জিলাস্কুল রোডের পাগলটা
- কবির মুক্তাদির ১৯-০৫-২০২৪

জিলাস্কুল রোডের পাগলটা কেমন আছে জানি না,
হাড়-হাড্ডির ঘেলু কাঁপানো এই কনকনে শীতে,
এই ঠাঁঠাঁ মাঝরাতে পাগলটা কী করছে বলতে পারি না।

অনেক দিন হলো ওদিকে পা মাড়ায় নি,
মাড়াতে পারি নি,
সময়ের বড্ড অভাব!
কয়েকদিন পর নিজের নামের সামনে
পদবী বসানোর ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা,
মরবার সময় নেই।

দিনে রাতে যতবার যতদিন ওদিকে গেছি,
ফুটপাতের ঐ নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া
পাগলটিকে অন্য কোথাও নড়তে সরতে দেখি নি।

পাগলটা এখন জেগে আছে নিশ্চয়,
গায়ে তেলচটা জোড়াতালিওলা এক চাদর জড়িয়ে
এই এন্টার্কটিকিও হিমবাহে আর যেটাই সম্ভব হোক,
হলফ করে বলতে পারি ঘুমানোটা বেজায়
অসম্ভব।

একবার গ্রীম্মের এক রাতে ব্ন্ধুকে নিয়ে
বন্ধুর বাইক থামিয়েছিলাম ওর আখড়ায়--
ওর বাপের সম্পত্তি জিলাস্কুল রোডের
পশ্চিম দিকটার ফুটপাতে,
দেখি একটা নেড়ি কুকুরকে সাথে নিয়ে
পাগলটা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে,
মোবাইলে একটা ছবি উঠাতে চেয়েছিলাম ওদের,
ক্লিক করার প্রাক্কালে পাগলটা ঢেলা ঢেলা দুটো চোখ মেলে
এমন করে তাকালো আমাদের দিকে যে
আমরা আর এক মুহূর্ত ওখানে দাঁড়াতে সাহস পেলাম না।

পাগলটা কী করছে এখন কে জানে,
এই এন্টার্কটিকিও হিমবাহ গায়ে জড়িয়ে
নেড়ি কুকুরটা কি আছে ওর সাথে?


পাগলটা হয়তো গাঞ্জা টানছে,
কোথায় পাবে ও গাঞ্জার শলাকা?
ওর লুঙ্গির ট্যারে কি কাচা পয়সা বাঁধা থাকে?
আর দিনে রাতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে
আজকাল যত হিরোইনচি গজিয়েছে যে
ওদের কারো কাছ থেকে পাগলটা
একটা শলাকা পেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।


কিংবা পাগলটা হয়তো কারো ফেলে যাওয়া বিড়ি বা সিগারেটের জ্বলন্ত উচ্ছিষ্টাংশ
ঠোঁটে পুরে টানার চেষ্টা করছে সুখটান দিয়ে,
ওকে তো কয়েকদিন পলিথিন মুড়িয়ে মুড়িয়ে
শলাকা বানিয়ে বিড়ি হিসেবে ফুঁকতে দেখেছি,
কে জানে হয়তো তাই করছে এখন,
নাকি খড়পাতা জ্বালিয়ে আঁচ পোহাচ্ছে?
লাইটার আছে ওর কাছে?দেশালয়?
এক টাকার দেশালয়!

১৮/১২/১৫ রমেক

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।