উন্মাদ
- শেখ রবজেল হোসেন ২০-০৪-২০২৪

আমি মৃত্যুকে কিল ঘুঁসি দিয়ে করে দিই ক্ষত বিক্ষত,
ভিখারি আর পথশিশুদের চাপা দিয়ে করি আহত।
আমি বিচারক সবাইকে শূলে চড়াই রোজ দিনের শেষে,
কয়েদীগুলোকে ছেড়ে দিই জঙ্গলে সন্যাসীর বেশে।
আমি কৃষকের পাকা ধান মইয়ে পিষে দিই মাটির বুকে,
খাঁচায় বন্দী সিংহগুলো ছেড়ে দিয়ে বসে থাকি মহা সুখে।
আমি কুমারী মেয়েদের বনবাসে দিই দুর অরণ্যে একা,
পতিতাগুলোকে ধরে এনে দিই মৌলভীর সাথে নিকাহ্।
আমি সূর্যের নীচে বিছানা পেতে কড়া রোদে রই শুয়ে,
উড়োজাহাজ চালাই পানির নীচে নৌকা আকাশ দিয়ে।
আমি আগুন ঢেলে দিই রোগীর ঔষধের পেয়ালায়,
ঠান্ডা জলে ভেজাই উলঙ্গ শিশুকে শীতের সকাল বেলায়।
আমি রোগীগুলোকে রশি দিয়ে বেঁধে দিই পাগলা ঘোড়ায়,
ভুখাগুলোকে পাঠাই নুড়ি পাথর আর বালুর উপত্যকায়।
আমি কলের গাড়ির ড্রাইভিং সীটে বসাই অন্ধদের ধরে এনে,
মুর্খদের বানাই মাষ্টার প্রফেসর এ কথা রেখো সবে জেনে।
আমি পাকা রাস্তায় ফসল ফলাই ছাগলের লাঙল নিয়ে,
উর্বরা জমিগুলো ঢেকে দিই সব আনবিক বোমা দিয়ে।
ডাক্তার ইন্জিনিয়ার বানাই যতো সার্টিফিকেট বিহীন,
ডিগ্রীধারীদের ডিগ্রি কেড়ে নিয়ে করি চাকুরী হীন।
বুদ্ধিজীবিকে ডিম ভাজায় আর রাখালকে দিই সংসদে,
মেম সাহেবকে বুয়া বানিয়ে আটকে রাখি সংসারের ফাঁদে।
শিশুগুলোকে বসাই অফিসে এখন অফিসারকে পাঠাই স্কুলে,
শিল্পীগুলোকে বোবা করে দিই তাই গান সব যায় ভুলে।
দালানগুলো খামার বানাই মানুষকে রাখি জঙ্গলে,
বানরকে পরাই স্যুট টাই আর ক্ষমতা দিই হাতে তুলে।
মানুষ এখন বোঝা বয়ে যায় গাধারাও চড়ে তার পিঠে,
মুর্দারা চলে গাড়িতে চড়ে নারী শিশু যায় পায়ে হেঁটে।
পুলিশকে বানাই পতিতার দালাল চোর ডাকাতের সর্দার,
ধর্ষণে সেঞ্চুরি করলে পায় সে ফুল ক্রেস্ট উপহার।
রাজনীতির চেয়ারে বসাই হকার বেকার কবিরাজ,
নেতাকে দিয়ে ভিক্ষা করাই কেড়ে নিয়ে চোখের লাজ।
ব্যাংকগুলো সব টয়লেট বানিয়ে জমা করি মলমূত্র,
বয়স্কগুলোকে বিষ খাওয়াই আর ফেলে রাখি যত্রতত্র।
আমি শয়তানকে বুকে জড়িয়ে ধরি সাধুকে দুরে ঠেলে,
উন্মাদ আমি এমনই করবো একবার ক্ষমতা পেলে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।