সুদীপ্ত জ্বলে উঠতে পারেনি
- KAJAL DAS - অপ্রকাশিত ২৩-০৪-২০২৪

সুদীপ্ত জ্বলে উঠতে পারেনি
কাজল দাস

সুদীপ্ত জ্বলে উঠতে পারেনি!
সুদীপ্ত জ্বলে উঠতে চেয়েছিল।
যেভাবে অন্ধকারে মশাল জ্বলে ওঠে,
যেভাবে কালের তমসা ছিঁড়ে সূর্য জ্বলে ওঠে।
সেই ভাবেই জ্বলে উঠতে চেয়েছিল!
কিন্তু জ্বলে উঠতে পারেনি।

মাঠের এক কোণায় বসে-
অস্ত যাওয়া রক্তিমতার দিকে চেয়ে,
কোথায় যেন হারিয়ে যেত সে,
কপালের ভাঁজে বিপর্যয়ের শঙ্কা,
বুকে অভুক্ত মানুষের আর্তনাদ,
মুখে অম্লান হাসি।
আমার রক্তে আগুন ছুঁয়ে যেত সেই হাসি।
- চ সূর্য ডুবলো।
ও বলতো- “আগামীর জন্য প্রস্তুত হও, সূর্য-
তোমাকে যে ফিরতেই হবে।”

সারারাত ঘুম নেই চোখে।
ঘাড় গুঁজে কলম চলতো কাগজের বুকে,
দেখতে চেয়েছি বহুবার!
হাসতে হাসতে বলতো- “এ আমার ছাই চাপা আগুন, যদি বেরিয়ে পড়ে, ছারখার করে দেবে ঘুমন্ত সমাজ।”
অদ্ভুত দুটি চোখ জ্বল জ্বল করে উঠতো।
অথচ সে জ্বলে উঠতে পারেনি।

তারপর একদিন রাস্তায় পা রাখলো-
ভিতরে ছিল বদলে দেবার স্বপ্ন।
যে স্বপ্ন আর কেউ দেখে না, আর যারা দেখে-
তারা যে ঘুমোতে পারেনা।
সমাজটাকে বদলে দেবার স্বপ্ন,
শ্রমিকের…., কৃষকের….. ক্ষুধার্ত মানুষের স্বপ্ন।
চেয়েছিল ঘৃণ‍্য সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে,
তুলে নিতে চেয়েছিল হাতে গান্ডীব।
ভেসে যেতে চেয়েছিল জনসমুদ্রে কোলাহলে,
না পাওয়ার বুকে বনস্পতির ছায়া হয়ে উঠতে।

কিন্তু জ্বলে উঠতে পারেনি।
কারা যেন ঝড় তুলেছিল, জ্বলে উঠতে দেয়নি।
জ্বলে উঠলে যে- আর নেভানো যাবে না,
পুড়িয়ে ফেলবে গোটা সমাজটাকে,
ছাই করে দেবে আগাছার রাজসভা।
তাই তাকে নিভে যেতে হয়েছিল-

কিন্তু শেষবারের মতো সে জ্বলে উঠেছিল,
সেদিন গোধূলির সূর্য দেখা আর হয়নি।
শুধু শত শত মোমবাতি জ্বলে ছিল-

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।