অকৃতজ্ঞ
- শেখ রবজেল হোসেন ২৫-০৪-২০২৪

ছেলেবেলায় একবার অনেক মন খারাপ হয়েছিলো,
আমার প্রিয় ছাগলের বাচ্চাটা মরে গিয়েছিলো বলে।
আর কেউ কাঁদেনি সেদিন শুধু আমিই কেঁদেছিলাম,
বাড়ির পার্শ্বে মাটির গর্তে ওকে কবর দিয়েছিলাম।
ওর মৃত্যুতে বড়রা কষ্ট পেয়েছিলো ঠিকই তবে ভুলতে দেরি হয়নি,
কারন ছাগল ছানাটা বেশী বড় হতে পারেনি তখনও।
কিছুদিন পর ওর মায়ের ভীষণ অসুখ করেছিলো,
প্রায় মরা মরা অবস্থায় কসাইকে ডেকে আনা হলো।
কসাই ঠিক সময়েই ওকে অর্ধমৃত অবস্থায় জবাই করে দিলো,
বাড়ির সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো শেষমেশ ওটা হালাল করতে পেরে।
আমার ভীষণ কষ্ট হয়েছিলো সেদিন মা ছাগলটার পরিনতিতে,
নিশ্চয়ই ওটা কয়েক জোড়া বাচ্চাও দিয়েছিলো এতোদিনে!
ওর দুধ পান করেও বড় হয়েছিলো আমার মত অনুজরা,
তার এই দানের বিনিময়ে ওকে মরে যেতে দিইনি আমরা।
মৃত্যুর সময় ধারালো ছুরিটা বসিয়ে দিয়েছি ওর কন্ঠনালীতে,
ওর রোগ কষ্ট সব ভুলিয়ে দিয়ে টুকরো টুকরো করেছি দেহখানি।
তারপর ঝাল মশলা দিয়ে ভুনা করে তুলেছি আপন পাতে,
কুড়কুড়ে হাড্ডিখানি বেছে নিয়ে পিষেছি শক্ত মাড়ীর নীচে।
জানি সেদিন সে সময় ওর গলায় ছুরি না বসালে আফসোস হতো,
ওর আগের সব প্রতিদান ভুলে গিয়ে সবাই ওকে ঘৃনায় ডুবাতো।
মানুষ সহজেই ভুলে যায় প্রাপ্তি, সারাক্ষণ ব্যস্ত না পাওয়ার হিসাবে,
তাইতো এতো হানাহানি অশান্তি পৃথিবীর বুকে বিরাজমান।
আদিবাসীর মত অসভ্য হতে আর দেরী নেই সভ্য সমাজের,
অক্ষম বাবা মাকে যেমন খেয়ে ক্ষুধা মেটে অকৃতজ্ঞ জংলী সন্তানের।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।