বৃষ্টি
- Tonoy Chowdhury - শ্রূয়মাণ ১৯-০৪-২০২৪
কতদিন রক্তবৃষ্টির শহরে নৌকার বাইচে আমরা দুজনে,
ভিজতে ভিজতে হারিয়েছি ছেলেবেলার স্মৃতি সাজিয়ে,
শহুরে ব্যস্তায় গ্রামের কাঁচা রাস্তায় বুক ভরে নিঃশ্বাস
নিয়ে সোনালি ধানগুলোর সাথে আলাপ জুড়েছি দুজনে।
গোধূলির কোল ঘেঁষে যখন সন্ধ্যা নামে,
জোয়ান-বৃদ্ধের কন্ঠে লালনগীতি সুর শুনেছি
মুগ্ধ জোনাকির জোছনা ভাসিয়ে।
বিজন ঘাসে পা ছড়িয়ে বসেছি গঙ্গাফড়িঙের অভিলাষে,
টুপটাপ বৃষ্টিতে অজস্র প্রজাপতি লুকিয়ে হয়েছি দিশেহারা দুজনে।
একদিন অজস্র কদমগাছ, জোনাকি-জ্যোস্না, ঝিঝিপোকা, ঘাসফড়িঙ, শুভ্র শিশির, গোল্লাছুট ছেড়ে
ইট-পাথরের শহরে এসেছি রিক্ত মায়াবী চোখ নিয়ে,
অঝোর চাঁপা কান্নায় কেউ চোখের জল মুছে দেয়নি,
সংগ্রাম-সংঘর্ষে কেউ ভাগীদার হয়নি,
কৃত্রিম কংক্রিটে পঁচেছি অবিরত
কাঠের মতো জ্বলে জ্বলে পুড়েছি সারাক্ষণ দিবারাত্র।
তবুও শান্তি নেই ওমন কাশফুলের ঘ্রাণের মতো,
চুম্বক-মেশিনের গাড়ি রাস্তায় ভীড় জমিয়ে
আমাদের জন্য রেখেছে ফুটপাত,
অসহায় উদ্বাস্তু মানুষের ঠিকানা আজ ফুটপাত,
কোথাও শান্তি নাই ওমন বিজন ঘাসে
পা ছড়িয়ে বসে-ঘুমিয়ে আকাশে তারা দেখার মাঝে।
গ্রাম্য সরল মানুষের মুখের ভাষা যেন বটবৃক্ষের ছায়াসম,
সরলতা বিকিয়ে ধূর্ততা কিনেছি আমরা দেখ!
একদিন প্রাণে প্রাণ ফিরিবে শুকতারা হয়ে,
একদিন বৃষ্টি আসিবে স্বর্গের পথ বেয়ে।
৫ আষাঢ়, ১৪২৭
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।