সোনার তরী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সোনার তরী কাব্যগ্রন্থের প্রকাশকাল ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ (১৩০০ বঙ্গাব্দ)। কাব্যগ্রন্থটি কবি দেবেন্দ্রনাথ সেনের প্রতি উৎসর্গিত। এই কাব্যের অনেকগুলি কবিতার সঙ্গে পদ্মাপাড়ের পল্লিপ্রকৃতির গভীর যোগ বিদ্যমান। সমগ্র গ্রন্থটি বাংলা কাব্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রোম্যান্টিক কাব্য সংকলন।

...........................................................................................................................

উপহার

কবি-ভ্রাতা শ্রীদেবেন্দ্রনাথ সেন
মহাশয়ের করকমলে
তদীয় ভক্তের এই
প্রীতি-উপহার
সাদরে সমর্পিত
হইল

সূচনা

জীবনের বিশেষ পর্বে কোনো বিশেষ প্রকৃতির কাব্য কোন্‌ উত্তেজনায় স্বাতন্ত্র৻ নিয়ে দেখা, এ প্রশ্ন কবিকে জিজ্ঞাসা করলে তাকে বিপন্ন করা হয়। কী করে সে জানবে। প্রাণের প্রবৃদ্ধিতে যে-সব পরিবর্তন ঘটতে থাকে তার ভিতরকার রহস্য সহজে ধরা পড়ে না। গাছের সব ডাল একই দিকে একই রকম করে ছড়ায় না, এ দিকে ও দিকে তারা বেঁকেচুরে পাশ ফেরে, তার বৈজ্ঞানিক কারণ লুকিয়ে আছে আকাশে বাতাসে আলোকে মাটিতে। গাছ যদি-বা চিন্তা করতে পারত তবু সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার এই মন্ত্রণাসভায় সে জায়গা পেত না, তার ভোট থাকত না, সে কেবল স্বীকার করে নেয়-- এই তার স্বভাবসংগত কাজ। বাইরে বসে আছে যে প্রাণবিজ্ঞানী সে বরঞ্চ অনেক খবর দিতে পারে।

কিন্তু বাইরের লোক যদি তাদের পাওনার মূল্য নিয়েই সন্তুষ্ট না থাকে, যদি জিজ্ঞাসা করে মালগুলো কেমন করে কোন্‌ ছাঁচে তৈরি হল, তা হলে কবির মধ্যে যে আত্মসন্ধানের হেড্‌-আপিস আছে সেখানে একবার তাগাদা করে দেখতে হয়। বস্তুত সোনার তরী তার নানা পণ্য নিয়ে কোন্‌ রপ্তানির ঘাট থেকে আমদানির ঘাটে এসে পৌঁছল ইতিপূর্বে কখনো এ প্রশ্ন নিজেকে করি নি, কেননা এর উত্তর দেওয়া আমার কর্তব্যের অঙ্গ নয়। মূলধন যার হাতে সেই মহাজনকে জিজ্ঞাসা করলে সে কথা কয় না, আমি তো মাঝি, হাতের কাছে যা জোটে তাই কুড়িয়ে নিয়ে এসে পৌঁছিয়ে দিই।

মানসীর অধিকাংশ কবিতা লিখেছিলুম পশ্চিমের এক শহরের বাংলা-ঘরে। নতুনের স্পর্শ আমার মনের মধ্যে জাগিয়েছিল নতুন স্বাদের উত্তেজনা। সেখানে অপরিচিতের নির্জন অবকাশে নতুন নতুন ছন্দের যে বুনুনির কাজ করেছিলুম এর পূর্বে তা আর কখনো করি নি। নূতনত্বের মধ্যে অসীমত্ব আছে, তারই এসেছিল ডাক, মন দিয়েছিল সাড়া। যা তার মধ্যে পূর্ব হতেই কুঁড়ির মতো শাখায় শাখায় লুকিয়ে ছিল, আলোতে তাই ফুটে উঠতে লাগল। কিন্তু সোনার তরীর লেখা

আর-এক পরিপ্রেক্ষিতে। বাংলাদেশের নদীতে নদীতে গ্রামে গ্রামে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছি, এর নূতনত্ব চলন্ত বৈচিত্র৻ের নূতনত্ব। শুধু তাই নয়, পরিচয়ে অপরিচয়ে মেলামেশা করেছিল মনের মধ্যে। বাংলাদেশকে তো বলতে পারি নে বেগানা দেশ; তার ভাষা চিনি, তার সুর চিনি। ক্ষণে ক্ষণে যতটুকু গোচরে এসেছিল তার চেয়ে অনেকখানি প্রবেশ করেছিল মনের অন্দরমহলে আপন বিচিত্র রূপ নিয়ে। সেই নিরন্তর জানাশোনার অভ্যর্থনা পাচ্ছিলুম অন্তঃকরণে, যে উদ্‌বোধন এনেছিল তা স্পষ্ট বোঝা যাবে ছোটো গল্পের নিরন্তর ধারায়। সে ধারা আজও থামত না যদি সেই উৎসের তীরে থেকে যেতুম। যদি না টেনে আনত বীরভূমের শুষ্ক প্রান্তরের কৃচ্ছ্রসাধনের ক্ষেত্রে।

আমি শীত গ্রীষ্ম বর্ষা মানি নি, কতবার সমস্ত বৎসর ধরে পদ্মার আতিথ্য নিয়েছি, বৈশাখের খররৌদ্রতাপে, শ্রাবণের মুষলধারাবর্ষণে। পরপারে ছিল ছায়াঘন পল্লীর শ্যামশ্রী, এ পারে ছিল বালুচরের পাণ্ডুবর্ণ জনহীনতা, মাঝখানে পদ্মার চলমান স্রোতের পটে বুলিয়ে চলেছে দ্যুলোকের শিল্পী প্রহরে প্রহরে নানাবর্ণের আলোছায়ার তুলি। এইখানে নির্জন-সজনের নিত্যসংগম চলেছিল আমার জীবনে। অহরহ সুখদুঃখের বাণী নিয়ে মানুষের জীবনধারার বিচিত্র কলবর এসে পৌঁচচ্ছিল আমার হৃদয়ে। মানুষের পরিচয় খুব কাছে এসে আমার মনকে জাগিয়ে রেখেছিল। তাদের জন্য চিন্তা করেছি, কাজ করেছি, কর্তব্যের নানা সংকল্প বেঁধে তুলেছি, সেই সংকল্পের সূত্র আজও বিচ্ছিন্ন হয় নি আমার চিন্তায়। সেই মানুষের সংস্পর্শেই সাহিত্যের পথ এবং কর্মের পথ পাশাপাশি প্রসারিত হতে আরম্ভ হল আমার জীবনে। আমার বুদ্ধি এবং কল্পনা এবং ইচ্ছাকে উন্মুখ করে তুলেছিল এই সময়কার প্রবর্তনা-- বিশ্বপ্রকৃতি এবং মানবলোকের মধ্যে নিত্যসচল অভিজ্ঞতার প্রবর্তনা। এই সময়কার প্রথম কাব্যের ফসল ভরা হয়েছিল সোনার তরীতে। তখনই সংশয় প্রকাশ করেছি, এ তরী নিঃশেষে আমার ফসল তুলে নেবে কিন্তু আমাকে নেবে কি।

কবিতা কাব্যগ্রন্থ পঠিত
নিরুদ্দেশ যাত্রা সোনার তরী ৩৬৯৪২ বার
কণ্টকের কথা সোনার তরী ৫৫৯৪ বার
অচল স্মৃতি সোনার তরী ১৩৯৭৬ বার
আত্মসমর্পণ সোনার তরী ১৬৫৯৬ বার
দরিদ্রা সোনার তরী ৭৭৩৪ বার
অক্ষমা সোনার তরী ৫৬১৯ বার
মুক্তি সোনার তরী ২৬২৯৬ বার
গতি সোনার তরী ৫৪৬১ বার
বন্ধন সোনার তরী ১০২৪১ বার
খেলা সোনার তরী ১২০১৫ বার
মায়াবাদ সোনার তরী ৬২৪২ বার
বসুন্ধরা সোনার তরী ১৭৭২৩ বার
পুরস্কার সোনার তরী ৮৯৪৩ বার
লজ্জা সোনার তরী ১৫৪৭৯ বার
প্রত্যাখ্যান সোনার তরী ৮১৯৬ বার
ভরা ভাদরে সোনার তরী ৫১৯৩ বার
ব্যর্থ যৌবন সোনার তরী ১৪৫৩৪ বার
হৃদয়যমুনা সোনার তরী ৫৭৮৭ বার
ঝুলন সোনার তরী ১০৩৮০ বার
দুর্বোধ সোনার তরী ১০৮৫৮ বার
বিশ্বনৃত্য সোনার তরী ১০৪৪৮ বার
দেউল সোনার তরী ৫৭৪২ বার
নদীপথে সোনার তরী ৯৪২২ বার
অনাদৃত সোনার তরী ৫৭৮৭ বার
মানসসুন্দরী সোনার তরী ১৯৯১৪ বার
প্রতীক্ষা সোনার তরী ১৯৮৯৫ বার
সমুদ্রের প্রতি সোনার তরী ১৪০৬০ বার
যেতে নাহি দিব সোনার তরী ১৩১৮০৭ বার
আকাশের চাঁদ সোনার তরী ২০১২০ বার
দুই পাখি সোনার তরী ৬৫৯৫৮ বার
বৈষ্ণব কবিতা সোনার তরী ১৫৪৩০ বার
পরশ-পাথর সোনার তরী ৩১২৯৫ বার
হিং টিং ছট্‌ সোনার তরী ১৭৪৬৪ বার
বর্ষাযাপন সোনার তরী ২২৯৭৩ বার
সোনার বাঁধন সোনার তরী ৫৪৯৫ বার
তোমরা ও আমরা সোনার তরী ৭৩৮১ বার
সুপ্তোত্থিতা সোনার তরী ৫২৮২ বার
নিদ্রিতা সোনার তরী ১২৫০৯ বার
রাজার ছেলে ও রাজার মেয়ে সোনার তরী ৮২৫৬ বার
শৈশবসন্ধ্যা সোনার তরী ১০৯৮৪ বার
বিম্ববতী সোনার তরী ১০৩০৬ বার
সোনার তরী সোনার তরী ২৫০৬৭০ বার