হারানো সুর
- অধ্যাপক আব্দুস সালাম ২৫-০৪-২০২৪

অসহায়া আর অনাথিনী, রে অবলা পল্লী-বালা,
স্বজন-হারা তুই বিরহী, আন্তরে তোর দারুণ জ্বালা।
খানকা ভরা লোক ছিলো তোর, হুকায় খেতো তামাক তারা,
সহজ-সরল তোর সে রূপে, থাকতো সবে পাগল পারা।
গল্প-গানে উঠতো জমে, বসতো যেন ফুলের মেলা,
বিকাল থেকে রাত অবধি, চলতো সেথা লোক খেলা।
নতুন কুটুম আইলে তারে, খাইতে দিতো চিকণ পিঠা,
পাকান্ পিঠা, পল্টা পিঠা, রসের পিঠা বড়ই মিঠা।

মাটির মানুষ পাটির পরে, স্বপ্ন-আঁকা নকশী কাঁথা,
মেলিয়ে দিয়ে এলিয়ে দেহ, জুড়িয়ে দিতো মনের ব্যথা।
বিয়ের দিনে বাদ্য বিনে, গাইতো গানা সখির দলে,
গাছের পাতায় গেট সাজিয়ে, ফুলের মালা পরায় গলে।
পড়শীরা সব ফুল ছিটাতো, ফুল-বাতাসা আমোদ ক’রে,
বরকে সবাই আদর ক’রে, বসিয়ে দিতো আসর-ঘরে।
মেন্দী-মেথি, হলুদ বেটে, মাখিয়ে দিতো ক’ণের গায়ে,
সোনার দেহ জড়িয়ে সোনায়, পরিয়ে দিতো আলতা পায়ে।

বাপের বাড়ী ছেড়ে যখন, চলতো ক’ণে শ্বশুর বাড়ী,
মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে, কাঁদতো উঠে গরুর গাড়ি।
ঘুঙুর-পরা বলদ দুটি, ঝুমুর-ঝুমুর ছুটতো যবে,
সজল চোখে থাকতো চেয়ে, মা-বোনেরা, পাড়ার সবে।
অতীত্ কালের কথিত কথা, কেমন ক’রে রাখবো ধ’রে,
ভাবতে গেলে সে সব কথা, অশ্রু হয়ে যায়রে ঝ’রে।
পল্লী গাঁয়ের সকল ছবি, হারিয়ে হলি সর্বহারা,
হৃদয় খানি শুকিয়ে এখন, ধূসর মরু তুই সাহারা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

kobisabujahmed
২৭-০১-২০১৫ ১৭:৫৭ মিঃ

very fine