বেতনটা জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির মতো আসে
- মিটু সর্দার ২৪-০৪-২০২৪

কাজের বেতন স্লথের মতো হেঁটে হেঁটে আসে
চক্ষে দ্যাখার আগেই চিতার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে চলে যায়।
একমাস গাধার মতো খাটুনি খাটার পর
মোবাইলে ছোট্ট একটি এসএমএস আসে
ক্রেডিট ট্রান্সফার সেলারি
সেলারি আসার পূর্বে খরচের লিস্ট সাজিয়ে রাখে গ্যালারি।
তপ্ত রোদে পুড়ে
মাথার ঘাম মৃত্তিকায় ঝরিয়ে
যে বেতন আসে মাস শেষে, ধরতে পারি না
ছুঁতে পারি না, গুনতে পারি না এমনকি দ্যাখতেও পারি না
এ.টি.এম বুথ থেকে বাটন টিপে ট্রান্সফার করে দেই দেশে।
এক মাসের বেতন একদিনে উধাও
চাল-ডাল, বিদ্যুৎ বিল, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা
গ্যাস বিল, পানি বিল, সুদের লাভ, বাসা ভাড়া
সপ্তাহ খানেক পর বাজার আসে না আর ব্যাগ ভরা
বাজার থাকে যেন ব্যাগের তলায় পড়া ।
বেতন যা ছিলো তাই, বাড়েনি কানাকড়ি
খরচের হিসাব পইপই করে বেড়ে আকাশ ছুঁইছুঁই
এক মাসের পারিশ্রমিক তিমি মাছের মতো চোখের পলকে গিলে নেই।
ঘড়ির ঘন্টার কাঁটার মতো বেতন আসে
আর সেকেন্ডের কাঁটার মতো দ্রুত ফুরিয়ে যায়।
মৌমাছি রাতদিন পরিশ্রমে
একটু একটু করে মধু সঞ্চয় করে মৌচাকে
খেজুর গাছে সারারাত কলসি বেঁধে রাখার পর এক গ্লাস রস জমে
আমরা এক চুমুকে পান করে গ্লাস খালি করে দেই।
বেতনটা জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির মতো আসে
রাজপথে চালানো গাড়ির স্পিডের মতো চলে যায়।
সংসার চালানো এখন নাভিশ্বাসের মতো
দম আঁটকে আসে মাঝেমধ্যে
বস্তা ভর্তি টাকা নিয়ে ব্যাগ ভর্তি সদায় আনা যাইনা
কালোবাজারি, চাঁদাবাজ, ধাপ্পাবাজ সর্বস্তরে
হাইতির মতো ছিকর বা মাটির বিস্কুট খেতে হবে জীবন ধারণের জন্য।
মুদ্রাস্ফীতি মূল্যস্ফীতি লাগামহীন ভাবে বাড়ছে
ভাঁজ ফেলছে কপোলে,
বোধহয় আর টিকে থাকতে পারবো না।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।