মনের শহর
- শেখ ফরহাদ হোসেন ১৯-০৫-২০২৪

অমাবস্যার রাতে বাঁশ ঝাড়ের নিস্তব্ধতা উপলব্ধি করেছ কখনো?
শুনেছ কি অন্ধকারের বুক চিড়ে আসা পেঁচার আর্তনাদ গভীর রাত্তিরে?
তোমার চলে যাওয়ার পর, তোমার দৃষ্টির দীপ্তিময় আলোর অনুপস্থিতিতে-
এমনই নিস্তব্ধ সীমাহীন অন্ধকার আমার মনের গলিতে।
হাজার বছরের অনাবাদি জঞ্জালে ভরে আছে
রাস্তা, অলিগলি গুলো খানাখন্দে ভরা।
তুমি চলে যাওয়ার পর যে কাঁচের ঘরটা ভেঙ্গে পড়েছে-
অবশিষ্ট সেই ভাঙ্গা বস্তু গুলোতে শ্যাওলা জমেছে।
এই আমার মনের ভৌতিক পরিত্যাক্ত শহরের পথে আর কারো পায়ের ছাপ পড়েনা।
একা একা এই অন্ধকার- বিপদসংকুল পথে হেঁটে ক্ষতবিক্ষত ক্লান্ত আমি।

নষ্ট জীবনী গান গাইতে গাইতে যেদিন তোমার সাথে দেখা হয়েছিল ধরনীর জন্মস্থানে,
সেদিন ভেবেছিলাম এবার বুঝি সত্যি জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছি।
তাইতো তোমাকে বসিয়েছিলাম আমার মনের মন্দিরে দেবীর আসনে।
সেই তুমিই কিনা ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠলে!
এক নিমিষেই গুড়িয়ে দিলে সব,
সাজানো গোছানো সহরটাকে বসবাসের অযোগ্য করে দিলে।

এই যদি তোমার মনে ছিল দেবী, তবে কেন বেধেছিলে এই মনে ঘর?
কেনইবা স্বপ্নের আলোকবাতি দিয়ে সাজিয়েছিলে আমার মনের শহর?
খুব যে বলছ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে, খুব যে বলছ সাজাতে জীবন
যেখানে ঈশ্বরের করুণা নেই, যেখানে আমার দেবী নেই,
সেখানে আমি কি সাজাবো? কার জন্য সাজাবো? কারইবা সাহস হবে এমন বিপদসংকুল পথে হেঁটে যাওয়ার?
বল দেবী বল, উত্তর দাও!

আজ আমি উপস্থিত তোমার মনের দ্বারে
আমার এক হাতে জীবন সুধা অন্য হাতে মৃত্যুর সরাব।
বল দেবী কোন হাত তোমার পছন্দ!
এক হাতে স্বপ্ন আর অন্যহাতে অভিশাপ।
তুমি ঈশ্বরের অলিক ক্ষমতা সম্পূর্ণ এক মহিয়সী স্বত্বা।
তোমার হাতে আমার নতুন দিবস নিশি রচিত হওয়া পরম প্রাপ্তি।
তোমার এই অশূর বিনাষীনি হাতে মৃত্যু যেন আমার সৌভাগ্যের ফসল।

তবে তাই হোক তোমার হাত মেহেদী রাঙানো,
আর আমার ফ্যাকাসে বদন পড়ে থাক ঠিক সেইখানে,
যেখানে তোমার প্রথম সাক্ষাত পেয়েছিলাম-
সেই ধরণীর জন্মস্থলে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত আমার মনের শহর জ্বলে ভষ্ম হয়ে যাক
সেই আলোয় ভেসে যাক তোমার সকল দুঃখ গ্লানি, সজ্জিত হোক তোমার স্বপ্নের বাসর, সুখের বাসর।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।