গীতিকবিতা ১২৫
- আযাহা সুলতান - রৌজা ২৫-০৪-২০২৪

১২৫
‘স্বর্গ’ ‘স্বর্গ’ করে যারা মরছে আর মারছে
প্রভু তুমি বল, স্বর্গ কি তারা পেয়েছে?
‘ধর্ম’ ‘ধর্ম’ করে যত যারা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে
বল, তারা প্রকৃত ধার্মিক হতে পারছে?

ভালো দেখালে কি কেউ বোঝা চাই ভালো?
কে জানে কার অন্তরে কত বিষকালো
বাইরের রূপে সাধুসন্যাস দেখা যাচ্ছে—
বল, তারে কি সাধুমানব বলা যাবে?।

‘ইসলাম’ ‘ইসলাম’ করে যত যারা ছুটছে
বল, কতটুকু ইসলামে তত তারা আছে?
‘কোরান’ ‘কোরান’ বলে উল্টোপথে চলছে
তুমি বল, সে কোরান মোটেও বুঝছে?

যতই-না দেখাবে দেখাও পরিষ্কার পথ
বিপদী ঘুরেফিরে দেখবে শুধুই আপদ
‘বিপদ’ ‘বিপদ’ করে সুপথ যারা দেখাচ্ছে—
বল, তারা আসলেই কি সুপথে আছে?।

যেধর্মকে করে দিলে তুমি পরিপূর্ণ কবে
লক্ষ নবিরাসুল ও মুহাম্মদের শুভাগমনে!
প্রতিষ্ঠিত করেই রাখলে কেয়ামত পর্যন্তে
আবার কোন জিহাদের ডঙ্কা নতুন ঢঙে?

তোমার বাণী যদি হয় তবে—না না
আকাশ-পেটুকেরা দুঃসাহস পায় কোথা?
ফেরকা-ফেরকায় আর কত ফেরকা বাড়বে—
কেন ওদের ডানহাত ধরছ না তা হলে?।

কুচক্রির চক্র চক্রহারে কেবল বাড়ালে
‘মার মার’ ‘কাট কাট’ কোথায় ইসলামে?
এভাবে ধর্মপ্রতিষ্ঠা কোথায় তুমি বললে?
দুষ্টের হাতে ধর্মের রশি ছেড়ে রাখলে!

গাঁট্টিগাঁঠুরে বন্দি করলে ধর্মের সৌন্দর্য
যাযাবরের জিন্দেগিতে কীসের ধর্মৈশ্বর্য?
ধর্মের সৌন্দর্য বিনষ্টে যতসব নামছে—
বল হে, চিল্লেটিল্লে এসব কোথা কোরানে?।

ধর্মে কিছুই অসুন্দর নেই—তুমি বললে
তবে গাঁট্টিগুঁট্টি থালাবাসন কোমরে বেঁধে
এ ধর্মের শালীনতা শেখাল কে তাদেরকে?
ধর্ম তোমার তুমি কেন হাসছ পরিহাসে?

জানি, বিপথগুমরাহি করছ যারে তুমি
পথ পাবে না সে সুপথেও আসি জানি
এটাই ইসলাম থাকি-না যতই ইসলামে—
শয়তান তো ধোঁকা দেবে ফেরেশতাসেজে!।

আরও জানি তোমার ভূরি ভূরি আদেশ
জানি না কে কতটু বুঝল সেই উপদেশ!
আমরা তো দেখছি আজ কেবলই বিদ্বেষ
দাবানলসম হিংসায় জ্বলছে দেশবিদেশ!

কোথাও ধর্মবাদ কোথাও মানবতাবাদ
দোহাইয়ে দুয়ে করছে শুধু নিজস্বার্থহাত
নব্যধার্মিক নামছে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে—
আখেরি দুনিয়া বুঝি এটাকেই বললে?।

শান্তির ছায়াতলে যারা আসতে চাচ্ছে
ভয়ের চোটে তারা ধর্মান্তরিত ভুলছে!
যেন সত্তর হাজার ডিগ্রি আগুন জ্বেলে
তুমি বসে আছ মানবজাহাঁ পুড়তে!

এতই সহজ করলে কোরানের বাণী
বঙ্কিম বুঝল না তোমার সেই জবানি
পথপ্রাপ্তকেই কেবল পথভ্রষ্টী বানাচ্ছে—
বল, তাদের স্থান আছে কোন রৌরবে?।

যেকথা শোনাতে বললে তা শোনাচ্ছি
যা তুমি ইশারা করলে তা আমি লেখছি।
অনেকে মানে মানুক আমাকে দোষী
তোমার সৌন্দর্যে দেবে অসুন্দরে খামছি?

আদেশ কর তুমি প্রভু ঘুমে ও জাগরণে
পালন করব আমি তা অক্ষরে অক্ষরেই
তোমার সুন্দরের ধর্ম ও কর্মের রক্ষার্থে—
কথাজিহাদের বাণী লিখে যাই আমৃত্যেু॥
১৮ ফাল্গুন, ১৪২৭—
ডি সি রোড, চট্টগ্রাম

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।