আমি সাঁতারু হব, আপনি জলকন্যা- ১
- বায়েজীদ হোসেন বাদশা ২৬-০৪-২০২৪

প্রিয় জলকন্যা,
আপনি ভোর হওয়া দেখেছেন কখনও?
গভীর রাত মিলিয়ে গিয়ে ভোর হওয়া!
অথৈ নদীর পানিতে নিঃসাড়ে ভোর হওয়া!
আপনার তো জলের মাঝেই বসবাস,
জলেই ভাঙেন, জলেই গড়েন, জলকন্যা!
আমি রাত হতে শুরু করে মধ্যরাত অবধি,
দু-চোখে জল নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে,
অপলক চেয়ে থেকেছি ভোরের অপেক্ষায়!
ভোর আসেনি, আসেননি আপনিও!
চোখের জলকে হাওয়ায় মিশিয়ে পাঠিয়েছি,
ঘাসে জমা হিমভেজা শিশিরকণার কাছে,
ও নিঃশব্দে আমায় জানিয়েছে,
শেষ রাত অবধি অপেক্ষা করতে।
ভেবেছি জলকন্যারা বুঝি স্বভাবত,
রাত পেরিয়ে ভোরেই দেখা দেয়!
শুনছেন, আমার চোখেনা অনেক জল!
আপনার শরীরের থেকেও অনেক বেশি।
জলের বুক ফুটো করে এই ভোরে,
আপনি একটু উঠেই আসেন নাহয়!
দেখে যান এই উজানহীন নদীর-
অর্ধেক জল আমার দু-চোখের,
আর অর্ধেক জল আপনার শরীরের!
রাত হতে শেষ রাত অবধি অপেক্ষা,
অপেক্ষায় ভোর, অপেক্ষায় জলকন্যা!
ধীরে ধীরে দেখি রাতের সব তারা নিভে যাচ্ছে,
অন্ধকারের পর্দা ঠেলে মিঠে আলোর রেশ-
নদীর জলে ভাসতে ভাসতে আসছে।
পাখির কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে,
চারিদিকটা শিশিরের চাঁদরে ঢেকে যাচ্ছে।
আকাশের রঙটা এখনো কুয়াশার, সাদা-
আর আধারের কালোয় মাখা ছাইরঙা!
নদীতে জেলেদের আবির্ভাব ঘটছে,
তাহলে এই বুঝি ভোর হলো! ভোর!
বহু বছর পর ভোরের ঐশ্বর্যকে আজ,
আবার প্রথমই আবিষ্কার করলাম।
ভোর এলো, আপনি তো আসেননি!
জলকন্যা এলো না এই ভোরে।
না দেখা দিলেন রাতের জলে,
আর না দেখা দিলেন ভোরের জলে।
ইচ্ছে ছিল সাঁতারু হয়ে সাঁতরে সাঁতরে,
আপনার সাথে দেখা করতে যাবো ভোরে,
আচ্ছা, আপনার এমন কোনো ইচ্ছে আছে কি?
বা আপনার ইচ্ছে জুড়ে জল কিংবা আমি?
আমি হবো সাঁতারু, আর আপনি জলকন্যা!
কিন্তু আপনি আসেননি আর জলকন্যা!
সাঁতারুর বেশে ডাঙ্গার প্লাবনে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে,
চিৎকার করে জলকন্যাকে বললাম-
" আমি সাঁতারু হবো, আর আপনি জলকন্যা"...

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।