কবিতা চোর - (প্রথম খণ্ড)
- Md Shamim Pramanik (Nimu) - গল্প ২৫-০৪-২০২৪

(প্রথম খণ্ড)
এই সেই দোতলার বিল্ডিং, উপর ও নিচতলা মিলে এখানে ছোট ছোট রুম আছে চল্লিশটি৷ দুইটি রুমের সাথে এটাস্ট একটি করে টয়লেট করা আছে৷ পুরো বিল্ডিংটায় রান্নার ঘর ছিল মাত্র আটটি৷ রুমের সামনের দিকে তৈরি করা ছিল মোটামুটি বড় ধরনের একটি বারান্দার৷ বিল্ডিংটার এক সাইট দিয়ে লোকজন ওঠা নামা করবার জন্য তৈরি করা হয়েছিল ঘুরান্ত টাইপের সুন্দর একটি ধাপ৷ সত্যিই পুরো বিল্ডিং টা খুব সুন্দর ডিজাইনে তৈরি হয়েছে৷

এই বিল্ডিংটির সৌন্দর্য দেখার জন্য এখানে অনেকেই লোকজনেরা এসে ভীড় জমিয়ে থাকতো৷ কখনও কখনও দূর শহর থেকেও বহু জাতীয় লোকেরাও এসে এখানে জমা হত৷ তারা হয়তো কেউ কেউ সারাদিন ঘোরাফেরা করার পর রাত হলে থাকার স্থানটি কোথাও না পেয়ে এই বিল্ডিংটিতেই আশ্রয় নিয়ে থাকতো৷ সবাই যার যার মত ক্ষণিকের জন্য আসতেন এবং কেউ কেউ সকাল হলেই সেখান থেকে চলেও যেতেন৷

আবার কেউবা অতিথি হয়ে এখানে থেকেও যেতেন- দুই তিন দিনের জন্য৷ তবে এখনও সেই পরিবেশটা পুরোপুরি চালু করা হয়নি- যেমনটি প্রতিনিয়তই লোকজনেরা তাদের সুবিধা মত সেখানে বসবাস করতে পারেন৷ দক্ষ কাজের লোকের অভাবে কিছু কিছু বিভিন্ন কাজও এখনও বাকি রয়ে গেছে৷ তাছাড়া তেমনি কর্মঠ লোকের জন্য বিল্ডিংটি খুব তারাতারি সম্পন্ন করাটিও অসম্ভব হয়ে পরছে৷ এখনও কাজ চলছে তবে খুব ধিরেধিরে৷ হয়তোবা গল্পটির আলোচনায় কেউবা কেউ মনেমনে ভাবছেন- এটি আবার কেমন বিল্ডিং হবে?
হ্যা এটিই হলো সেই বিল্ডিং-
যে বিল্ডিংটির নমুনায় আমরা মনেকরে থাকি- এরকম একটি বিল্ডিং তো আবাসিকের মতই হয়ে থাকে!
সত্যিই তাই, তবে এটি অন্য সব আবাসিক হোটেল গুলির মত নয় বরং এটি একটু অন্যরকম আবাসিক হোটেল৷

এত বড় এই বিল্ডিংটি জুড়ে বেশ কিছুদিন ধরে শুধু মাত্র আমি নিজে একাই দিবারাত্রি গুলি অতিবাহিত করে যাচ্ছি৷ এখানে আমি দিনের বেলায় কাজে ব্যস্ত থাকি এবং রাত হলে একাকীত্ত্বে জেগে রই!
এখানে ইলেক্ট্রিসিটির কাজটিও বাকি রয়ে গেছে৷ এখানকার ইলেক্ট্রিসিটির অফিস থেকে এখনও বিল্ডিংটিতে মেইন লাইনটির সংযোগ দেওয়া হয়নি৷ তবে এই বিল্ডিং থেকে প্রায় দুইশত গজ্ দূরে একটি অন্যের ঘর থেকে সাধারণ ইলেক্ট্রিক্যাল 'তার' তা দ্বারা টেনে নেওয়া হয়েছিল শুধু মাত্র আপাততঃ কোন রকম বিল্ডিংটির কিছু প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেবার জন্য৷ সন্ধ্যার পর অন্ধকার ঘনিয়ে আসলেই পুরো বিল্ডিংটায় শুধু মাত্র একটি টিউব লাইট জ্বালিয়ে রাখা হত৷ এবং রাতে আমি এই বিল্ডিংটির উপর তলায় একটি রুমের ফ্লোর টাইলস্এর উপর শুয়ে পরতাম!

আমি যে রুমটায় থাকতাম- সেই রুমের টিউব লাইটটি সারারাত জ্বালিয়েই রেখে দিতাম৷ কখনও কোনো সময় যদি টিউব লাইটটির আলো বন্ধ করে ঘুমানোর জন্য শুয়ে পরতাম- তবে সেদিন হয়তো আমার ঘুমটিও চোখে আসতো না, তার কারনটি ছিল- সেই বিল্ডিংয়ে ফ্লোরের উপর টাইলস্- এর জোড়ার ফাঁকে চুপিয়ে ঘুমে থাকতো অসংখ্য ছাড়পোঁকার দল৷
যদি কখনও কোনো দিন ভুল করে রুমের টিউব লাইটটি বন্ধ করে দিয়েছিলামও- তখন সে রাতে টাইলস্এর জোড়া টানা ফাঁক থেকে ঘুমিয়ে থাকা ছাড়পোঁকা গুলি জেগে উঠে পরতো৷ এরপর তারা পুরো রুমটি অন্ধকার পেয়ে দলবেধে আমার শরিরের নিচে এসে কুট কুট করে রক্ত চুষে খাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পরতো!

হয়তো আপনারা সবাই আমার এই কথা গুলি শুনে একটু হলেও হাসছেন! তবে যাহাই সত্য ছিল- আমি তাহাই তদ্রূপ সত্যতা লিখে তুলে ধরেছি মাত্র৷
ছাড়পোঁকা প্রতিটা মানুষের রক্ত পান করাকে তাদের প্রিয় খাবার মনে করে থাকে, হয়তো আমার ধারনায় তেমনটিও হতে পারে?
এই মারাত্মক যন্ত্রণা থেকে বাঁচার একটাই উপায় খুঁজে নেওয়ার পদ্ধতি ছিল আমার তাহা হলো- পুরো রুমটিকে সারারাত আলোকিত করে রেখে দেওয়া৷ যদিও আমার সেই আলোকিত রুমে মোটেও চোখে ঘুম আসতো না- এরপরেও ছাড়পোঁকা থেকে বাঁচবার এই একটাই ভাল উপায় ছিল! এরপর হাতের মোবাইলটা চাপতে চাপতে কোনো একটা সময় ভোর চারটে অথবা পাঁচটা বাজানোর আগেই অনেক ক্ল্যান্তিতে চোখে ঘুম অমনি চলে এসে যেত৷ তারপর যদিও সেই ঘুমের মধ্যে ছাড়পোঁকা গুলি এসে আমার শরিরের রক্ত চুষে নিতো- তবে তখন আমি ঘুমের নেশায় তাহার একটুও অনুভব করতে পারতাম না৷

এই বিল্ডিং-এর সাথে লাগানো কাহারও এমন কোনো একটি ব্যক্তির ঘরও ছিল না৷ কিছু ঘর ছিল- তবে তা অনেক দূরে৷ এর আগেও বলেছিলাম_ সেগুলি ঘর এখান থেকে প্রায় দুইশত গজ্ দূরে৷
বিল্ডিং-এর খানেক দূরে দাঁড়িয়ে আছে ছোট বড় কালো কালো পাথরের আট দশটি বিশাল বিশাল পাহাড়৷ পাহাড় গুলির উচ্চতা সম্পর্কে এখানকার লোকজনেরা কেহই বলতে পারতেন না! তবে আনুমানিক সুত্রে তাদের ধারনা অনুযায়ী বলা যেতে পারে- একেকটি পাহাড় সাতশত ফুট অথবা অন্যন্য পাহাড় গুলির তুলনায় কয়েক শত ফুটের চেয়েও অধিক বেশি হতে পারে৷

তবে এই বিশাল পাহাড় গুলির নির্ধারিত সঠিক মাপটি আদৌ কাহারও জানা আছে কিনা তাহাও কেউ বলেতে পারেন না! আর এসব কথা এখানকার স্থায়ী লোকেরাই একের পর একজন এরকম তথ্যের কথা বলে আসছেন! এই পাহাড়ের গায়ে দেখা যেত শতশত গর্ত৷ সেই একেকটি গর্ত থেকে অনেক সময় বাহির হতেও দেখা গিয়েছিল- জেগে থাকা সাপ,বিচ্ছু সহ নানা প্রজাতির ইত্যাদি ধরনের ভয়ংকর ভয়ংকর প্রাণী৷ সন্ধ্যা হলেই শিয়াল,কুকুর গুলি পাহাড়ের চূড়ায় এসে দল বেধে হাজির হয়ে যেত৷ এবং এরা বিভিন্ন শব্দে চেঁচামেচি করে দূর এলাকার মানুষদের দেহ মন আতঙ্কে তোলপাড় করে দিত৷ যখন রাত গভীর হয়ে আসতো তখন হাজারও গাদার ডাকে অনেকের ঘুম হারাম করিয়ে দিত৷ ঘোর ঘুমের রাতে গাদার ডাক শুনতে পেলে আমারও অনেক সময় কখনও কখনও মনের ভিতর ভীষণ আতঙ্কের ভাব সৃষ্টি করেছিল৷ এরপরেও আমি সেগুলির একেকটা ভয়ংকর ডাকের শব্দ- মনের গহীনে তাহা সহ্য করার ক্ষমতা ধরে রেখেছিলাম!

আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে মাইল খানিক দূরে- একটু কাছে গেলেই ঢেউ তরঙ্গের আওয়াজ শোনা যেত- সে আওয়াজটা কানে পরলে মনে হত কেউ হয়তো ঢাক ঢোল পিটাচ্ছে, অথচ সেই বাজনা ছিল অথৈ এক বিশাল সাগরের৷ বিশাল ঐ অথই সাগরের কিনারায় গিয়ে অন্য পাশের সিমানায় চোখ স্থির করিলে দেখা যেত- শুধু কুয়াশা আর কুয়াশায় সব কিছু অদৃশ্য হয়ে পরে আছে৷ এই সাগরের উপকূল ভূমিতে ভিন্ন ভিন্ন দেশের বহু লোকজন এসে ভীড় জমিয়ে থাকতো৷ আনন্দ উপভোগ করাই ছিল তাদের প্রধানত সখ্৷

কেউ কেউ ছোট বড় উঁচু নিচু পাহাড়ের খণ্ড গুলিতে বসিয়া মাছ শিকারির জন্য বঁড়শি ফেলিবার নানান দৃশ্য গুলিও তাদের মধ্যে দেখা যেত৷ সেই বঁড়শি হতে তাহারা বিভিন্ন বহু প্রজাতির মাছ শিকার করে থাকতো৷ আবার সেখানে বসে ওদের আগে থেকেই সংগ্রহ করা কাঠ খড়িতে আগুন জ্বালিয়ে কয়লায় রূপান্তরিত করে উহার উপর মাছ গুলিকে রেখে তা পুড়িয়ে অনেক মজা করে খেয়ে থাকেন৷ সেই মাছগুলি পুড়িয়ে খাওয়ার ভিন্ন স্বাদ উল্লাসের ভঙ্গিমাটিও তাদের মধ্যে প্রকাশ্য দেখতে পাওয়া যেত৷

মাছ পোড়া খাওয়া শেষ হয়ে গেলে কেউ কেউ সাগরে সাঁতার কাটতে নেমে পরতেন, কেউবা সাঁতার কাটতে অসম্ভব ভয়ও করতেন৷ এরপরে সন্ধ্যা লাগার আগেই তারা তাদের সেখানকার সম্পূর্ণ জিনিসপত্র গুলি গুছিয়ে নিয়ে ওখান থেকে স্থান পরিত্যাগ করে থাকেন৷ কেননা সন্ধ্যার পর পরেই সাগরের জোয়ারটা খুব বেশি বেড়ে গিয়ে কিনারায় এসে হাজির হয়ে যেত৷ কখনও কখনও সেই সময়টায় দেখা যেত চারিধারে বিভিন্ন বিপদের লক্ষণ! এই অদ্ভুত সাগরের উপকূল ভূমিটিতে আমিও মাঝেমধ্যে ঘুরতে আসি এবং খুব ভাল লাগতো বলে আজও এখানে এসেছি৷

এখানকার শীতল হাওয়া আর সাগরের শো শো উলট পালট ঢেউ তরঙ্গের আওয়াজটা কানে পরলে যেন- আমার মনের সমস্ত দুঃখ গুলি ওরাই এসে কেড়ে নিয়ে যেত৷
আজকেও কাজের চাপটা এতটাই বেশি ছিল যে এখানে আসবো ভেবেই আজকের রাতের খাবারটি ব্যবস্থা পর্যন্ত করতে পারিনি৷
তবে, না খেয়ে ছিলাম না! রুমে কিছু বিস্কুট আর কলা ছিল- সেখান থেকে ফিরে এসে ওগুলি রাতে খেয়ে নিয়েছিলাম৷ সারাদিন অনেক পরিশ্রম আর ঘোরাঘুরি করার কারনে সর্ব শরিরে প্রচুর ব্যথা অনুভব করেছিলাম- তাই বেশি একটা দেরি না করে খুব তারাতারি ফ্লোরে শুয়ে পরেছিলাম৷ পূর্বের অতীত নিয়মের মতই মাথার বালিশটা আমার বুকের নিচে দিয়ে চিৎ হয়ে শুয়েছিলাম৷ এরপর বালিশের পাশেই রাখা একটা কলম আর ফেলে রাখা পুরোনো ডায়েরীটা হাতে নিয়েছিলাম৷

এবার সুক্ষ্ম ধ্যান মস্তিষ্কে লিখতে শুরু করেছিলাম- তোমাকে নিয়ে লেখা নতুন একটি কবিতা৷ সেদিন অতীতের একটি কবিতার লাইন পড়ে তুমিও অনেক হা..হা...করে হেসেছিলে! আজকেও অনুরূপ তেমনি একটি নতুন কবিতা এই সময়ের মধ্যেই দশ লাইন লেখার শেষভাগে এসে পৌঁছেছিলাম৷ কিন্তু হঠাৎলেখার মাঝখানে এসে থেমে গিয়েছিল তোমার কথা ভেবে! পরে ভাবলাম- তোমাকে তো আজ ফোনও করা হয়নি! এর জন্য সত্যিই আমি তোমার নিকট দুঃখ প্রকাশ করছি! ভুল হয়ে গেছে আমার- আজকের জন্য ক্ষমা করে দিও আমায়?

আমি ফোন দেবো ভেবে ঠিক একটু আগেই ঐ সময়ে তুমি আমার ফোনে- তোমার মনের কিছু বাক্য লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলে! তোমার সেই পাঠানো বাক্যটি পড়ে আমি একা একা একটু মুচকি হেসেছিলাম৷ বাক্যটি সম্পূর্ণ পড়ে বুঝতে পেরেছিলাম- তুমি আমার উপর অনেক রেগে ক্ষীপ্ত হয়ে আছ! সত্যিই তো রেগে থাকারই কথা- যে ব্যক্তি তোমায় দিনে তিন চার বার ফোন করতো, আর আজ সে কিনা আজ সারাদিন একবারও তোমায় ফোন করেনি! আমার হৃদয়ের ধৈর্যকে আর মানাতে পাচ্ছিলাম না, তাই বাধ্য হয়ে কবিতাটির লেখার শেষ ভাগটা রেখে দিয়েছিলাম! ভেবে নিয়েছিলাম- আগে তোমার মনের রাগ অভিমানটি ভাঙায়- তারপর না হয় কবিতার বাকি শেষ অংশটুকু লিখবো!

ফোন রিসিভ করেই তুমি বকাবকা করেছিলে- তোমার মুখে যত কথা এসেছিল এবং যত্তসব অশ্লীল ভাষায়৷ আমি আর-যাহাই করিনা কেন সারাক্ষন আমার এই ছোট্ট বুক পাঁজরটায় সত্যিই তোমায় যথেষ্ট যত্নে বেঁধে রেখেছি!
হ্যা, তুমিও ঠিক তেমনি তোমার জীবনের চেয়েও আমায় অধিক ভালবাস- যাহার বিবরণ গুলি এখানে দেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভাব্যে বিবেচিত হবে বলে আমি মনে করছি৷

হ্যা আমি তোমার মনের মত করে প্রকাশ্যে তোমাকে নিয়ে ভাবতে পারিনি সত্যিই- আর এটাই ছিল আমার সব থেকে হৃদয়ের দুর্বলতা! অথচ সেই সুত্র ধরেই মনের ভিতর বারবার বিকট আকারে এক একটি করে ধাক্কা মেরে থাকে- যাহা শুধু আমার হৃদয়ের ঈশ্বরটাই জানে! হয়তোবা তুমি বুঝতে পার না- সেই ধাক্কার প্রতিটি ধাপ ছিল শুধু তোমার জন্য! তুমি আমায় নিয়ে তোমার হৃদয়ের ভিতর বিভিন্ন কল্পনায় ভেবে নিয়েছিল ভিন্ন ভিন্ন রুপে! তুমি হয়তোবা এও জানতে না- যখন তোমার কথা বলার উল্টো পীঠটা একটু ঘুরে বসেছিল ওমনি আমি সেই সময়ে ফোনের লাইনটি কেটে দিয়েছিলাম!
তারপর একটু পরেই নিজেকে শান্তনা দিয়ে তোমার সেই সব বাজে অহেতুক কথা গুলি ধিরেধিরে মস্তিষ্ক থেকে ও মনের ভিতর থেকে কুড়িয়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতাম বহুদূরে! আবারও লেখতে শুরু করেছিলাম ঐ ভাঙা কবিতাটির লাইন ধরে৷

যদি কোন সময় কখনও কোন ক্ষেত্রে একটি কবিতা বা গল্প লেখার মধ্যে কোন বস্তু বা অন্য কোন ভাবনা কিংবা এমন কেউ ব্যক্তি এসে বাঁধা সৃষ্টি করে থাকেন- তবে সেই কবিতার মুল ভাবটি- অনুরূপ ধ্যান মস্তিষ্কে কখনই ফিরে চলে আসে না! যদিও ফিরে আসে তবে- সেটাতে বরং সেই কবিতা গল্পটির প্রতিটা লাইন গুলি এলোমেলো করে দেয়! যেমনটি একটু আগে আমার বেলাতেও হয়েছিল৷
তারপরেও অনেক কষ্টেই সেই কবিতার সর্বশেষ লাইনটা সমাপ্ত করার চেষ্টাও করেছিলাম৷ আর এই কবিতাটি লেখার সময় আজও তাহাই হয়েছিল৷

তোমাকেই বলছি শোনো-? যেকথা গুলি তোমায় বহুদিন ধরে বলতে পারিনি! আজ বলি শুনিও- আমার হৃদয়ে কান পেতে শোনো-
আমি তো কোনদিন এমন কোনো শিরোনামের বিখ্যাত কেউ হতে চাইনি? দু'টি মাত্র 'তাঁরা' আর একটি হলে তুমি রাতের 'জোস্না'- এটাই ভেবে আজও আমি সেই পথেরই পথিক হয়ে আছি? তোমারই স্পর্শ ছাড়া- আমার এই মগ্ন দেহ অন্য কোথাও থাকেনা- তবুও কেন বুঝিবার তোমার এত কষ্ট? তোমাকে ছাড়া তো অন্য কোনো ভাবনা- নেই আমার কোনো সাধনা? আমি তো শুধু জানি, এখনও জেনেও আসছি- তুমিই তো আমার সুখ সাগরের কূল কিনারা?
যে ব্যক্তিটি তোমায় নিয়ে অনেক নগ্ন পদের বাঁধা পেরিয়ে- আজও প্রতিক্ষণে ভাবে তোমায় নিয়ে- সেটি-ও কি- জানে না তোমার হৃদয়ে? আমি তো জানি,শুনি-? এবং পূর্বেও জানিতাম-? তুমি ছিলে অবুঝের রত্ন এবং আজও তাই অবুঝের রত্নই থেকে গেলে! শুধু অবুঝের মত আমিও ভীষণ ভালবাসি তোমাকে৷

বিশ্বাস কর- আর- নাহিবা কর- তোমার জন্য আমি- শুধু একটু সুখ শান্তি দেবারই বিখ্যাত হতে চাই! এখনও তাহাই বিখ্যাত হবার অপেক্ষায়- তোমায় ঘিরে আজও দ্রুত বেগে কবিতাই লিখে চলছি! আরও লিখবো- যতটা না হয় তুমি বাড়ন ও ঘৃণা কর? তারপরেও লিখে যাব! বন্ধ করিবো না আমি কবিতা লেখা- যতদিন তোমারই ভাবনা- আমারই অন্তরে লুকিয়ে থাকিবে! ইতিপূর্বেও ছুটেছিলাম তোমার পিছুটানে- এখনও ছুটে চলছি দুর্গম- তোমারই হৃদয় পাইবার গন্ধে! তুমি কি জেনেছো-? কেমনে তোমায় আমি কতটা ভালবাসি? একদিন দেখিও তুমিও ঠিক আমায়- তোমার নরম রেখা হাতে- দু'মুঠো বিখ্যাত সুখের বিজয়ী পদক তুলে দিবে- শূন্যতার এই শীতল বুক পাঁজরে! সেদিনই, হ্যা গো- সেদিনই হবো আমি- মহাধন্য! হয়তো ধন্যের খুশিতে হাসবো আমি, চুপিচুপি! কাঁদবে শুধু তুমি আমার- কবিতা পড়ে.!!

________
চলবে....

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।