ঘরমুখো কবিতা
- আহমেদ তানভীর - কাঠকয়লার আঁচড় ১৯-০৪-২০২৪
এক.
‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’
শোণিতের উত্তাপে আচমকা বেজে ওঠে বিষাদের সুর,
ওপারের দুয়ার খুলে দিতে চায় টুং টাং হেমলকের পেয়ালা!
পুষ্পবৃষ্টি আর কখনও হবে না জানি, হবে কেবল অগ্নিবৃষ্টি;
তবু এই আগুনমুখো আমাকে খুঁজে পাবে তোমাদের বন্দরে।
হয়তো বিবর্তনবাদী ইঁদুরেরা প্রাগৈতিহাসিক জমিনের বুকে হানা দেবে,
হয়তো কখনও আর স্বর্ণাভ শস্যেরা ডেকে আনবে না চপলা সবুজ ঢেউ;
বিধ্বস্ত কিষাণীর মাথায় উঠবে না সুখাবিষ্ট লাজুক ঘোমটা!
জলসিঁড়ি আর হেঁটে বেড়াবে না ধানসিঁড়ির তীরে-
তোমাদের মানসস্মৃতিই আমাকে ডেকে আনবে তোমাদের ভিড়ে।
ঘুম ঘুম ক্লান্তির নীড়ে বেজে বেজে শান্ত হবে ধানসানাই,
ঘোরলাগা প্রজাপতি হয়তো আর ডানা মেলবে না মেঠোস্বপ্নের দেশে;
যন্ত্রগীতের ধাক্কায় ছিটকে যাবে নবান্নগীত,
গুমরে কেঁদে উঠবে জনশূন্য মেঠোপথ!
তোমাদের নাট্যশালার নেপথ্যে তবু উঁকি দেবে আমার পঙক্তিনিচয়,
প্রতিধ্বনির মতো কানে কানে বলে যাবে-
‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’।
দুই.
জলের জলসায় নেচে ওঠে চঞ্চল কলমিলতা,
চুপচাপ জল নাচে ঘরমুখো ঢেউয়ে-
প্রাণহীন পুঁটি নাচে মাছরাঙার ঠোঁটে
অনন্ত কুয়াশায় সাদার বুকে সবুজ নাচে
তার গহিনে সাদা, হঠাৎ এ কোন্ ধাঁধা!
এ কি তবে কবিতার নুয়ে পড়া দিনদুপুর!
হেলেপড়া রোদে ভাঙা সাঁকো ডেকে আনে
ক্লান্ত রাখালের ঘরমুখো পায়ের ছাপ,
ভোররাতের ধূলিমাখা চাঁদ- সেও তো পথচলে-
ফিরে ফিরে যায়...
নিরন্তর পথচলায় সবাই ফিরে যায় নিজগৃহে,
অনন্ত চিতায় কিংবা সাড়ে তিন হাত ঘরে...
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 2টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।