কালবেলা,বয়ে যায়
- মৃণাল কানতি দাস - সওদাপাতি ১৯-০৫-২০২৪

এক উন্মত্ত কিশোরী
সারারাত ভালবাসার স্কাইপিতে বসে,
অনাবৃত দেবলোক দেখিয়ে যেত বহুকাল আগে
সাত সমুদ্রের সমস্থ জোয়ার শরীরে চাপিয়ে,অবলীলায়
আমাকে প্লাবনের আনন্দে ভাসিয়ে নিয়ে যেত,গহীন সমুদ্রে।
সেই বিষ্ময় বিলাসী এখনো রাত জাগে
গভীরতর নৈশব্দ্যে দক্ষ এবং সুক্ষভাবে রথ চালিয়ে
আমার মতই,অন্যান্য পূণ্যার্থীকে পৌছিয়ে দেয় অমৃতলোকে।
গভীরতর আনন্দ বিলাতে বিলাতে,সে আজো আনন্দবর্তিকা বয়ে নিয়ে চলছে,দ্বার হতে দ্বারান্তরে
বিলিয়ে দিয়ে চলছে আপন মহিমার শরীরামৃত।

পৌষ সংক্রান্তির বিকেল বেলা,
বাগীপার গ্রাম জুড়ে আজো বসেছে সেই আগের রথ মেলা
নিরঞ্জন মিস্ত্রির পুতুল বউটা তেজপাতা কিনে নিয়ে
বাড়ি ফিরছে পান চিবিয়ে সরিসা ক্ষেতে,পিক ফেলতে ফেলতে
আগের মতই,গোস্বামী দাদাকে রথে নিয়ে,মনের আনন্দে
টেনে টেনে যাচ্ছে এলাকার সব উঠতি বয়সী,ধর্মপ্রাণ যুবকগন
আগের মতই যাত্রা আসরে,দরিদ্র মাংসের তুফাত তোলা
ভাগ্যাহত জীর্ণ শরীরের মহিলার দিকে দীর্ঘশ্বাসে থাকিয়ে
লুকিয়ে লুকিয়ে দেড় টাকা দামের বিড়ি টানছে
ষষ্টশ্রেণিতে পড়ুয়া বিচ্চু ছেলেটা।

সুধাংশু আগের মতই পিঠিয়ে মেরে ফেলেছে
তার আরেকটি বৌ-কে।
বীরেন্দ্র মাঝির মৃতবৎ বৌয়ের কোল জুড়ে,ভগবান এসে
বারবার দিয়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন মুখ।
আমার পূর্বের প্রেমীকা আগের মতেই প্রেমপত্র লিখে যাচ্ছে
আমার আগের ঠিকানায়।

দর্শানা ব্রীজের কাছে সদ্য তৈরি ইকোপার্কের এক কোনে বসে
কোন এক নবীন কবি, কবিতার মোড়কে নিজের অক্ষমতাকে
খুচিয়ে খুচিয়ে ক্ষমতায় রূপায়ীত করে যাচ্ছে,রক্তধারা
বিলিয়ে যাচ্ছে সবার মাঝে, গভীর রাত্রি অব্দি
বাড়ি ফিরে ভাতের বদলে মায়ের ঝাড়ু পেঠা খেয়ে শুয়ে থাকছে
পর দিন সকাল পর্যন্ত, আগের মতই
আগের পৃথিবী আগের পথ ধরেই চলছে অগনিত বছর পর্যন্ত।

শুধু আগের মত আমার
জোয়ার উদ্বিলিত ফেনিল সমুদ্রে টেউ হয়ে
প্রবাহিণী বায়ুদের সাথে ছন্দে ছন্দে বয়ে যাওয়া হয়না।
প্রখর সূর্যের চোঁখে চোঁখ রেখে, জগৎ জয়ের অধিকারে
উন্মাদ জোছনার বুকে, মুখ রেখে -জ্যোৎস্না দুগ্ধ পান করা হয়না।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।