চন্দ্রমল্লিকা
- মোঃ সুমন রেজা - আত্মার অমিয় তৃষ্ণা ২৯-০৩-২০২৪

গহীন অরণ্যে সবুজ বিপ্লবে ছাঁয়া সমৃদ্ধ সমাবেশে, অগোছালো অবয়বে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ক্ষুদ্র চন্দ্রমল্লিকা, সেদিন অবনত হয়ে কাঁদো কাঁদো স্বরে পৃথিবীকে বলেছিল - তুমি এত নিষ্ঠুর হও কিভাবে? তোমার শক্তির কাছে আমি অতি সামান্যতম, তবু আমার প্রতি কেন তোমার এত ক্ষোভ? প্রতাপশালী সূর্যও আমাকে স্পর্শ করে না - কেন? এত অবহেলায় আমার বেড়ে ওঠা? একদিন ভোরে- সবে আমার ঘুম ভেঙেছে এমন ; ভোরের শিশির মেখে আছে তখনো আমার সমস্ত শরীর জুড়ে - হঠাৎ কোথা থেকে এক অদ্ভুত সুন্দর পাখি এলো _ মেলে ধরলো তার অস্তিত্ব আমার নড়বড়ে শরীরে, আমার হৃদপিন্ডে বসে - আমাকে অপলক দেখতে লাগলো - এক অপূর্ব -মায়াময়ী চাহনি তার । আপন সুরে নীরব মনে সে তার প্রেম ও দুখের গান শোনায় নির্জন বনকে । ক্রমশ আমার অন্তরাত্মা আন্দোলিত হয়ে ওঠে - লজ্জায় - সুখে আমার মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম। ভীষন ইচ্ছে হলো পাখিটার সাথে কথা বলি - নিজের দেহের সর্বোচ্চ সৌরভ দিয়ে, মোহিত করি পাখিটার হৃদয়ন্ত্র - কিন্তু আমি যে বাকশক্তিহীন _ চিরকালের নিরবতা আবিষ্ট করে রেখেছে আমায়, আমার পবিত্র ভাষা তার কর্ণকুহরে পৌছে না, আচ্ছা হৃদয়ের আবেদন কি সে বোঝে?? সেও কি ভালোবেসে প্রতিদিন কাছে আসে? নাকি নিজের দুখে-সুখে "আমি" কে ব্যবহার করে? বসন্ত যায় - বসন্ত আসে ; আমার দেহে মনে নতুন রূপ -যৌবন- উচ্ছাস আসে - কিন্তু পাখির দেখা আজো মেলে না। বোধহয় তার ঠিকানা এখন আমারই মতো অন্য কোন চন্দ্রমল্লিকায় - তবু কেন আমি মিছে কাঁদি আজো? কেন সম্মোহনী সৌরভে পৃথিবীকে সুবাসিত করি? তবে আমার বুঝি ভালোবাসতে নেই? ? ক্ষুদ্র চন্দ্রমল্লিকার হৃদয়ের আকুলতা খুব ক্ষীণ বুঝি! এর মাঝেও আমি ভালোবাসি - হে পৃথিবী :- জেনে রাখো, আমিও ভালোবাসি। আমি চন্দ্রমল্লিকা -অতি ক্ষুদ্র -ভীষণ ক্ষীণ -খুব নগণ্য তবু আমারো হৃদয় আছে - ভালোবাসার সম্পূর্ণ অধিকার আছে - মহাউল্লাসে জীবনের স্বাদ আস্বাদনে নিবৃত থাকার পরিপূর্ণ দাবী আমারো আছে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

M2_mohi
২৬-০১-২০২০ ১৭:০০ মিঃ

মনোরম লেখা।