মাতা-বিমাতা (চল্লিশ বছর আগে, তেত্রিশ বছরের মা-কে হারিয়ে নাকের বদল নরুন পেলাম ।আমাদের কোন অভিযোগ ছিলোনা ।কেমন ছিলাম?সেই ছবি )
- আল মামুন মাহবুব আলম - নীল জোছনা ও দুইটি শালিক ২০-০৫-২০২৪

ঊণপণচাষ,পণচাষ------তিপ্পাণ্ণো,চূয়াণ্ণো--
কেমন তর তর করে চল্লিশ বছর পেরিয়ে এলাম
তেত্রিশের তোমাকে,সেই কবে !
এইতো সেদিন !মা,আম্মাগো তুমি বলতেঃ
কবে যে বড় হবি ! বড় হতে হতে অনেক বয়স দ্রুত
ষাট-সত্তর পেরিয়ে যাবো ।

তোমার বয়স স্থির আজ অস্থির পৃথিবীতে
কোন স্মৃতি নেই আমাদের, নতুন মায়ের
চৌকশ দাবী !তোমার বিদায়ে
অন্যজনের লঘু প্রবেশ ;ক্রমশ
শিকড় প্রোথিত হয়েছে ঃনদীর গতির মতো
আরেকটি কুল গড়ে ওঠে ;

ক্রমশঃ স্নেহ আর ভালোবাসা চৈত্রের
রোদে সোঁদা মাটি চৌচির একদিন ----
দেখি পিতার স্নেহ ভীড়ে
নতুন প্রজন্মের প্রতি ;ক্ষোভ নেই
ছিটেফোঁটা ভালোবাসা যদি জোটে কপালে----
চাতক পাখির চোখ আমার !

ভালোবাসা নিম্নগামী ,প্রবল স্রোতের তোড়ে
নিয়ে যায় ধানী জমি ,বসত বাটির ওপর
দৃঢ় আঁচড় ,কিছু নেই------
না স্নেহ, না ভালবাসা--এক সময় যা ছিলো, তার ঋণও কেড়ে
নিতে উদ্যত !সবই আজ নতুনের !

বাড়ির পোষা বিড়াল ছানাটি দুধভাত আর
মাছের কাঁটার লোভে ফিরে আসে বার বার ;
কুকুর শাবক হাড়ের আশায় ------
সমবেত ঘেউ ঘে্‌উ মিঁউ মিঁউ ডাক
শোনেনি আমাদের,পায়ে পায়ে বেড়ি হয়ে ঘুরি ;
ডাক নেইঃ হাড়, কাঁটা, দুধের ।

তুমি মা তেত্রিশ বছরের রমনী হয়ে থেমে গেছো ।
অতএব ,তোমার আজ স্মৃতি ক্ষয়িষ্ণু--বহু দূরে ;
বর্তমান স্মৃতির দাবীতে
স্মৃতি তৈরীর(!) উম্মত্ত নেশায়---
সব কিছু গিলে খেতে চায় গোগ্রাসে,সব--- সবই ।

স্নেহের কাউাল কেঁদে ওঠে ---
মিঁউ মিঁউ ,ঘেউ ঘেউ ঘে-উ ডাক কেউ শোনেনা আজ ।
পিতা হয়েছেন গত ।সমস্ত ভালোবাসা উজাড়
হয়েছে নতুনের প্রতি
পুরাতন আজ বাতিল ।
আহা মা !পৃথিবীর 'মা' ,তোমরা বড়ো বেশী আর দৃষ্টিকটু
ব্যস্ত নিজের সন্তানে --------

অন্যের সন্তানের প্রতি দাও বিড়াল এবং
কুকুরের স্নেহ ,দেখো পৃথিবী কত সুন্দর !
মা তুমি তেত্রিশেই সমাপ্তিতে ;
আমি বড়ো আর বুড়ো হতে হতে
ক্লান্তির আশায় তর তর করে এগিয়ে যাই ক্রমশঃ

বয়স তেত্রিশের চেয়েও বেশী ।

ঢাকা ঃ ১৪।০৫।২০১২
রাত ৮ঃ১৫ মিঃ

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।