অরুন্ধতী রহমান (১০)
- নওশীন শিকদার ২০-০৫-২০২৪

আইফেল টাওয়ারের খুব কাছে থেকে...
বসন্তবরণী কোনো সন্ধ্যায় আমার আঙুলের বন্ধনীতে নিজ হাত সঁপে দিয়ো।
তখন কপালে গাঢ় প্রেম রঙা চুমুর অঙ্কন-শিল্পী হতে বাধ্য করবোনা তোমাকে,
যদিও একসাথে পথ চলেও মনের সেতুপথের আড়ালে দূরত্ব অঙ্কনে পারদর্শী তুমি অরুন্ধতী রহমান!
প্যারিসের স্বপ্নময় সীন নদীর জলে পা ডুবিয়ে বসে একাকীত্বের অশ্রু বিলিয়েছি,
চেরী ফুলের গোলাপী ছায়াঘেরা পিচঢালা পথ ধরে ভোরের মর্নিং ওয়াকেও তোমাকে মিস করেছি।
তবু দিনশেষে সালসা ড্যান্স বার এ ওয়াইনে চুমুক দিয়ে হারানোর পথ ঘেঁষতে পারলামনা,
অভিমানী ঠোঁট ফুলিয়ে বলে দিলাম...
" অরুন্ধতী রহমান,
ভিনদেশে পড়ে থাকা এই বাঙালী মেয়েকে আর কতো করবে অবহেলা? আজকে নাহয় আমাকে খুঁজতে এসো লন্ডন শহর ছেড়ে,
না,না... বায়না ধরবোনা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক থেকে আকাশী লাইলাক ফুল এনে আমাদের বিয়ের বাসর সাজানোর!
শুধু কথা দাও, "ভালোবাসি! " কথাটি মাঝেমধ্যে একবার হলেও বলবে...
যখন বয়সের ভারে হাঁটুর কাঁপুনিতে দাড়িয়ে থাকা কষ্টকর হবে কথা বলতে কষ্ট হবে, তখনও!

এই বেলায় বায়নাটা নাহয় তুমিই ধরবে, আমার কবিতা সমস্ত দেহমন দিয়ে শুষে খেয়ে বিতৃষ্ণার খোলস ছেড়ে তৃষ্ণা মেটানোর!
অরুন্ধতী রহমান,
মাদাম তুসোর জাদুঘরের মোমের মূর্তির মতন তোমার প্রতিমূর্তি তিলে তিলে ভাঙি-গড়ি আমার কবিতায়...
গ্লাস ফ্রগের কাঁচরঙা শরীর ভেদ করে তার হৃদপিণ্ডটা যেমন জলজ্যান্ত চোখে দেখা যায়,
তেমনি করেই এই বেলার জন্য গ্লাস ফ্রগ হতে রাজি আমি কোনো এক ভোরের শিশিরে ভিজতে ভিজতে,
তুমি যেন কাষ্ঠ দৃষ্টি নিংড়েও দেখতে পারো আমার হৃদপিণ্ডে তোমার উপস্থিতি কতো রক্তাভ!
কতো জীবন্ত!
কতো আত্মিক আর বৈধতায় স্বীকৃত!
খুব তো দেখেছো, কবিতা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনা অকর্মণ্য এইই আমিটা!
তাইতো...
মৃত্যুশয্যায়ও তোমার চোখে কবিতা লিখে যাবো আপন চোখের মণি সিঞ্চণের শেষ দৃশ্যে!
জানি কখনও আমাকে নিয়ে কাব্যের সময় তোমার হয়নি,
যেদিন স্মৃতি হয়ে যাবো সেদিন আমার এপিটাফে তোমার লেখা অন্তত একটা কবিতা চাই!
আমার কবিতায় অমর অরুন্ধতী রহমান...
শেষ ইচ্ছেটাও যদি না রাখো, তবে আমি কার কবিতায় অমর হবো?

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।