পোড়োবাড়ির পুরনো গল্প
- মাহমুদ রিয়াদ পলাশ - শেষ শ্রাবণের গল্প ২৪-০৪-২০২৪

ওদের বাড়ির জানালা
ভাংগা ছিলো,
কড়ি কাঠ খুলে ঝুলেছিলো,
মনে হতো মরা দাঁড়কাক,
পুরোনো,
কালো ওড়নার মতো,
বাতাসে দুলতো, খেতো ঘুরপাক।
তার ঠিক নিচে
শুভ্র কামিনীরা অবিরত
প্রজাপতির নীল পুত্রদের
কুমারিত্ব পান করাতো।

পনেরো ছুঁই ছুঁই এক কিশোরী বট
বর্ষার কুর্ণিশ গ্রহণ করে
প্রতিদিন দাঁড়াতো
জানালায়,
সবুজ মাথা দুলিয়ে পাখিদের সাথে
গল্পের ছলে
দেখতো আমায়,
আমি তার প্রেমে পড়েছিলাম,
প্রেম পত্র লিখেছিলাম
তার নামে, শুকনো পাতার খামে।

ওদের বাড়ির ছাদের কয়েকটা টালি
এক স্বার্থপর আগুন্তুকের সাথে
পালিয়ে গিয়েছিল
ভরা চাঁদের রাতে
আমি তার উল্লাস দেখেছিলাম,
রাত না শেষ হতে হতেই
এতো নিবিড় ছুঁয়েছিলাম
তবুও আমাকে সাড়া দেয়নি সে,
আমার প্রেম পত্র
উইপোকার পাখা হয়ে উড়েছিল
নিশব্দে, বেনামে।

প্রেম কতো নাছোড়বান্দা হয়
সে জানতো না
শুধু জানতো উচ্ছাস ভরা
তার প্রতিটি পাতায়
আমি আমার নাম লিখেছিলাম,
গোপনে, মধ্যরাতে।
উঠানের অগুনতি ঘাসের সাথে
আমার সখ্যতা
সকালের কোমল রোদে শুকাতে শুকাতে
প্রতিদিন প্রসব করেছে জরাগ্রস্ত সন্ধ্যা
আমাকে জড়িয়েছে
নতুন অলকানন্দা,
তবু কি কেউ আমাকে
পেরেছে ফেরাতে?

কৈশোরের প্রেমিকা
পোড়োবাড়ির ইটকাঠের স্তুপের ওপর
চিরদিন বসে রয়,
কচিবটের পাতার মতো
শ্রাবনের শেষে প্রতিবার রজঃস্বলা হয়।
আমি প্রতিদিন তাকে দেখি
প্রতিবার নতুন শিরোনামে প্রেমপত্র লিখি।।

#মাহমুদ_রিয়াদ_পলাশ
সেপ্টেম্বর ২০১৯।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।