শত কবির শত অভিযোগ
- মিটু সর্দার ১৯-০৪-২০২৪

আমার বিরুদ্ধে শত কবির শত অভিযোগ
কবিতায় নাকি থাকে নারীর উচাটন নিটোল বুক।
আমি নাকি করি কবিতার শ্লীলতাহানি
নারীকে সাজাই পদ্মভূষণে হৃদয়ের রাণী।
স্রস্টা সুন্দর, সুন্দরতম তার সৃষ্টি --
একবার তাকালে তোমাতে আমি
লক্ষ-কোটি বছর কেটে যায় সুরামত্ততায়।
আমি কবিতায় বন্দনা করি ---
ক্লিওপেট্রার ঠোঁটের মতো পদ্মরাগমণি ঠোঁটের
বন্দনা করি ডিমের কুসুম রাঙা দু'টি গালের।
রহস্যে ঘেরা অন্ধকার গ্রহের মতো --
অতল চোখের রেটিয়ায় ডুবে যাবে মহাবিশ্ব -
আমি শ্লীলতার চাদরে ঢাকা অশ্লীল অকবি--
চোখের পলক ফেলার আগেই হারিয়ে যাই --
কাজল কালো চোখের গভীরতায়।
আমার বিরুদ্ধে শত কবির শত অভিযোগ
নির্মল পানি ছেড়ে খাই নাকি কালো কোক
নারীর ভ্যাজাইনাতে খুঁজি নাকি অতৃপ্ত সুখ -
মোর কবিতায় থাকে নাকি অশ্লীলতার ঝোঁক।
শ্লীলতার মাঝে অশ্লীলতায় করি যদি বন্দনা
শ্লীলতাহানির অভিযোগে জারী করো পরোয়ানা
নারীর নগ্ন হাতে ঢেলে দাও মুখে হেমলক
আমি গর্দভ পান করবো হ্যায় হরদম।
নারী দেহের সৌন্দর্য্য করি যদি বর্ণনা
সুশীল সমাজে কবিতার আদলে হবে বেলেল্লাপনা।
নারী আঁচল টেনে কোমরে বাঁধে যখন শাড়ী --
রংতুলিতে ছবি আঁকে নরীর সৌন্দর্য্য প্রেমী
কেন্দ্রবিন্দুর চারপাশ অনিন্দ্য কারুকাজ --
হাজার বছরের প্রতীক্ষা পেতে প্রিয় মানুষের ফোরপ্লে।
নিজেকে আর কতোকাল কাপড়ে মুড়িয়ে রাখবো
আর কতোকাল শ্লীলতার অলংকারে অলংকিত রাখবো।
নগ্ন সমাজে উলঙ্গের আধিপত্য, শ্লীলতা অভিশপ্ত
আমিও অশ্লীলতার সুরা পান করে --
শ্লীলতার ধুতি খোলে উলঙ্গ হ'য়ে গিয়েছি --
সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে দুমুঠো ভাত খেতে।
কেউ আমাকে কবি ব'লে ডেকোনা --
আমার বিরুদ্ধে শত কবির শত অভিযোগ
পতিতার বিছানা চাদরের দুর্গন্ধের মতো দুর্গন্ধ আমার কবিতায় -
বেশ্যাদের মতো আমার কবিতার বুকে ওড়না থাকেনা --
শ্লীলতার চাদরে ঢাকা থাকেনা তলপেট।
অমার্জিত শব্দ চয়ন -- অশালীন লিখা
সাহিত্য জগতের জন্য অস্বাস্থ্যকর, কুরুচিপূর্ণ
তাই আমাকে কবি ব'লে করিওনা খ্যাতিমান কবিদের মানক্ষুন্ন।
ঘন-কালো খোলা চুল, মনে হয় শুভ্র কাশফুল
কোন শিল্পীর আঁকা নই ছবি, প্রেমিক হয় কবি
স্রস্টার নিপুণ শিল্পকৌশল তাইতো সৌন্দর্যে থাকি মশগুল।
নারী-তে শান্তি -- নারী-তে-ই প্রশান্তি আবার নারীতে-ই অশান্তি
নারী-তে স্বর্গ -- নারী-তে-ই নরক করে দ্যাখো পরখ।
আমি প্রেমিক --
আহার নিদ্রা তৃষ্ণা ভুলে এক জন্ম কাটিয়ে দিতে পারি প্রেয়সীর সুডৌল মর্মস্থল নেত্রপাতে।
আমার বিরুদ্ধে শত কবির শত অভিযোগ
আমি লিখি যৌবনবতী স্বামী পরিত্যক্ত নারীর --
দীর্ঘশ্বাসের অগ্নিদগ্ধ হাওয়ায় ব্রাজিলের আমাজন পুড়ে --
কলঙ্কের ভয়ে আত্মহত্যা করে কামের বাসনা অন্ধকার কুপে --- নির্জন ঝোপে।
যতোক্ষণ কামরস স্পর্শ না করে জরায়ু --
ততোক্ষণ মনে হয় নারী-ই 'ইউবারি মেলন'
সর্ব কিছু নরকে যাক, শত্রুর দখলে যাক রাজ্য
এখানেই গড়েছি আমি সুখের সাম্রাজ্য।
ভেঙে গেলে রসের হাঁড়ি -- তিক্ততা বাঁধে বাড়ি
ভাল্লাগে না আর কামুকী নারী ---
ধাক্কা মেরে ফেলো খাটের ভাটি --
মনে হয় আর চিনো না তারে, মুখ ফিরিয়ে নাও চুপিসারে।
নারী!
হতভাগিনী --
লাজলজ্জার মাথা খেয়ে --
চোখ রাঙানো চোখের কাজল মাখিয়ে --
ঘুমোতে চায় তোমায় একটু জড়িয়ে ধরে --
মরতে চায় তোমার চোখের সাথে চোখের মিলন ঘটিয়ে।
আমাকে কেউ কবি বলো-না
কবি ব'লে কেউ আমায় ডেকো-না
আমার বিরুদ্ধে শত কবির শত অভিযোগ
আমি ভ্রষ্ট কবি, আমি নষ্ট কবি---
আমার কবিতার পংক্তি কামলালসাপূর্ণ -
আমাকে কবি আর সৃষ্টিকে কবিতা বল্লে -
কলংক হবে সুশীল, সভ্য,ভদ্র,প্রেমিক কবিদের - কবিতার
মর্যাদাহানি,অখ্যাতি,মর্মপীড়াসায়ক হবে খ্যাতির সিংহাসনে বসা কবিদের - কবিতার।
তবে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দের হবে কি-না জানি না
জানিনা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ুন আজাদ, আবুল হাসানের হবে কিনা।

১৪/০৭/২০২২ সৌদি আরব

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।