রিফিউজি
- রূপক বিশ্বাস ২৫-০৪-২০২৪

সেদিন 1971 - এর পূর্ব বাংলা
শস্য শ্যামলা গোধূলি বেলা দেখা গেল এক বিস্ময় দাঙ্গা!
মরন্তরের এক দুর্ধর্ষ পথ অতিক্রম ব্যস্ততা বহুল
সমাজের অনুকূল।
পথে-ঘাটে-মাঠে তরুণেরা উদ্যমতার সাথে
দৌড়ে পালাতে লাগে জীবন বাঁচাতে।
চারিদিকে হাহাকার কান্নার ক্লেশ
এই তো রিফিউজিদের হটানোর উপদেশ।
করেছে প্রহার, করেছি সংহার
তবুও হতে দেইনি ঐ মাথানত কেবলমাত্র ঐক্যতার জোরে।

সেদিন হাজার-হাজার মায়ের কোল শূন্য করেছিল ঐ মুসলমানী ফিরিঙ্গিরা,
সেদিন হাজার হাজার শিশুর আর্তনাদ আড়াল করেছিল ঐ বিষন্নমুখী মায়েরা,
সেদিন দুগ্ধ শিশুরা শব্দহীন কন্ঠে মায়ের আঁচলের তলে মাথানত করে কাঁপিতে ছিল ভয়ে।

দেখা দিয়েছিল বিপ্লবের এক অগ্নিশিখা প্রত্যেকের ঘরে ঘরে -
দেখা দিয়েছিল প্রত্যেকের ঘরে-ঘরে জ্বলন্ত আগুনে ভষ্মীভূত আধপুড়া দেহ -
দেখা দিয়েছিল মৃত্যুর আঁপছা-আঁপছা তান
যা ছিল কুজ্ঝটিকায় সমাবেশ।

শোনা গিয়েছিল ঐ যুবতী নারীর ধর্ষণের চিৎকার
যা ছিল মেনে নেওয়া কঠিন!
শোনা গিয়েছিল ঐ পথ ভ্রান্ত লোকের কোলাহল
যা ছিল বিদ্রোহের আগমন
শোনা গিয়েছিল ঐ কাল রাত্রির নিশির ডাক
যা ছিল অজস্র বন্দুক, তরোয়াল, মৃত্যু বর্ষণের ঝংকার।

গঙ্গা নদীর জলের স্রোতে রক্তের রং লোহিত হতে
কত না হারিয়েছিল প্রাণ,
ঐ দস্যুদের কাছে কেবল চেয়েছিল একটু মাত্র ত্রাণ।
গভীর বুক কষ্ট নিয়ে-
এসেছিল তাঁরা এ পারে
বাঁচার অনুকূলে বাংলা বিভাজনের ফলে।
বসত বাড়ি, জমি যায়গা, ভিটেমাটি ছেড়ে
মাত্র দু-তিন টি গাভী নিয়ে পার হয়েছিল এই গঙ্গার তীরে, বাংলা মাটির তরে।
মানবের ভীড়ে কষ্ট সহ্য করে
হারিয়ে ছিল কত না আবেগ, হারিয়ে ছিল কত না আত্নপরিচয়.....
কেবল মাত্র জুটাতে পেরেছিল ঐ রিফিউজি নামের সঞ্চয়।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।