ধর্মশালার বাইরে একটা কাঠের চেয়ার
- মাহমুদ রিয়াদ পলাশ - তারা শংকরের কবি ২৬-০৪-২০২৪

একটা বাদামী কাঠের চেয়ার
তিনটি তক্তার ওপর মহাশূন্য শুইয়ে রাখে।
তার হাতলের পিঠে একসাথে পাঁচটি মৃতদেহ
বসে আছে বর্ণহীন ঘাস ফড়িংয়ের মতো
তাদের পিঠ থেকে হেঁটে গেছে যে কালো সৌরজগত
তার ঠিক শেষ বাঁকের গাছটায়
একদিন ঝুলেছিল মৃত্যুদন্ডের পর
তারা এখন এই চেয়ারটায় বসে পুরোনো এক ইশ্বরের
সব দৈব স্তব একসুরে পাঠ করে, সৃষ্টির আদিতত্ত্ব গায়।
এই পাঁচজন কালো মানুষের একজন ছিলো নারী
আর একজন কেবল দুধদাঁত গজানো শিশু।

তারা এই চেয়ারটা বানাবে বলে
বাদামী কাঠের গাছ কেটেছিলো, গাছ কাটার গান
নারীটি আজো গুন গুন করে গায়, আর
শিশুটির কোমল হাসি উড়ে আসে ছোট ছোট ঘাসে,
তাদের সে দিনে সব গাছ কেবল ইশ্বরের হতো
আর ইশ্বর ঘুমাতো সাদা মানুষের আরাম কেদারায়,
ওরা চারজন তিনটি তক্তার শূন্যতায় ইশ্বরকে ধরে
শোয়াবে বলে সাদাতুলোর পাত্রে আত্নসমর্পণ করেছিলো,
শুধু শিশুটির কোন প্রার্থনা ছিলোনা
দমবন্ধ হয়ে আসার খেলা ভেবে ঝুলেছিল কিছুক্ষণ।

আজ বহু বছর পর একটা সাদা রংয়ের গাড়ি
ওদের বেড়াতে নিয়ে যাবে চুনকাম করা এক ধর্মশালায়
সেখানে তাদের পাঁজরের হাড়গোড়, নারীর প্রশস্ত
শ্রোণীদেশ আর শিশুটির করোটি ও দুধদাঁত
পবিত্র জল ছিটানোর পাত্রের চৌপায়া হয়ে আছে।

এমন ধর্মশালায় আমরা আজকাল খুব কেতাদুরস্ত হয়ে
নানা মার্গের বেসুরো শ্লোক ও স্তবক পাঠ করি,
নিরীহ মানুষের অস্থি করোটি কোন দিন চোখে পড়েনা।

#মাহমুদ_রিয়াদ_পলাশ
০১.০৩.২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।