মিমাংসিত জীবন
- বায়েজীদ হোসেন বাদশা ১৯-০৪-২০২৪

এখানে নিশ্চয় শীত-বসন্ত-বর্ষা নেই,
গোধুলি, সন্ধ্যা কিংবা ভোরও নেই!
কেনো নেই জানো?
কারণ তুমি, তোমার অস্তিত্ব নেই তাই।
তুমি যাবে তো যেতেই নাহয়,
কিন্তু কিছুই রেখে যাওনি কেনো?
শীত-বসন্ত-বর্ষা, গোধূলি-সন্ধ্যা-ভোর
সবকিছুই তুমি সাথে কোরে নিয়ে গেছো।
অন্তত এ'কটা না হয় রেখেই যেতে!
আমাকে কি বাঁচতে দিতে চাওনা?
নাকি জীবিত মেরে ফেলতে চাও!
একবার সেই কোন ছেলেবেলায়,
বহুকাল আগে, বহু বছর আগে,
তুমি আমাকে মেরে ফেলেছিলে!
আমাকে আবার মারতে চাও কেনো?
আমি কি মরে যায়নি?
সেই কবে শীত-বসন্ত-বর্ষায়,
গোধূলি-সন্ধ্যা-ভোরবেলা,
তুমি নিজ হাতে খুন করেছিলে আমাকে।
আমি তীব্র যন্ত্রণায় এরকমই কানচাপা দিয়ে,
হাঁটু গেড়ে হিমভেজা ঘাসের ওপর বসে,
স্পষ্ট টের পেয়েছিলাম আমার মরে যাওয়া।
কি-যে কষ্ট সেই মৃত্যুর তা বলার নয়!
তুমি তো বাঁচার জন্যই যাবে,
সত্যিই কি পারবে বাঁচার মত বাঁচতে?
চলো মিমাংসা করি......
তুমি এই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, গোধূলি-সন্ধ্যা-ভোর,
আমাকে দিয়ে দাও, দিয়েই দাও!
বিনিময়ে আমি তোমাকে আমার-
এই জীবনটা একেবারে দিয়ে দেবো।
তুমি তোমার জীবন আর আমার জীবন-
দুটো একসাথে সমন্বয় কোরে নাহয়,
একটা দীর্ঘ জীবন বানিয়ে নিও!
তাহলে অনেকদিন বেঁচে থাকতে পারবে।
নাহলে তুমি তোমার ঐ একজীবনে,
তোমার ইচ্ছারূপ পারবেনা বাঁচতে।
আর আমি এই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা,
গোধূলি-সন্ধ্যা-ভোরেই থাকবো বেঁচে!
আর আমার জীবনের মধ্যে,
যে 'তুমিটা' পাবে অবিচল হয়ে,
ওটাকে তোমার জীবন থেকে দিও ফেলে!
রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া কিছু রাখতে হয়না,
নাহয় ও দিনরাত শুধু 'তোমাকেই' চাইবে।
যা তুমি সহ্য করতে পারবা না, অসহ্য!
খেয়াল করেছো কখনো?
যা তোমার কাছে অসহ্য,
তাই আমার কাছে সহ্য।
যা তোমার লাগেনা ভালো,
তাই আমার লাগে ভালো।
তাই নিয়ে দেখি বাঁচতে আরাম।
মানে হয় কোনো?
আমি বিরত থাকবো অসীম দূরে,
তোমার সমস্ত উৎসব-আয়োজন হতে,
যোজন-যোজন দূরত্ব আসবে দেখো!
কথা হলে যে শুধু তোমার সুখের কথা,
এ ঘটনা, সে ঘটনার উপরেই থাকো।
সারাক্ষণই তোমার মানুষ নিয়ে পড়ে থাকো,
যা শুনলে শুন্য বুকে হাহাকারের সৃষ্টি হয়!
কখনো কি আমার কিছু জানতে চেয়েছো?
তা থাক! ইচ্ছে হয়না বলেই চাওনা।
তোমার ইচ্ছেরা এমন কেনো বলোতো?
শুধু আমার ক্ষেত্রেই ইচ্ছে প্রকাশ করনা!
আর সবার সাথেই তো থাকো খুব,
কত-কত হাসি, কত উৎসব-আয়োজনে।
শতাব্দী পরে কোনো এক সেপ্টেম্বরে,
তোমার সেই এক রঙরঙা উৎসবের দিনে,
আমায় না জানালেও হটাৎই ফোন দেবো।
দেখো! নম্বরটাই খুব অচেনাই লাগবে তখন, অপরিচিত কেউ ভেবে ফোনটা কেটে দিও,
কথা বোলো না, উৎসবে মেতো খুব!
অন্তত এক উছিলা থাকবে তো তোমার।
আমিও তখন খুব করে ধরে নেবো,
এ অজুহাত নয়, চিরন্তন সত্য!
তোমার কখনো ইচ্ছে হয় না,
আর আমার ইচ্ছেরা পিছু ছাড়ে না।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।