প্রবাসী
- শেখ রবজেল হোসেন ২০-০৪-২০২৪

বলছি এবার বিদেশ গিয়ে অনেক হবে কামাই,
লক্ষী বউয়ের গর্ব আমি বিদেশী এক জামাই।
ভিডিও কলে কথা বলে হেসেই কুটিকুটি,
জানাতেও বাদ পড়ে না ঘরের খুটিনাটি।
শ্বাশুড়ি আর ভাল লাগে না ননদ দেবর নয়,
আলাদা এক ঘর বানাবো মনে যেন রয়।
মাস ফুরাতেই বাবার গলায় ঋণের টাকার সুর,
ছোট ভাইও বিদেশ যাবে লেখাপড়া দুর।
বছর কয়েক হাসিখুশী যুগটা গেলেই দ্বন্দ,
বাবা মায়ের কাছেই এবার প্রবাসী হয় মন্দ।
টাকা পয়সা সবই এখন বউয়ের নামে যায়,
ভাই বোনেরা বউয়ের যতো দোষ খুঁজে পায়।
কার সাথে যে হাসাহাসি কার সাথে খোশগল্প,
সকল দোষে দোষ না হলেও দোষ থাকে অল্প।
প্রবাসী মন স্বপ্ন দেখে ফিরবে দেশে এবার,
বউয়ে বলে এখন আসার দরকার নেই তোমার।
ছেলে মেয়ে বড় হবে টাকার অনেক প্রয়োজন,
ঘর করতে দাইক দেনা বেড়ে গেছে লোন।
ছেলে বলে প্রবাসী বাবা বাইক কিনে দাও,
মান সন্মান ডুবে যাক তা কি তুমি চাও?
বউয়ের নাকি দাওয়াতে যেতে গয়না হতেই হবে,
গুনে গুনে বিদেশ থেকে সবই চেয়ে নেবে।
বাড়ি আসবে শুনেই সবাই চাহিদাটা জানায়,
সবার জন্য বিদেশী ফোন না হলে কি মানায়?
সকালে খায় মুড়ি পানি দুপুরে বাটির ভাত,
কাজ সেরে সে ফিরে এসে রাঁধতে হয় যে রাত।
কাপড় চোপড় ওয়াশরুমে জমা বালতির মাঝে,
বউয়ের ফোন আসতেই থাকে সকাল এবং সাঁঝে।
দেরি কেনো ফোন ধরতে কোথায় তুমি ছিলে?
আমায় ছাড়া অন্য কাকে আপন করে নিলে?
বাড়ি হলো গাড়ি করতে টাকা পয়সা দাও,
আমার দুটো ভাইও বেকার ওদের বিদেশ নাও।
বেতন আমার বাড়ে নাকো ওভারটাইম নাই,
সারা দিনের কাজের শেষে পার্ট টাইমে যাই।
ভিসার টাকা জমে নাতো ভিসার মেয়াদ শেষ,
এ অবস্থায় ধরলে পুলিশ ফিরতে হবে দেশ।
বাড়ির লোকে লোক দেখাতে ফার্স্ট হতে চায়,
বউ আমার অনেক সুখী পেয়ে বিদেশি জামাই।
প্রবাসীরা মানুষ বলে ধার ধারে না কেউ,
সারাক্ষণই বুকের মাঝে অবহেলার ঢেউ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।