখি
এক ঈশ্বর জীবনের সবশক্তি সঞ্চয় করে
মানুষের পায়ের কাছে বসে আছেন
অগ্নিনির্বাপক শীতল জল হয়ে।
কে বলে ঈশ্বর নেই?
ঈশ্বর আছেন,
মানুষের মাঝেই ঈশ্বর আছেন।
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।