ধূসর জীবনের গল্প

ধূলো বিছানো এই পৃথিবীর পথে পথে
পদে পদে দেবে যায় পদক্ষেপ,
ধেয়ে আসে অন্ধকার দৃষ্টির সামনে-
ধূসর জীবন নিয়ে জীবনের জন্য
তবু্ও বিরতিহীন পথ চলা-

ক্লান্ত, জীর্ণশীর্ণ দেহ-মন নিয়ে
একটুখানি প্রশান্তির সন্ধানে, কোন বৃক্ষের
উত্তরে ছায়াতলে দাঁড়িয়ে দেখি সূর্যটাই যেনো
উত্তর দিক হয়ে দক্ষিণে প্রদক্ষিণ করছে!

এই পৃথিবীর সমগ্র জল আজ তিতা লাগে;
লাগে নোনতা নোনতা, অক্সিজেনও যেন
চরম উষ্ণতায় ভরপুর, হায় অনুভূতি!

সামনের যা কিছু; সব অন্ধকারের আয়োজনে
ডুবে আছে, ভরে আছে- এমন সময়ে
হিংস্র জানোয়ারও লড়তে হার মানে,
তাই মনে হয়, যদি মৃত্যুর ডাক আসে!
যদি মেঘ হয়ে ভেসে বেড়াতাম!
যদি পাখি হয়ে উড়ে বেড়াতাম অথবা
ঝিঁঝিঁ পোকা হয়ে মনের সুখে বেলা
অবেলায় গান ধরতে পারতাম!
জীবন বড় সুন্দর হতো, তা-ই তো মনে হয়।।

ঠিক এমন অন্ধকারেও দেখি-
(সম্ভ্রান্ত) নাইট ক্লাবের জানালার ফাঁক গলে
লাল নীল আলো এসে পড়ে শহরের
ধূলোপড়া পথে, জীবন থেকে জীবনে,
পারফিউমের গন্ধে অসাড় হবার দশা চলে,
চলে রঙিন পানির সাথে ময়ূরী- নাচ।

ঠিক এমন অন্ধকারেও দেখি-
নিশ্চিন্ত যুবক খরচ করে অঢেল পেট্রোল,
পার্কে বসে প্রেমিকার সাথে স্বপ্ন বুনে;
গোপন থেকেও গোপন আলিঙ্গনে তারা
একের সুখ অপরে করে যায় ভোগ।
আহা জীবন! তবুও সুন্দর বলতে পারি না।

আমার ঘরসংসার হয় না,
প্রেমিকা জুটেনা সেই আদিকাল থেকে,
রক্তের গাঢ় রঙটাও মলিন হয়ে যায় দিন দিন,
পুড়ে পুড়ে, লড়াই আর লড়াই করে করে
অস্থিমজ্জা, হাড়গোড়, দেহ-মন সব
লৌহ দণ্ডের থেকেও বেশি শক্তিশালী,
জীবন নিয়ে চলতে ভয় পাই না কোন-
তবুও মনে হয়, আজি এই ধূসর জীবনের
অবসান প্রয়োজন, যদি মৃত্যুর ডাক আসতো!
যদি শরতের আকাশে ঘর বানাতে পারতাম,
অথবা এ জীবন না পেয়ে
কোন ধান শালিকের জীবন পেতাম,
হাঁটুজলের নোংরা বিলের কোন শাপলা হতাম,
ঘুঘু কিংবা কোকিলের মতো
গান করে বেড়াতাম গাছের ডালে ডালে-
জীবন বড় সুন্দর হতো, তা-ই তো মনে হয়।।
--------------------
২৫/০৮/১৯ইং